ভারতের বিশ্বজয়ের ৩৯ বছর, এখন কোথায় আছেন, কী করছেন টিম ইন্ডিয়ার সেই নায়করা
- FB
- TW
- Linkdin
কপিল দেব-
বিশ্বকাপ জয়ের সময় কপিল দেবের বয়স ছিল ২৪ বছর। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও তিনি স্বচ্ছন্দ। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে তার ব্যাটিং দলকে এগোতে সাহায্য করে। ওই ম্যাচে ভারতের হারের অপেক্ষায় ছিল বিশ্ব। সেই ম্যাচে তিনি ১৭৫ রান করে দলকে জিতিয়ে আনেন। এটায় তার সব থেকে বেশি রান। ১৯৯৪ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। এরপর দীর্ঘদিন তিনি জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। এছাড়াও কমেন্ট্রি করেছেন। ২০১৯ সালে তাকে ইন্ডিয়ান টেরিটোরিয়াল আর্মির সাম্মানিক লেফট্যানেন্ট কর্নেল পদ দেওয়া হয়। ক্রিকেটের বাইরে তিনি একজন ব্যবসায়ী।
সুনীল গাভাসকর-
বিশ্বকাপে সব থেকে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ছিলেন গাভাসকর। কিন্তু সেই সময় তার ফর্ম আশানুরূপ ছিল না। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ম্যাচে তাকে প্রথম একাদশের বাইরে রাখা হয়। অবসরের পর বিভিন্ন পেশায় নিজেকে যুক্ত করেন গাভাস্কার। কমেন্ট্রি করার পাশাপাশি তিনি একজন সফল ব্যবসায়ীও। এছাড়াও বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট, আইসিসি ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলেছেন।
রবি শাস্ত্রী-
১৯৮৩ বিশ্বকাপে রবি শাস্ত্রীকে সেরা অলরাউন্ডার হিসাবে দেখা হয়েছিল। তবে প্রথম একাদশে খুব একটা সুযোগ পাননি। সুনীল গাভাসকরর যে দুটি ম্যাচে খেলেননি সেই ম্যাচচে খেলেছিলে শাস্ত্রী। তিনি ১৯৯২ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। কিন্তু ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক কখনই ত্যাগ করেননি। রবি শাস্ত্রী ২০২১ সাল পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচও ছিলেন।
কৃষ্ণামাচারি শ্রীকান্ত-
১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে ওপেনার ছিলেন কৃষ্ণামাচারি শ্রীকান্ত। ফাইনালে তিনি ৩৮ রান করেন। যা সেই ম্যাচে সর্বোচ্চ ছিল। ক্রিকেট থেকে অবসরের পর ধারাভাষ্য দেওয়ার পাশাপাশি তিনি জাতীয় দলের নির্বাচক ছিলেন। এছাড়া আইপিএল-এ চেন্নাই সুপার কিংস ও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অ্যাম্বাসেডর ছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি ক্রিকেট বিশ্বকাপের অ্যাম্বাসেডর হন।
যশপাল শর্মা-
বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে সেরা হন যশপাল শর্মা। করেছিলেন ৮৯ রান। সেমিফাইনালে তিনি করেন ৬১ রান। যা ছিল সেই ম্যাচের সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালে তাকে ক্রিকেট পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা হয়। এর আগে তিনি পঞ্জাব ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক ছিলেন। এছাড়া দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচক ও সহকারী কোচ ছিলেন।
সন্দীপ পাতিল-
১৯৮৩ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সন্দীপ পাতিলের ৫১ রান ভারতকে ফাইনালে উঠতে সাহায্য করেছিল। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই সন্দীপ পাতিলের ব্যাট দলকে ভরসা জুগিয়েছিল। অবসরের পর তিনি কেনিয়ার জাতীয় দলে কোচিং করান। তার প্রশিক্ষণেই কেনিয়া ২০০৩ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে পৌঁছায়। এছাড়াও তিনি জাতীয় দলের প্রাক্তন নির্বাচকও ছিলেন।
বলবিন্দর সাঁধু-
১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের এই নির্ভরযোগ্য মিডিয়াম পেসার ছিলেন বলবিন্দর সাঁধু। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ফাইনালে দুই উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তবে তার কেরিয়ার বেশি লম্বা হয়নি। তিনি বিভিন্ন রাজ্য দলের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন।
সৈয়দ কিরমানি-
প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলে উইকেটের পিছনে নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার ছিলেন সৈয়দ কিরমানি। একাধিক ম্যাচে দলকে জিততে সাহায্য করেছিলেন তিনি। সৈয়দ কিরমানি কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ সামলেছিলেন। এছাড়া তিনি নির্বাচক হিসেবেও কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি একজন পেশাদার গলফার।
মদন লাল-
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের পক্ষে মদন লাল নেন তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চারটি শিকার করেছিলেন। ফিল্ডিংয়েও তার জুড়ি মেলা ভার ছিল। অবসরের পর তিনি ভারত ও সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর কোচের পদ সামলেছিলেন। ২০২০ সালে তিনি ক্রিকেট পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
মহিন্দর অমরনাথ-
১৯৮৩-র বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার ছিলেন মহিন্দর অমরনাথ। ফাইনালে সেরা প্লেয়ার নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি টুর্নামেন্ট সেরাও নির্বাচিত হন। ফাইনালে তিনি করেন ২৬ রান। নেন তিনটি উইকেট। জাতীয় ক্রিকেট টিমের প্রাক্তন নির্বাচক ছিলেন মহিন্দর অমরনাথ। এছাড়া বাংলাদেশ টিমের কোচও ছিলেন। ধারাভাষ্যকার হিসেবেও তাকে কিছু ম্যাচে দেখা গিয়েছে।
রজার বিনি-
১৯৮৩ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন রজার বিনি। তিনি ১৮টি উইকেট নিয়েছিবেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে তিনি সেরা নির্বাচিত হন। তিনি করেন ২১ রান ও নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। অবসরের পর তিনি নির্বাচক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে কর্নাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তিনি।
কীর্তি আজাদ-
১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন কীর্তি আজাদ।সেমি ফাইনালে ইয়ান বোথামের উইকেট ম্যাচ ভারতের দিকে ঘুরিয়ে দেয়। বোথামকে আউট করেছিলেন কীর্তি আজাদ।। অবসরের পর তিনি রাজনীতিতে পা রাখেন। কংগ্রেসের টিকিটে তিনি এমপি নির্বাচিত হন।
দিলীপ ভেংসরকার-
বিশ্বকাপের প্রথমদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন দিলীপ ভেংসরকার। সেমিফাইনালে তিনি প্রত্যাবর্তন করেন। অবসরের পর তিনি বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হন। বর্তমানে তিনি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ তেলাঙ্গানার পরামর্শদাতা। এর আগে তিনি নির্বাচক মণ্ডলীর চেয়ারম্যানও ছিলেন। এছাড়াও তার একটি ক্রিকেট একাডেমি আছে।