Mohun Bagan: ২০১৯-২০ আইলিগ জয়ী মোহনবাগান দলের ফুটবলাররা এখন কোথায়, কী করছেন
২০১৯-২০ মরসুমে আই-লিগ (i-league 2019-20) খেতাব জিতেছিল মোহনবাগান (Mohun Bagan)। কিবু ভিকুনার (Kibu Vicuna) কোচিং-এ সেই স্কোয়াডে একদিকে ছিল ফ্রাঁ গঞ্জালেজ, হোসেবা বেইতিয়ার মতো অভিজ্ঞ ফুটবলাররা। আবার অন্যদিকে শুভ ঘোষের মতো তরুণরাও দলের সাফল্যে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার নিখুঁত সংমিশ্রণে গড়া সেই দল, ৪ ম্যাচ বাকি থাকতে লিগ জিতে নিয়েছিল, তাও আবার ১৬ পয়েন্টের বিশাল ব্যবধানে। এমনকী কলকাতা ডার্বিতেও ইস্টবেঙ্গলকে ২-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল মেরিনার্স। শনিবার আরও এক বড় ম্যাচ। তার আগে দেখে নেওয়া যাক, লিগজয়ী সেই মোহনবাগান দলের সদস্যরা, বর্তমানে কে কোথায় আছেন?
- FB
- TW
- Linkdin
সেই মরসুমে কিবু ভিকুনার প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক ছিলেন। তবে লিগের শুরুতে প্রথম গোলরক্ষক ছিলেন দেবজিৎ মজুমদার। চার্চিল ব্রাদার্সের বিপক্ষে ৪-২ গোলে সবুজমেরুনের পরাজয়ের শঙ্কর রায় তাদের তিন কাঠির নিচে সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই মৌসুমে তিনি ১৪ টি ম্যাচ খেলেছিলেন এবং ৭ টি ম্যাচে ছিল ক্লিন শিট। বর্তমানে এসসি ইস্টবেঙ্গল দলের গোলরক্ষক তিনি।
আই লিগের সেই মরসুমে শিল্টন একটি ম্যাচেও প্রথম দলে সুযোগ পাননি। তবে, তিনি মোহনবাগানের অন্যতম প্রশংসিত গোলরক্ষক এবং অধিনায়কও ছিলেন। বর্তমানে তিনি আইলিগের দল, চার্চিল ব্রাদার্সে রয়েছেন।
চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে মোহনবাগানের হয়ে স্কুলছাত্রসুলভ ভুল করায়, তাঁর জায়গা হয়েছিল বেঞ্চে। বর্তমানে তিনি, চেন্নাইয়িন এফসির দ্বিতীয় গোলরক্ষক।
স্প্যানিশ সেন্টার ব্যাক সেই মরসুমে সবুজ মেরুন রক্ষণভাগে একেবারে প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই বছর আই-লিগে মোহনবাগানের হয়ে তিনি ১৫ টি ম্যাচ খেলেছলেন। নেরোকা এফসির (NEROCA FC)-র বিরুদ্ধে একটি গোলও করেছিলেন। বর্তমানে তিনি স্পেনের তৃতীয় ডিভিশনের ক্লাব রিয়াল ব্যালোম্পেদিচা লিনেন্সে-তে খেলছেন।
মোহনবাগান রক্ষণভাগে, মোরান্তের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়া গড়ে উঠেছিল ত্রিনিদাদের এই সেন্টার ব্যাকের। প্রকৃতপক্ষে, ১৬ ম্যাচে মাত্র ১৩ টি গোল খাওয়া মোহনবাগানের রক্ষণ ছিল সবথেকে সফল। সাইরাস ১১ টি ম্যাচে খেলেছিলেন। ১ টি গোল করেছিলেন এবং ২ টি অ্য়াসিস্টও করেন। বর্তমানে, থাই লিগ ২-এ চাইনাট এফসি-তে খেলছেন।
ধনচন্দ্র সিংহের (Dhanachandra Singh) জায়গায় ভিকুনার কোচিং-এ মোহনবাগান প্রথম দলে লেফট-ব্যাক হিসাবে নাম ছিল গুরজিন্দরের। বেশ কয়েকটি ম্যাচে দলকে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি খেলেন নর্থইস্ট ইউনাইটেডে।
সেই মরসুমে মোহনবাগান প্রথম দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন এই রাইট-ব্যাক। ১৪ টি ম্যাচ খেলেছিলেন, একটি অ্যাসিস্ট করেছিলেন। এখনও তিনি এটিকে মোহনবাগান দলেই রয়েছেন।
ইস্টবেঙ্গলের হয়ে দারুণ সাফল্য পাওযার পর, ২০১৯-২০ মরসুমে মোহনবাগানে যোগ দিয়েছিলেন লালরামচুলোভা। তবে, ভিকুনার কোচিং- সামান্য কয়েকটি ম্যাচে পরিবর্ত হিসাবে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি মহামেডান এসসি-র (Mohammedan SC) হয়ে খেলেন।
মরসুমের শুরুতে এই লেফট-ব্যাককে দলের অধিনায়ক বেছেছিলেন ভিকুনা। তিনি ১০ টি ম্যাচ খেলেছিলেন এবং রক্ষণে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। মোহনবাগান ছাড়ার পর তিনি আর কোনও পেশাদার ফুটবল দলে যোগ দেননি।
