- Home
- India News
- রয়েছে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা, ভিতরটা একেবার ঝকঝকে, ছবিতে ছবিতে ঘুরে আসুন অটল টানেল দিয়ে
রয়েছে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা, ভিতরটা একেবার ঝকঝকে, ছবিতে ছবিতে ঘুরে আসুন অটল টানেল দিয়ে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার ৩ অক্টোবর রোহটাং-এ অটল টানেলের উদ্বোধন করলেন। কৌশলগতভাবেও সুড়ঙ্গটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলা হচ্ছে। ২০১০ সালে এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। ২০১৫ সালের মধ্যেই এর কাজ শেষ করার লক্ষ্য থাকলেও, কাজটা খুব সহজ ছিল না। দেশের ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকদের দশ বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। জেনে নেওয়া যাক এই টানেল সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য -
- FB
- TW
- Linkdin
সুড়ঙ্গটির দৈর্ঘ ৮.৮ কিলোমিটার, আর প্রস্থে এটি ১০.৫ মিটার। টানেলের দুইদিকেই ১ মিটার চওড়া ফুটপাথ তৈরি করা হয়েছে। এটিই বিশ্বের দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গ।
এই প্রথম মানালি এবং লেহ উপত্যকা একটি সুড়ঙ্গপথে সংযুক্ত হল এবং এর ফলে ওই দুই স্থানের মধ্যের পথের দূরত্ব আগের তুলনায় ৪৬ কিলোমিটার কমে গিয়েছে।
নিরাপত্তার কারণে প্রতি ২৫০ মিটারে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো রয়েছে আর ৫০০ মিটার পরপর রয়েছে জরুরি প্রস্থানের দরজা।
সুড়ঙ্গের ভিতর আগুন লাগলে তৎক্ষণাত তা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি বিশেষ পাইপলাইন রয়েছে, আছে ফায়ার হাইড্র্যান্টও।
এই টানেলটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত। টানেলটিতে স্বয়ংক্রিয় আলো এবং বায়ুচলাচলের পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। প্রতি ২.২ কিলোমিটারে একটি করে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণের যন্ত্র থাকবে। ফায়ার হাইড্র্যান্ট, সিসিটিভি ছাড়াও থাকছে পাম্প, ফোন বুথের মতো সুবিধাগুলিও।
এই টানেলের সর্বোচ্চ 80 কিলোমিটার গতিতে যান চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন অন্তত ৩০০০ ছোট গাড়ি এবং ১৫০০ ট্রাক এর মধ্য দিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাধারণত, এই ধরণের দীর্ঘ টানেলগুলির ভিতর ফোনের নেটওয়ার্ক থাকে না। কিন্তু, অটল টানেলে যাত্রীদের ফোনে যাতে কোনও নেটওয়ার্কের সমস্যা না হয় সেই দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হয়েছে। বস্তুত,এই টানেলের ভিতর ফোরজি নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে।
সুড়ঙ্গটি তৈরি হওয়ার ফলে মানালির নিকটবর্তী সোলাঙ্গ সেনা ঘাঁটি থেকে লাহুলের চীন সীমান্তের গা লাগোয়া সাসু উপত্যকায় পৌঁছতে মাত্র ১০ মিনিট সময় লাগবে। কাজেই এই সুড়ঙ্গটি চিনা সীমান্তে নজরদারিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দারুণ সহায়তা করবে। তুষারপাতের সময়ও সেনাবাহিনী খুব সহজেই সীমান্ত এলাকায় পৌঁছে যেতে পারবে।
২০০০ সালের ৩ জুন এই সুড়ঙ্গ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেইসময় কেন্দ্রে ছিল অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার। সুড়ঙ্গটির দক্ষিণ অংশে যে রাস্তাটি এসে যুক্ত হয়েছে সেটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল ২০০২ সালের ২৬ মে। আর সুড়ঙ্গটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল ২০১০ সালে।
৫ বছরের মধ্যে এই টানেলটি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে কাজ চলাকালীন বহু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। যে কারণে সুরঙ্গটি তৈরি করতে ১০ বছর সময় লাগে। এই সুড়ঙ্গ তৈরির ব্যয় ধার্য করা হয়েছিল প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা। কার্যক্ষেত্রে খরচ হয়েছে ৩৫০০ কোটি টাকা।
শীতকালে এই টানেল তৈরির এলাকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২৩ ডিগ্রি নিচে চলে যায়। ওই প্রতিকূল পরিবেশেও বিআরও-র ইঞ্জিনিয়ার শ্রমিকরা এই নির্মাণের কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন।
বিশ্বের দীর্ঘতম টানেলটি রয়েছে নরওয়েতে, দৈর্ঘ্য ২৪.৫ কিমি। তবে দীর্ঘতম হাইওয়ে টানেলের কথা বললে, এদিন থেকে একেবারে শীর্ষে থাকবে ভারতের অটল টানেল।
শনিবার অটল টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
সুড়ঙ্গটি উদ্বোধনের একদিন আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং টানেলটি পরিদর্শন করেছিলেন।
এদিন বিআরও কর্তাদের কাছ থেকে টানেলটি সম্পর্কে বিশদ তথ্য জেনে নিতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে।