- Home
- Sports
- Cricket
- অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অলরাউন্ডার সাইমন্ডসের সেরা ৫ বিতর্ক, যা তাঁর ক্রিকেট কেরিয়র অকালে শেষ করেছিল
অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অলরাউন্ডার সাইমন্ডসের সেরা ৫ বিতর্ক, যা তাঁর ক্রিকেট কেরিয়র অকালে শেষ করেছিল
- FB
- TW
- Linkdin
অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর। আইসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সাইমন্ডস তাঁর নিজ রাজ্য কুইন্সল্যান্ডের টাউনসভিলের কাছেই দুর্ঘটনায় নিহত হন। পুলিশও তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা অলরাউন্ডার সাইমন্ডস তার পারফরম্যান্সের পাশাপাশি বিতর্কের কারণেও আলোচিত হয়েছিলেন। সাইমন্ডস এবং হরভজন সিং এর বিতর্কিত মাঙ্কিগেট ক্রিকেট জগতে এক আলোচিত বিষয়।
এই দুই সেরা ক্রিকেটরের মাঙ্কিগেট কনন্ট্রোভারসি খুব আলোচিত হয়েছিল। এর পাশাপাশি সাইমন্ডস মাদক সেবনের কারণেও আলোচনার শীর্ষে ছিলেন। ২০০৭-০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। এই সফরে সিডনিতে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়েছিল। এই ম্যাচের শেষ দিনে সাইমন্ডস ও হরভজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। সাইমন্ডস অভিযোগ করেছেন যে ভাজ্জি তাকে নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্য করেছিলেন। তাকে বাঁদর বলা হয়। এ কারণে এই বিরোধের নাম হয় মাঙ্কিগেট।
আরও পড়ুন- ৫ লক্ষ মার্কিন ডলারের সম্পত্তি রেখে চির বিদায় নিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অলরাউন্ডার
এই বিষয়টি অনেক দূর পর্যন্ত গড়িয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন অধিনায়ক রিকি পন্টিং বিষয়টি নিয়ে আম্পায়ার স্টিভ বাকনার এবং মার্ক বেনসনের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, বিষয়টি সিডনি আদালতেও পৌঁছেছে। যাইহোক, এই বিতর্কে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, কারণ ভাজ্জি কোনও মন্তব্য করেছিলেন এমন কোনও প্রমাণ ছিল না।
সাইমন্ডস তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ৭ মে ২০০৯-এ পাকিস্তানের বিপক্ষে। এই টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল দুবাইয়ে। সাইমন্ডস তার অ্যালকোহল আসক্তির কারণে সংবাদে ছিলেন। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, মদ্যপানের কারণে টি-টোয়েন্টি থেকে বাদ পড়েছিলেন তিনি। সাইমন্ড অ্যালকোহল পান সংক্রান্ত নিয়ম ভেঙেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
২০০৮ সালে, সাইমন্ডস একটি পাবে হামলার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিল। তাকে জড়িয়ে ধরে ছবি তুলতে চেয়েছিলেন এক ভক্ত। এতে সাইমন্ডস ক্ষুব্ধ হন এবং তিনি লোকটিকে লাঞ্ছিত করেন। তবে এ মামলায় শক্ত প্রমাণ না থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনও কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া দল বাংলাদেশ সফরে ছিল। এখানে দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক চলছিল, যেখানে সিরিজ সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। এই সময় সাইমন্ডস কোথাও মাছ ধরতে ব্যস্ত ছিলেন। তৎকালীন দলের অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে, তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলবেন কি না তা নিয়ে তাঁকে ভাবতে হবে। এই কারণে, ২০০৮ সালে ভারত সফরের জন্য তাঁকে নির্বাচিত করা হয়নি।
২০০৯ সালে, অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের একটি টিভি সাক্ষাৎকার অনেক বিতর্কের মধ্যে ছিল। এই সাক্ষাৎকারে তিনি অনেক আপত্তিকর কথা বলেছেন। নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি ব্রেন্ডন ম্যাককালামের বিরুদ্ধে অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করেছিলেন তিনি। তার সহকর্মী ম্যাথু হেইডেন সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন যে তিনি কেবল তার স্ত্রীকে দেখতে হেইডেনের বাড়িতে যেতেন। পরে বলা হয় তিনি মাতাল ছিলেন। এরপর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাকে জরিমানা করে এবং মানসিক থেরাপিস্টের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে বলে।
২০০৯ সালে, সাইমন্ডস অস্ট্রেলিয়ান দলের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে ইংল্যান্ডে যান। এখানে, তিনি মদ্যপানের জন্য একটি ক্লাবে কয়েক ঘন্টা কাটিয়েছেন। এরপর চ্যারিটি ডিনার অনুষ্ঠানে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পৌঁছান। এই অনুষ্ঠানে সাইমন্ডস আপত্তিকর আচরণ করেন এবং অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং এতে ক্ষুব্ধ হন। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে পন্টিং তাঁকে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত পাঠান। এরপর তাঁকে আর অস্ট্রেলিয়া দলে জায়গা দেওয়া হয়নি।
শনিবার রাতে টাউনসভিলে সাইমন্ডসের গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনায় সাইমন্ডস গুরুতর আহত হন এবং তাঁকে বাঁচানোর সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। সাইমন্ডসের ক্যারিয়ার জুড়েই বিতর্কের ছোঁয়া। তিনি একজন দুর্দান্ত বোলার এবং ব্যাটসম্যানের পাশাপাশি একজন দুর্দান্ত ফিল্ডারও ছিলেন। এই কারণে, তাঁকে অভিজ্ঞ অস্ট্রেলিয়ান দলে জায়গা দেওয়া হলেও তার ক্যারিয়ার অকালেই শেষ হয়ে যায়।