- Home
- Entertainment
- Bengali Cinema
- সঙ্গীত, প্রেম থেকে সাংসারিক জীবন কেমন ছিল কেকে-র, জানুন প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য
সঙ্গীত, প্রেম থেকে সাংসারিক জীবন কেমন ছিল কেকে-র, জানুন প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য
- FB
- TW
- Linkdin
১৯৬৮ সালের ২৩ অগাস্ট কেরালায় থ্রিশুরে জন্মগ্রহণ কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। বাবার নাম ছিল সিএস মেন ও মা কণকাভল্লি। যদিও তার ছোট বেলা কেটেছে দিল্লিতে। সেখানেই তার স্কুল জীবন , বেড়ে ওঠা সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া। ছোট বেলা থেকেই স্টেজ শো করতেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালস থেকে স্নাতক হন তিনি। কিংবদন্তি গায়ক কিশোর কুমার ছিলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথের প্রেরণা। তাঁকে দেখেই মূলত সঙ্গীত জীবনে আসেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে কেকে জানান, তিনি আর.ডি বর্মন, মাইকেল জ্যাকসন এবং আরও বেশ কয়েকজন হলিউড গায়কের অনুরাগী ছিলেন।
বিভিন্ন তথ্য অনুসারে জানা যায়, কে কে-র সঙ্গীত জীবন শুরু হয়েছিল তাঁর মায়ের মালয়ালি গান শুনে। যা রেকর্ড করেছিলেন তাঁর দাদু। ফলে মায়ের গান শুনেই সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন কেকে। স্কুল জীবনে 'শোলে' ছবির 'মেহবুবা' গানটি শুনতে খুব পছন্দ করতেন তিনি। খুব অল্প বয়স থেকেই স্টেজে পারফর্ম করা শুরু করেন।
ছোটবেলার প্রেমিকা জ্যোতি কৃষ্ণাকে বিয়ে করেন কে কে। তবে কেরের প্রেম জীবনে খুব একটা মসৃণ ছিল না। কারণ জ্যোতির সঙ্গে প্রেম করার সময়ও সঙ্গীত জগতে সাফল্য পাননি কেকে। গান নিয়ে তখনও সাধনা চালিয়ে যাচ্ছেন. আর স্টেজ শো করতেন। ফলে বিষয়টি জ্য়োতির বাড়ি থেকে আপত্তি ছিল।
১৯৯১ সালে বিবাহ বন্ধনে বাঁধা পড়েন কেকে ও জ্যোতি। তবে এই বিয়ে পর্যন্ত পথ এত সুমসৃণ ছিল না। সেই সময় কোনও চাকরি করতেন না বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী। তাই তাঁর উপর চাকরির চাপ তো ছিলই। কারণ ‘বেকার’ ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু প্রেমিকার সঙ্গেই বিয়ে করবেন, এই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন কেকেও।
একটি চ্যাট শো-এ কেকে জানিয়েছিলেন, একপ্রকার বাধ্য হয়েই জ্যোতিকে বিয়ে করার জন্য সেলসের চাকরি নিয়েছিলেন কেকে। সেই সময় সেভাবেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছিল। যদিও সেই সেলসের চাকরি খুব বেশিদিন করতে পারেননি শিল্পী। বরং, তিন মাস পরেই তাঁকে সেই চাকরি ছাড়তে হয়েছিল।
বিয়ের কয়েক বছর পর ১৯৯৪ সালে তিনি মুম্বই পাড়ি দেন বলিউডে কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন চোখে নিয়ে। সেখানে গিয়েই সহজে সাফল্যে আসেননি কেকেআর। যথেষ্ট্ স্ট্রাগেল করতে হয়। ১৯৯৭ সালে 'হম দিল দে চুকে সনম' ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক। 'তড়প তড়প কে ইস দিল সে' গানটি সুার ডুপার হিট হয়। পথ চলা শুরু হয় সিঙ্গার কেকের।
কেকে-এর প্রথম অ্যালবাম মুক্তি পায় ১৯৯৯ সালে। কে কে-র এর বিখ্যাত মিউজিক অ্যালবাম ‘পল্’ ৯০ এর দশকের বিখ্যাত গানগুলোর একটি। মানুষ এখনও তার অ্যালবাম ‘পল’ পছন্দ করে। কেকে-র কণ্ঠে গাওয়া 'ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল' সহ এই অ্যালবামের গানগুলি এখনও চিরনতুন হিসেবে বিবেচ্য হয়। এই অ্যালবামের পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
এরপর একের পর এক ছবিতে হিট গান উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। বলিউড অভিনেতা ইমরান হাশমি তাঁর গাওয়া বহু গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন। স্টেজ পারফরম্যান্সেও দারুণ জনপ্রিয় কে কে। তাই তো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শকদের অন্যতম আকর্ষণ ছিল কে কে-র পারফরম্যান্স। কলকাতায় সেই স্টেজ পারফরম্যান্স শেষ করেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন জনপ্রিয় এই গায়ক। রেখে গেলেন নিজের অজস্র গানের সম্ভার , স্ত্রী ও দুই সন্তানকে। শোকস্তব্ধ সকলেই।
হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলেগু, কন্নড়, মালায়লম, মারাঠি, ভাষায় প্লেব্যাক করেছেন। ২০০৫-এ তামিল ভাষায় বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে কন্নড় ভাষায় সাউথের ফিল্ম ফেয়ার অ্য়াওয়ার্ড পান। একইসঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনে সঙ্গা জ্যোতির সঙ্গে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে কোন বাধা-বিঘ্ন ছাড়া চলে সংসার জীবন। পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে খুব সুন্দর ব্যালান্স করতে জানতেন কেকে।