- Home
- India News
- ৫০০ কোটি টাকা ধুলোয় মিশল মাত্র ৯ সেকেন্ডে, নয়ডার টুইন টাওয়ার নিয়ে দিনভর উত্তেজনার ১০টি ছবি দেখুন
৫০০ কোটি টাকা ধুলোয় মিশল মাত্র ৯ সেকেন্ডে, নয়ডার টুইন টাওয়ার নিয়ে দিনভর উত্তেজনার ১০টি ছবি দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
দীর্ঘ দিন ধরেই আলোচনার বিষয় বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আইন লঙ্ঘন করে তৈরি হয়েছিল এই দৈত্যাকার বিল্ডিং। সুপ্রিম কোর্ট ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল। আর সেই নির্দেশ কার্যকর হল রবিবার ২৮ অগাস্ট দুপুর আড়াইটের সময়। একদম ঘড়ির কাঁটা ধরে।
দীর্ঘ ৯ বছর ধরে আইনি টানাপোড়েন চলেছিল। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলতে হয়। এই ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বেশ কয়েক দিন আগেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রীতিমত সক্রিয় ছিল নয়ডা প্রশাসন।
তিন হাজার কিলো ৭০০ গ্রাম বিস্ফোরণ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হল নয়ডার টুইন টাওয়ার। রিয়েলিটি এস্টেট ফার্ম সুপারটেক লিমিটেডের তৈরি টুইন টাওয়ার। ৯ সেকেন্ডেরও কম সয়মে ধুলোয় মিশে যায় ৭০ কোটি টাকার এই দৈত্যাকার জোড়া বিল্ডিং।
১০০টিরও বেশি জলের ট্যাঙ্ক, আর কর্মীদের জন্য ৬টি যান্ত্রিক সুইপিং মেশিন আনা হয়েছে। ১৫০ সাফাই কর্মী এই দিন একসঙ্গে কাজ করবেন। টুইন টাওয়ার ধ্বংসের কারণে ৫৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার টন ধ্বংসাবশেষ তৈরি হবে। যা সরাতে প্রায় তিন মাস সময় লাগবে।
সুপারটেকের টুইন টাওয়ারের দৈর্ঘ্য ছিল ১০০ মিটার। এটি কুতুব মিনারের তুলনায় উঁচু বলে দাবি করা হয়। যাইহোক ৪০ তলার টুইট টাওয়ার ধুলোয়ে মিশে যায়। গোটা এলাকা ঢেকে যায় ধুলোয়।
প্রস্তুত ছিল নয়ডা প্রশাসন। বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয় টুইন টাওয়ার। সঙ্গে সঙ্গে ড্রোন ও ওয়াটার স্প্রেডার দিয়ে জল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ধুলো যাতে বেশিদূর ছড়াতে না পারে তার জন্য একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছিল। তবে টুইন টাওয়ার ভেঙে যাওযার পর দৃশ্যমানতা ফিরে আসতে সময় লেগেছিল কমকরে ১২ সেকেন্ড। ধুলোয় ঢেকে দিয়েছিল যমুনা এক্সপ্রেস ওয়ে।
ভাঙা দেখতে ভিড়
নয়ডা সুপারটেক টাওয়ার ভাঙা দেখতে উপচে পড়া ভিড় হয়েছিল। অনেক জায়গায় মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লাইভ টেলিকাস্টও দেখেন। অনেকে আবার সপরিবারে ভাঙা দেখতে আসেন। তবে আগে থেকেই টুইন টাওয়ার নিয়ে উৎসহ ছিল। অনেকেই আবার আগে থেকে টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয় ছবি তুলেছিলেন।
সুপারটেক-এর একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, জমি কেনার জন্য খরচ হয়েছিল ২৫ কোটি টাকা। লেআউট অনুমোদনের জন্য ২৫ কোটি টাকা দিতে হয়েছিল। দুটি টাওয়ার তৈরি করতে পাঁচ বছর লেগেছিল। একটি টাওয়ারের উচ্চতা ছিল ১০২ মিটার। অন্যটির ৯৭ মিটার। ২০১৪ সালেবিল্ডিং প্রবিধান লঙ্ঘনের জন্য প্রথম ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়।
নয়ডার এমারেল্ড কোর্টের টুইন টাওয়ার ভাঙার আগেই আশপাশের ১৪টি বহুতলের বাসিন্দাদের অন্যত্র চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তারা গেছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে তৈরি হয়েছিল একটি স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। এলাক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রায় ১৫০ কুকুর আর বিড়াল। প্রাণীগুলিকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে প্রতিবেশী আবাসিকরাও নিজেদের দামি দামি জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে বাড়ি খালি করে দিয়েছিলেন।
নয়ডার টুইন টাওয়ার ধ্বংসের জন্য যে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল তা ৩টি অগ্নি-৫, ১২টি ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র আর চারটি পৃথ্বী ক্ষেপণাস্ত্রের সমান। ব্যবগহার করা হয়েছিল ৩ হাজার কিলো ৭০০ গ্রাম বিস্ফোরক। ধ্বংসের জন্য খরচ করা হয়েছে ২০ কোটিরও বেশি টাকা।
দেশ জুড়ে উন্মাদনা ছিল টুইন টাওয়ার ভাঙা নিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও যথেষ্ট আলোচনা হয়েছিল। টুইটারে ট্রেন্ডও ছিল। তবে অনেকেই বিশাল অট্টালিকা না ভাঙার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। অনেকে বলেছেন গৃহহীনদের এই অট্টালিকা দিয়ে দিলে ভাল হত। অনেকেই আবার বলেছেন, এটি যানা আইনভাঙে তাদের জন্য একটি শাস্তিস্বরূপ। তবে অনেকেই অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ থেকে যে দূষণ ছড়াবে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।