দুর্দান্ত শুরু করেও আন্তর্জাতির ক্রিকেট থেকে হারিয়ে গেলেন যে ক্রিকেটাররা
- FB
- TW
- Linkdin
বিনোদ কাম্বলি-
শচীন টেন্ডুলকারের সমসাময়িক বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান বিনোদ কাম্বলি ছিলেন অত্যন্ত প্রতিভাবান। নিজের টেস্ট কেরিয়ার শুরু করেছিলেন দুর্দান্ত ভঙ্গিতে। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ৮ টি ম্যাচে ২টি করে শতক ও দ্বিশতক করেন তিনি। তবে শুধু প্রতিভা থাকলেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে টিকে থাকা যায় না। তার জন্য প্রয়োজন কঠোর অধ্যবসায়। তাই শীঘ্রই তাঁর পারফরম্যান্সে ভাটা পড়ে এবং জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। মাত্র ১৭টি ম্যাচ খেলেই কাম্বলির টেস্ট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটে।
নভজ্যোত সিং সিধু-
এককালে মারকুটে ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে যথেষ্ঠ নাম করেছিলেন সিধু। নিজের জীবনের মতোই ক্রিকেট মাঠেও ছিলেন একদমই বেপরোয়া। প্রথম বল থেকে বোলারদের ব্যাকফুটে ঠেলে প্রভাব বিস্তার করাই ছিল সিধুর স্বভাব। যদিও অন্দরমহলের রাজনীতির শিকার হয়ে কেরিয়ারের শেষটা সুখকর হয়নি তাঁর। বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দলের প্রধান কয়েকজন খেলোয়াড় ১৯৯৯ বিশ্বকাপের ভারত দলে সিধুকে নিতে চাননি। তার কয়েকমাস পর খেলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন তিনি।
মহম্মদ কাইফ-
ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের কয়েকজন শ্রেষ্ঠ ফিল্ডারের তালিকার উপরের দিকের নাম মহম্মদ কাইফ। তিনি এবং যুবরাজ ভারতীয় দলে ফিল্ডিংয়ের নবজাগরণের সূচনা ঘটিয়েছিলেন। এমনকি ইংল্যান্ডে ভারতের বিখ্যাত ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ জয়ের অন্যতম প্রধান নায়ক তিনি। তবে অজি কোচ গ্রেগ চ্যাপলের আমলে দীর্ঘদিন অফফর্মে থাকায় তিনি দল থেকে কাইফকে বাদ দেন। আশ্চর্যজনকভাবে আর কখনোই প্রত্যাবর্তন করতে পারেননি কাইফ৷ ফলে মাত্র ২৬ বছর বয়সে শেষ হয়ে যায় তার জাতীয় দলের কেরিয়ার। নিন্দুকেরা বলেন তিনি নিজেই কখনও প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে সিরিয়াস ছিলেন না।
হেনরি ওলোঙ্গা-
অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ছিলেন জিম্বাবোয়ের এই পেসার। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন কঠোর রাজনীতি সচেতন। ২০০৩ সালে বিশ্বকাপের সময় কঠোর ইঙ্গিত দিয়ে জিম্বাবোয়ের সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। সরকারের বিরুদ্ধে নিজের অসহযোগের কথা জানাতে বাহুতে কালো কাপড় বেঁধে ম্যাচ খেলেছিলেন ওলোঙ্গা। তাঁর দেশে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছিল বলে তিনি প্রচার করতেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং পরে ক্রিকেটে ফিরতে আর দেখা যায়নি তাকে।
মার্ক বাউচার-
কাউন্টি ক্রিকেটে সামারসেটের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচে কিপিং করছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান উইকেটকিপার মার্ক বাউচার৷ ইমরান তাহিরের গুগলিতে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের উইকেট ভেঙে গেল। ঠিক সেসময়ই বাধল বিপত্তি। দুর্ভাগ্যক্রমে স্ট্যাম্পের বেল উড়ে এসে বাউচারের বাঁ চোখে বিশ্রীভাবে লাগে। মার্ক বাউচার তখন নিজের কেরিয়ারের সায়াহ্নে৷ কিন্তু তাহিরের ওই গুগলি তাঁর ক্যারিয়ারের শেষটা একটু এগিয়ে দেয়।
জোনাথন ট্রট-
সম্প্রতি কাজ করছেন ইংল্যান্ড দলের ব্যাটিং পরামর্শদাতা হিসাবে। এককালে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ের জন্য তিনি ছিলেন ইংল্যান্ডের পরম নির্ভরযোগ্য একজন ব্যাটসম্যান। ২০১৩ সালের উত্তপ্ত অ্যাশেজে মিচেল জনসনের আগুনে গতির সামনে সতীর্থদের মতো তিনিও চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হন। জনসনের বাউন্সারে বিধ্বস্ত ট্রট মানসিক চাপজনিত অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সিরিজের মাঝখানেই দেশে ফিরে আসেন। তখন দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ-সংক্রান্ত অসুস্থতায় ভোগায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসন নেন তিনি। তারপর দীর্ঘ বিরতি কাটিয়ে ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দলে পুনরায় ফিরলেও গোটা সিরিজে চূড়ান্ত ফ্লপ ছিলেন তিনি। এরপর ক্রিকেট কে বিদায় জানান তিনি।