কিশোর কুমারের বায়োপিক থেকে কেন বাদ পড়লেন রণবীর কাপুর, জেনে নিন
- FB
- TW
- Linkdin
বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে যে আইকনিক কণ্ঠশিল্পী কিশোর কুমারের জীবনী নিয়ে কাজ চলছে। অনুরাগ বসুর ছবিটি পরিচালনা করার কথা ছিল, যেখানে কিশোর কুমারের ভূমিকায় অভিনয় করার কথা ছিল রণবীর কাপুরের ।
ছবিটি সম্পর্কে অমিত কুমার ভাল এবং খারাপ উভয় খবরই প্রকাশ করেছেন। সুখবর হল কিশোর কুমারের বায়োপিক আসতে চলেছে । দুঃখের খবর হল অনুরাগ বসু এবং রণবীর কাপুর আর এই প্রকল্পের অংশ হবেন না।
মধুবালার জীবনী তুলে ধরা হলে তিনি তার অনুভূতি প্রকাশ করেন। মধুবালার জীবনী করা উচিত কিনা জানতে চাইলে অমিত কুমার জবাব দেন, 'কেন না?বায়োপিক তো সব কা বান্তা হ্যায় আজকাল (আজকাল বায়োপিক করা খুবই স্বাভাবিক)। আমার বাবাকে নিয়েও একটি বায়োপিকে কাজ করছি আমরা ।' ছবিতে অনুরাগ বসু এবং রণবীর কাপুরের উপস্থিতি সম্পকে জানতে চাওয়া হলে তিনি সেই সম্ভবনা বলেন, 'না, এখন আমরা নিজেরাই এটি প্রযোজনা করব। '
তিনি জানান যে কিশোর কুমারকে তার চারটি বিয়ের বিষয়ে কখনও জিজ্ঞাসা করেননি তিনি , 'আমি তাকে কখনও জিজ্ঞাসা করিনি। এটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত জীবনের বিষয় । তিনি সবসময় একটি পরিবার শুরু করতে চেয়েছিলেন। তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি তার পরিবারের যত্ন নিতেন। তার জীবনের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেদিন আমার বাবা-মা আলাদা হয়েছিলেন তিনি তার মরিস মাইনর অটোমোবাইলটি এই বাড়িতে সমাধিস্থ করেছিলেন। নায়ক হিসেবে তার প্রথম চলচ্চিত্র 'আন্দোলন'-এর পর তিনি আমার মায়ের সাথে এটি কিনেছিলেন। '
কিশোর কুমার শুধু একজন মহান কণ্ঠশিল্পীই ছিলেন না, একজন মহান অভিনেতা, গীতিকার, সুরকার, প্রযোজক, পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকারও ছিলেন। ক্যামেরার সামনে তার অবিশ্বাস্য কমিক টাইমিং সহ একজন দক্ষ, বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী হিসাবে তাকে আমরা স্মরণ করি। এখনো দুঃখ হলে, আনন্দ হলে বা ঘুরতে গেলে আমরা তার গান শুনি। এখানে আমাদের কিশোরকুমারের রঙিন জীবনের বেশ তুলে ধরা হলো।
১) কিশোর যখন ছোট ছিল, তখন তার কণ্ঠস্বর ছিল খুব তীক্ষ্ণ, কান ফাটানো আওয়াজ ছিল তার। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই শুনেছেন, কিশোরের পরিবারের সদস্যরা তার তীক্ষ্ণ কণ্ঠ নিয়ে রসিকতা করতেন।
২) আপনি কি জানেন? কিশোর ৫ম শ্রেণিতে তার গণিত পরীক্ষায় একটি প্রশ্নেরও উত্তর দেননি। প্রশ্ন সমাধান করার পরিবর্তে, তিনি তার উত্তরপত্রে জোকস, ছোট ছোট কবিতা, ডুডল এবং স্মাইলি এঁকে রেখেছিলেন।
৩) কলেজে, কিশোর প্রায়শই ক্লাসরুমে তার বেঞ্চটি তবলা হিসাবে ব্যবহার করতেন। যখন তার অধ্যাপক রেগে গিয়ে তাকে এই ধরনের অশ্লীলতার সাথে সময়ের অপব্যবহার বন্ধ করতে বলেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন যে তিনি মিউজিককেই তার জীবিকা বানাবেন। তার কলেজের দিনগুলিতে, তিনি তার দীর্ঘ কালো ওভারকোট পড়তে পছন্দ করতেন।
৪) কিশোর তার খামখেয়ালিপনার জন্য সুপরিচিত ছিলেন। তিনি একবার তাঁর ওয়ার্ডেন রোডের ফ্ল্যাটের দরজায় ‘কিশোর থেকে সাবধান’ লেখা একটি সাইনবোর্ড লাগিয়েছিলেন।যখন একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা তার পারিশ্রমিক প্রদান করেননি, তখন তিনি পুরো পারিশ্রমিক না দেওয়া পর্যন্ত তার গোঁফ এবং চুলের কিছু অংশ কামিয়ে রেখেছিলেন। মধ্যপ্রদেশে থাকার সময় অন্য একটি ঘটনায় তিনি তার বাড়ির বাইরে নেমপ্লেটের পরিবর্তে একটি বোর্ড টাঙিয়েছিলেন যাতে লেখা ছিল ‘মেন্টাল হাসপাতাল’।
৫) উপরের ঘটনাগুলি এটাও প্রমাণ করে যে কিশোর তার পারিশ্রমিক সম্পর্কে খুব নির্দিষ্ট ছিলেন, কিন্তু খুব কম মানুষই জানেন যে তিনি অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকে ১৯৬৪ সালে তার মাস্টারপিস চলচ্চিত্র চারুলতাতে গান গাওয়ার জন্য পারিশ্রমিক নিতে অস্বীকার করেছিলেন।
৬) কিশোর কুমার তিনজন মানুষের প্রবল ভক্ত ছিলেন। তিনি কে এল সায়গল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং হলিউড অভিনেতা-গায়ক ড্যানি কায়-এর ভক্ত ছিলেন। তার গৌরীকুঞ্জের বাসভবনে এদের প্রতিকৃতি টাঙিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
৭) জিমি রজার্স এবং টেক্স মর্টন কিশোরের ইয়োডেলিং শৈলীকে প্রভাবিত করেছিল। ইয়োডেলিং হল এমন একটি গান গাওয়ার স্টাইল যেখানে গায়কের কণ্ঠ নিয়মিত এবং অতিরঞ্জিত সুরের মধ্যে পরিবর্তিত হয়, 'যা চালা জাতা হুন কিসি কি ধুন মে', 'জিন্দেগি এক সফর' এবং অন্যান্য গানে তা শোনা যায়।
কিশোর কুমার এবং তার প্রথম স্ত্রী, বাঙালি অভিনেত্রী রুমা গুহ ঠাকুরতার পুত্র অমিত কুমার। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তারা বিবাহিত ছিলেন। এর পরে, কিশোর কুমার মধুবালা, যোগিতা বালি এবং লীনা চন্দভারকরকে বিয়ে করেন।