অবসরের ২ বছর পরও সমান জনপ্রিয়, ফিরে দেখা ২২ গজে 'ধোনি রাজ'
- FB
- TW
- Linkdin
২০০৪-এ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওয়ানডে অভিষেকটা ভাল হয়নি। খাতা না খুলেই রানআউট হয়ে ফিরেছিলেন ধোনি। তারপরের দু একটি ম্য়াচে ঝলক দেখালেও নিজের জাত পুরোপুরি চেনাতে পারেননি ধোনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে সৌরভ ধোনিকে উপরের দিকে পাঠান। তারপর ধোনির সেই ১৪৮ রানের ইনিংস এখনও তাজা সকলের মনে। এরপর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৮৩ রানের আরও একটি ঝোড়ো ইনিংসের পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এমএস ধোনিকে।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের শোচনীয় পরাজয়ের পর সেই বছর টি২০ বিশ্বকাপে দলের তারকারা যাননি। প্রথম টি২০ বিশ্বকাপকে ততটা গুরুত্ব দেননি কেউ। অপেক্ষাকৃত নতুন দল নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যায় ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। সেই বিশ্বকাপ জিতে নজির সৃষ্টি করেন ধোনি। সেখান থেকে অধিনায়ক ধোনির উত্থন। ২০০৭ থেকে ২০১৬- সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়ে ভারতকে জগতসভার শ্রেষ্ঠ আসনে বসিয়েছেন ধোনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, এশিয়া কাপ থেকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেতাব, দেশের জার্সি গায়ে ধোনির ভাঁড়ার কানায় কানায় পূর্ণ।
২০০৫ সালে চেন্নাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলেন ধোনি। টেস্ট ক্রিকেটে ভারতীয় দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নিয়ে দলকে এক নম্বরে নিয়ে গিয়েছিলেন মাহি। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। মেলবোর্নে অজিদের বিরুদ্ধে শেষবার মাঠে নামেন টেস্টে।
কেরিয়ারে মোট ৯০টি টেস্ট খেলেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ১৪৪টি ইনিংসে ব্যাট হাতে মাঠে নেমে ৩৮.০৯ গড়ে ৪৮৭৬ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। টেস্টে শতরান করেছেন ৬টি। অর্ধশতরান ৩৩টি। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ২৪৪ রানের। উইকেটকিপার হিসেবে ক্যাচ ধরেছেন ২৫৬টি। স্টাম্প আউট করেছেন ৩৮টি।
২০০৪ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথমবার ওয়ান ডে ক্রিকেটে মাঠে নামেন ধোনি। সেটি ছিল তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। গত বছর ম্যাঞ্চেস্টারে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে শেষবার ওয়ান ডে ক্রিকেটে মাঠে নামেন তিনি কেরিয়ারের প্রথম ম্যাচে রান আউট হয়ে ছিলেন ধোনি, কাকতলীয়ভাবে কেরিয়ারের শেষ ম্যাচেও রান আউটই হয়েছিলেন ধোনি।
একদিনের কেরিয়ারে মোট ৩৫০টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছেন ধোনি। ২৯৭টি ইনিংসে ৫০.৫৭ গড়ে ১০৭৭৩ রান করেন ধোনি। সেঞ্চুরি করেছেন ১০টি। হাফ-সেঞ্চুরি ৭৩টি। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস অপরাজিত ১৮৩ রানের। বল হাতে একটি উইকেটও নিয়েছেন তিনি। ক্যাচ ধরেছেন ৩২১টি। স্টাম্প করেছেন ১২৩টি। ব্য়াট হাতে ধোনির পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে কেনও তাকে সর্বকালের সেরা ফিনিশার বলা হয়ে থাকে।
২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলেন ধোনি। শেষ টি-২০ খেলেন গত বছর বেঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। মোট ৯৮টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে ৩৭.৬০ গড়ে ১৬১৭ রান সংগ্রহ করেন মাহি। হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন ২টি। সর্বোচ্চ ইনিংস ৫৬ রানের। ক্যাচ ধরেছেন ৫৭টি এবং স্টাম্প করেছেন ৩৪টি।
২০২০ সালের ১৫ অগাস্ট শনিবার সন্ধ্যায় ৭ টা ২৯ মিনিটে ইনস্টাগ্রামে ধোনি বলেন, ‘ধন্যবাদ। সারা জীবন ভালোবাসা এবং সমর্থনের জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। সন্ধ্যা ৭ টা ২৯ মিনিট থেকে আমায় অবসরপ্রাপ্ত হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন।’ ২২ গজে সকলের অজানা যাদুমন্ত্রের জোরে বারবার দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণ করেছেন ধোনি। এবার সেই ১৩০ কোটি দেশবাসী সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ধোনি ভক্তদের কাঁদিয়েই টিম ইন্ডিয়াকে বিদায় জানিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।