স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ছিলেন সেই মরসুমে মোহনবাগান প্রথম দলের নিয়মিত সদস্য। মিডফিল্ডে অসাধারণ ফর্মে ছিলেন তিনি, একাই দলের মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করতেন। ওই মরসুমে বেইতিয়া ৩ টি গোল করেছিলেন এবং ৯ টি অ্যাসিস্টও ছিল তাঁর নামের পাশে। বর্তমানে তিনি রাউন্ডগ্লাস পাঞ্জাব এফসি (RoundGlass Punjab FC) দলের হয়ে খেলছেন।
এফসি গোয়া (FC Goa) থেকে লোনে মোহনবাগানে যোগ দিয়েছিলেন এই উইঙ্গার। তিনি ৭ টি ম্যাচে ফেলে ১ টি গোল করেছিলেন। বর্তমানে তিনি এফসি গোয়ার হয়েই খেলেন।
মোহনবাগানের হয়ে লেফট উইংয়ে নংদাম্বা নাওরেম দুর্দান্ত খেলেছিলেন। ২ গোল করেন এবং ৫ টি অ্যাসিস্ট ছিল তাঁর নামের পাশে। বর্তমানে তিনি এফসি গোয়ার হয়ে খেলেন।
এই রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার ছিলেন সেই মরসুমের আবিষ্কার। তাঁকে যে দায়িত্ব দেওযা হয়েছিল, তা যথাযথভাবে পালন তো করেইছিলেন, সেই সঙ্গে মরসুম যত এগিয়েছিল, ততই তিনি ফুটবলার হিসাবে উন্নতি করেছিলেন। বর্তমানে তিনি এটিকে মোহনবাগান দলেই আছেন।
কিবু ভিকুনার অধীনে বেশিরভাগ সময় বেঞ্চেই কাটালেও, পরিবর্ত হিসাবে খেলে কিছু চিত্তাকর্ষক পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছিলেন এই রাইট উইঙ্গার। ঘরের বাইরে রিয়াল কাশ্মীরের বিপক্ষে সেই মরসুমে একটি অ্য়াসিস্ট করেছিলেন। বর্তমানে তিনি ভারতীয় নৌবাহিনীর হয়ে খেলেন।
এই উইঙ্গারকে স্প্যানিশ কোচ সেই মরসুমে প্রায় খেলাননি বললেই চলে। চারটি ম্যাচে নেমেছিলেন, খেলেছিলেন সবমিলিয়ে মোটে ৬০ মিনিট। বর্তমানে তিনি মহামেডান এসসির হয়ে খেলেন।
মোহমবাগান প্রথম দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। ড্যানিয়েল সাইরাস আঘাত পাওয়ায় অল্প সময়ের জন্য তাঁকে সেন্টার ব্যাক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছিল। ফরোয়ার্ড হিসেবে না খেললেও, তিনি ১০টি গোল করেছিলেন সেই মসুমে। একটি অ্যাসিস্টও করেছিলেন। বর্তমানে তিনি রিয়াল কাশ্মীর এফসির (Real Kashmir FC) হয়ে খেলেন।
মরসুমের মাঝপথেই এই তাজিক ফরোয়ার্ডকে দলে নিয়েছিল মোহনবাগান। অল্প সময়েই দলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। নেরোকা এফসি (NEROCA FC)-র বিরুদ্ধে অভিষেকেই গোল করেছিলেন। তিনি মরসুমে আটটি ম্যাচে খেলেছিলেন এবং দুটি গোল করেছিলেন, দুটি করিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি নিজের দেশে ক্লাব এফকে খুজান্দ (FK Khujand)-এ খেলেন।
সুহেইর ভিপি-কে, ভিকুনা প্রথমে একজন রাইট উইঙ্গার হিসেবে খেলাতেন। ফুল-ব্যাক আশুতোষ মেহতার সঙ্গে তাঁর দারুণ বোঝাপড়া গড়ে উঠেছিল। সেইবার লিগে ১২০০ মিনিটেরও বেশি খেলে তিনি দুটি গোল করেছিলেন এবং দুটি গোল করিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি দলে খেলেন।
প্রথম কয়েক ম্যাচের পরই জুলেন কলিনাস চোট পাওয়ায়, তাঁর বদলি হিসেবে সবুজ মেরুণের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন এই সেনেগালিজ ফরোয়ার্ড। কলকাতা ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোল করে ফ্যানদের নয়নে মণি হয়ে উঠেছিলেন দিওয়ারা। টানা নয়টি ম্যাচে গোল করেছিলেন তিনি।
ভিকুনার দলের সুপার-সাব ছিলেন এই তরুণ ফরোয়ার্ড। ম্যাচে পরের দিকে তাঁকে নামাতেন স্পেনিয় কোচ। বক্সের ভিতর তাঁর নড়াচড়া প্রতিপক্ষের সেন্টার ব্যাকদের মাথাব্যথার কারণ ছিল। মিনার্ভা পাঞ্জাবের বিপক্ষে ম্যাচে শেষ মিনিটে গোল করে মোহনবাগানকে হারের মুখ থেকে রক্ষা করেছিলেন তিনি। এখন তিনি আছেন এসসি ইস্টবেঙ্গলে।