অবশেষে ভারতের কাছে হার মানল সাম্রাজ্যবাদী চিন, নিরাপদে দেশে ফিরলেন অরুণাচলের ৫ নিখোঁজ
সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে মস্কোতে বৃহস্পতিবারই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন ভারত ও চিনের বিদেশমন্ত্রী। লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে সেই বৈঠকে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীই ৫ বিষয়ে একমত হন। আর এর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে ভারতের চাপে নতিস্বীকার করল বেজিং। অরুণাচলের বাসিন্দা অপহৃত ৫ যুবককে ভারতের হাতে ফিরিয়ে দিল লালফৌজ।
- FB
- TW
- Linkdin
অরুণাচল প্রদেশে সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া পাঁচ ভারতীয়কে অবশেষে শনিবার সকালে ফিরিয়ে দিল চিন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি শনিবার সকালে ভারতীয় সেনার হাতে এই পাঁচ গ্রামবাসীকে তুলে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
চিনের মাটিতেই এই হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি হয়। সেখান থেকে কিভিতু বর্ডার পোস্ট পেরিয়ে অরুণাচল প্রদেশে প্রবেশ করতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দল এবং ওই পাঁচ গ্রামবাসীর প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে।
শুক্রবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন যে শনিবারই ওই পাঁচ গ্রামবাসীকে ভারতীয় সেনার হাতে তুলে দেবে চিনা সেনা।
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই এই পাঁচ যুবকের কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। অভিযোগ উঠেছিল যে অরুণাচলের আপার সুবনসিরি জেলা থেকে মোট ৭ জন যুবককে চিনা সেনা তুলে নিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে দু’ জন কোনো রকমে পালিয়ে আসেন।
লাদাখ সীমান্ত সংঘাত নিয়ে দেশব্যাপী উত্তেজনার পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই গায়েব হন অরুণাচলের পাঁচ যুবক। যে পাঁচজন অপহৃত হন বলে অভিযোগ, তাঁদের নাম তোচ সিংকাম, প্রসাত রিংলিং, ডংটু এবিয়া, তানুবেকার এবং এনগুরু দিরি৷ ম্যাকমোহন লাইন সংলগ্ন সুবর্ণসিড়ি জেলার নাচো সার্কেল এলাকার বাসিন্দা ওই পাঁচ জন। তাঁরা সকলেই তাজিন সম্প্রদায়ভুক্ত।ভারতীয় সেনার মালবাহক হিসেবে কাজ করতেন।
ঘটনার কথা সামনে আসতে, প্রথমে গুরুত্বই দিতে চায়নি চিন। বরং তারা বলে, অরুণাচলের অস্তিত্বই তারা স্বীকার করে না। চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বেজিংয়ে দাবি করেন, 'চিনের পূর্বভাগে ভারত-চিনসীমান্ত এবং চিনের দক্ষিণ অংশে তিব্বত নিয়ে আমাদের অবস্থান বরাবরই স্পষ্ট এবং ধারাবাহিক৷ চিন কোনওদিনই চিনা ভূখণ্ডকে বেআইনি ভাবে দখল করে গড়ে ওঠা অরুণাচল প্রদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি৷'
চিনের কুখ্যাত লালফৌজ প্রথমে জানিয়েছিল অরুণাচলের গ্রামের বাসিন্দা এই ৫ তরুণের বিষয়ে তারা কিছুই জানেনা। কিন্তু ভারত চাপ বাড়াতে থাকায় এক সময়ে নতি স্বীকার করে চিন।
অবশেষে গত ৮ সেপ্টেম্বর চিন জানিয়ে দেয় যে ওই ৫ জন তাদের কাছেই আছে। ভারতীয় সেনারা হটলাইনে চিনা সেনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখনই জানানো হয়, ওই পাঁচ জনকে দেশে ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় নথি তৈরি হচ্ছে।
তবে ওই পাঁচ জনকে অপহরণ করা হয়েছে এমন কথা বলেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু । বরং তিনি ট্যুইটে বলেন, “ওই পাঁচ যুবক রয়েছে চিনেই। তাঁরা ঘুরতে ঘুরতে চিনা সীমান্তে ঢুকে পড়ে। এর পর চিনা সেনারা তাদের আটক করে। তাদের দেশে ফেরানোর জন্য উপযুক্ত নথি তৈরি করা হচ্ছে। খুব দ্রুত ওই পাঁচ যুবককে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। চিন্তার কোনো কারণ নেই।”
অবশেষে চিনা ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ার দশ দিনের মাথায় মুক্তি পেলেন ওই পাঁচ যুবক। তবে এই প্রথম নয়। গত মার্চ মাসেও আসাপিলা সেক্টর থেকে ২১ বছর বয়সি এক যুবককে অপহরণ করে পিএলএ। ১৯ দিন পরে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তাকে।