- Home
- Sports
- Cricket
- Harbhajan Singh Retirement: হরভজন সিংয়ের কেরিয়ারে সেরা ৫টি পারফরমেন্স, দেখে নিন এক নজরে
Harbhajan Singh Retirement: হরভজন সিংয়ের কেরিয়ারে সেরা ৫টি পারফরমেন্স, দেখে নিন এক নজরে
- FB
- TW
- Linkdin
২০০১ সালে বর্ডার গাভাসকর ট্রফির দ্বিতীয় টেস্ট যা কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে হয়েছিল, সেই ম্যাচ টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ম্যাচ। ম্য়াচ প্রথমে ব্যাট করে ৪৪৫ রান করে অজিরা। প্রথম ইনিংসে ১২৩ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেন হরভজন। কিন্তু ভারতীয় দল প্রথম ইনিংসে ১৭১ রানে অলআউট হয়ে যায় ও অস্ট্রেলিয়া ফলোঅন করে। তারপর ভিভিএস লক্ষ্মণ ও রাহুল দ্রাবিড়ের ঐতিহাসিক পার্টনারশিপ ভারতকে ম্যাচে ফেরায়। লক্ষ্ণকরেন ২৮১ ও দ্রাবিড় করেন ১৮০। শেষ দিনে ইজেনের ঘূর্ণি উইকেটে ২১২ রানে অলআউট হয়ে যায় অজিরা। ৭৩ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন ভাজ্জি। একইসঙ্গে ভারতের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে হ্যটট্রিকও করেন তিনি।
২০০১ সালে ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট জয়ের অশ্বমেধের ঘোড়াকে থামিয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীনভারতীয় দল। সিরিজের তৃতীয় ও নির্ণায়ক টেস্টে প্রথমে ব্যাট করে ৩৯১ রান করে অজিরা। ১৩৩ রান দিয়ে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ভাজ্জি। জবাবে সচিন তেন্ডুলকরের অনবদ্য সেঞ্চুরির সৌজন্যে ৫০১ রান করে টিম ইন্ডিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬৪ রানে অল আউট হয় ব্যাগি গ্রিনরা। ৮৪ রান দিয়ে ৮ উইকেট নেন হরভজন সিং। ম্যাচে নেন ১৫ উইকেট। ১৫৫ রানে টার্গেট তাড়া করতেনেমে রুদ্ধশ্বাস ম্য়াচ ভিভিএস লক্ষ্ণণের হাফ সেঞ্চুরির সৌজন্যে ২ উইকেট জয় পায় ভারত ও সিরিজ জেতে।
২০০৪ সালে ওয়াংখেড়েতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচে হরভজন সিংয়ের অনবদ্য বোলিংয়ের সৌজন্যে দুরন্ত জয় পেয়েছিল ভারতীয় দল। ম্যাচ প্রথমে ব্যাট করে ১০৪ রানে অলআউট হয়ে যায় টিমইন্ডিয়া। জবাবে প্রথম ইনিংসে ৯৯ রানের লিড নেয় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৫ করে ভারত। ১০৭ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে মাত্র ৯৪ রানে অল আউট হয়ে যায় ব্যাগি গ্রিনরা। ২৯ রানে ৫ উইকেট নেন হরভজন সিং। কার্যত একাই ভেঙে দেন অজিদের ব্যাটিং লাইনআপ।
২০০৬ সালে ইংল্যান্ড দলের ভারত সফরের সময় ফিরোজ শাহ কোটলাতে প্রথম একদিনের ম্যাচে ভারতীয় দল প্রথমে ব্যাট করে ২০৩ রান করে। ম্যাচে ১৬৯ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড দল। ৩১ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন হরভজন সিং। ম্যান অফ দ্যা ম্য়াচও নির্বাচিত হন তিনি।
২০১২ সালে টি২০ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার কলোম্বোতে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল ভারতীয় দল। প্রথমে ব্যাট করে ১৭০ রান করে ভারতীয় দল। হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন রোহিত শর্মা। জবাবে ইংল্যান্ড দল মাত্র ৮০ রানে অল আউট হয়ে যায়। ম্য়াচে ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন হরভজন সিং। দুটি মেডেন ওভার করেছিলেন ভাজ্জি।
১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় হরভজন সিংয়ের। ব্যাঙ্গালোরে মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্য়াচ দিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল ভাজ্জির। তাকপরই শারজায় নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্য়াচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল 'টার্বুনেটরের'।
সফল কেরিয়ার ও অসংখ্য রেকর্ড থাকলেও শেষ কয়েক বছর ধরে ভারতীয় দলের বাইরে থাকার পর অবশেষে জীবনের কঠিন সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলেন হরভজন সিং। সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন ৭১১টি আন্তর্জাতিক উইকেটের মালিক। ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নিজের অবসরের কথা জানান ভাজ্জি।
ট্যুইটারে হরভজন সিং লেখেন, ‘সব ভাল জিনিসই একদিন শেষ হয়। আজ আমি এমন একটা খেলাকে বিদায় জানাচ্ছি যা আমার জীবনে সব কিছু দিয়েছে। ২৩ বছরের এই লম্বা যাত্রা যারা সুন্দর এবং স্মরণীয় করে রেখেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে অনেক ধন্যবাদ।’
ভারতের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ১০৩ ম্য়াচে হরভজন সিংয়ের ঝুলিতে রয়েছে ৪১৭ উইকেট। এক ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ২৫ বার ,ম্যাতে ১০ উইকেট নিয়েছেন ৫ বার। টেস্টে ব্য়াট হাতে ২টি সেঞ্চুরি ও ৯টি হাফ সেঞ্চুরিও রয়েছে ভাজ্জির। একদিনের ক্রিকেটে হরভজন সিংয়ের ২৩৬ টি ম্য়াচে রয়েছে ২৬৯টি উইকেট। ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩ বার। টি২০ ক্রিকেটে ২৮ ম্যাচে তারকা অফ স্পিনারের শিকার ২৫টি উইকেট। দেশের জার্সিতে ২০০৭ সালে টি২০ বিশ্বকাপ জয়ী ও ২০১১ সালে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলে ভাজ্জি।
আইপিএল কেরিয়ারেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন ভাজ্জি। টি২০-কে ব্যাটসম্যানের খেলা বলা হলেও ভাজ্জির স্পিনের জালে আইপিএলে ফেঁসেছেন বিশ্বের তাবড়া তাবড় ব্যাটসম্যান। হরভজনের ঝুলিতে ১৬৩ টি আইপিএল ম্যাচে হরভজনের শিকার ১৫০টি উইকেট। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আইপিএল শিরোপাও জিতেছেন ভাজ্জি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন, শেষ দিকে সুযোগ মেলেনি ভারতীয় দলেও। তবে আইপিএল খেলছিলেন। কিন্তু ক্রিকেটের বাইরে থাকার ফলে সেই ধার ছিল না বোলিংয়ে। অবশেষে হরভজন সিংয়ের অবসরের মধ্য দিয়ে ভারতীয় তথা বিশ্ব ক্রিকেটে শেষ হল এক অধ্যায়ের। তবে হরভজনের ভেলকির জাদু চিরকাল অমলিন থেকে যাবে ক্রিকেট প্রেমিদের মনে।