- Home
- World News
- International News
- কেন সরকার গঠনে এই ৬টি দেশকে আমন্ত্রণ জানালো তালিবান - আফগানিস্তানে কী ভূমিকা নেবে তারা, দেখুন
কেন সরকার গঠনে এই ৬টি দেশকে আমন্ত্রণ জানালো তালিবান - আফগানিস্তানে কী ভূমিকা নেবে তারা, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
১৯৯০-এর দশকে প্রথম তালিবান সরকারকে শুধুমাত্র যে তিনটি দেশ সমর্থন দিয়েছিল, তার অন্যতম ছিল পাকিস্তান। তারপর গত ২০ বছরে সামনে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বললেও, তালিবান নেতাদের পিছন থেকে সমর্থন দিয়েছিল একমাত্র পাকিস্তানই। তালিবানরাও পাকিস্তানকে তাদের 'দ্বিতীয় বাড়ি' বলে বিবেচনা করে। অধিকাংশ তালিব নেতারই পরিবার থাকে পাকিস্তানে, ছেলেরা সেখানে পড়াশোনা করে।পাক মন্ত্রী শেখ রশিদ খোলাখুলি বলেছেন, পাকিস্তান সরকার বরাবরই তালেবান নেতাদের 'হেফাজতকারী' ছিল। গতবারের মতোই, নতুন তালিবান সরকারকে, প্রথম দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে পারে পাকিস্তানই।
আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্তিতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনার সুযোগ ছাড়েনি চিন। তবে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে পাকিস্তানের মতো আগ বাড়িয়ে হাত এগিয়ে দেবে না বেজিং, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। তবে, চিনের আগ্রহ থাকবে, তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরআই সম্প্রসারণ নিয়ে। আফগানিস্তান এই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান সংযোগস্থল। তবে, তার সঙ্গে বাড়তি মাথাব্যথা হিসাবে থাকবে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বিষয়ে উদ্বেগ। এই কারণেই বেজিং-ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আপাতত অপেক্ষা করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে, চিনের সঙ্গে তালিবান নেতৃত্বের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।
চিনের মতো রাশিয়াও সম্প্রতি তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। কে জড়িত করেছে এবং 'মস্কো ফরম্যাট' -এর মাধ্যমে আলোচনার সূচনা করেছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে, রাশিয়া তালেবানদের এবং ১২টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত আফগানিস্তানের 'উচ্চ শান্তি পরিষদের' মধ্যে বৈঠকের আয়োজন করেছিল। বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল আফগানিস্তানে জাতীয় পুনর্মিলন প্রক্রিয়া সহজ করা এবং অবিলম্বে সেই দেশে শান্তি নিশ্চিত করা। তবে,রাশিয়া উদ্বেগ আঞ্চলিক নিরাপত্তাজনিত কারমে। কাজেই, বেজিং-এর মতো মস্কোও বর্তমানে ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রেখে অপেক্ষা করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ততদিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান-এর বিষয়টি নিয়েই সরব থাকবে তারা।
শিয়া-সুন্নি সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের কারণে অতীতে তেহরানের সঙ্গে তালেবানদের সম্পর্ক ছিল একেবারে আদায়-কাঁচকলায়। ১৯৯৮ সালে কাবুলে ইরানি কূটনীতিকের হত্যাকে ঘিরে দুই পক্ষে প্রায় যুদ্ধ বেধে গিয়েছিল। তবে তারপর থেকে খেলা অনেকটাই ঘুরে গিয়েছে। ৯/১১-এর পর আফগানিস্তান আক্রমণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আবার তারাই ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ফলে এখন সাধারণ শত্রুতার জেরে একপক্ষে রয়েছে তালিবান ও ইরান। মার্কিন বাহিনীর প্রস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে তেহরান। তালিবান প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। তাছাড়া, প্রতিবেশী দেশ হিসাবে আফগানিস্তান, তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমীরা তেহরানকে বিচ্ছিন্নতা করলেও, শুধু আফগানিস্তানই তাদের বাণিজ্য এবং সংযোগের প্রধান রাস্তা হয়ে উঠতে পারে।
২০০১ সালে তালিবান শাসনের পতন ঘটানোর সময় ন্যাটো বাহিনীর অভিযানের অংশ ছিল তুরস্কও। কিন্তু, বর্তমানে পশ্চিমীরা পাততাড়ি গোটানোয় আফগানিস্তানে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তার সুযোগে সেই দেশে পা রাখার সুযোগ নিতে চাইছে তুরস্ক। প্রেসিডেন্ট এর্দোগান সাফ বলেছেন, খোলামনে তালিবান শাসনের সঙ্গে সহযোগিতার করবেন। বস্তুত, কাবুল বিমানবন্দরে কার্যক্রম ফের শুরু করার জন্য তালিবানদের লজিস্টিকাল সাপোর্ট দিতে পারে তুরস্ক, েমনটাও শোনা যাচ্ছে। দুই পক্ষই ই সম্পর্কে লাভ দেখছে। আফগান মাটটি থেকে বাণিজ্যিক লাভ তুলতে চাইছে আঙ্কারা। আফগান বাজার ছেয়ে যেতে পারে তুর্কি পণ্যে। সেইসঙ্গে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্নির্মাণে বড় ভূমিকা নিতে পারে তুর্কি নির্মাণ সংস্থাগুলিও।
প্রথম তালিবানি শাসনকে কাতার স্বীকৃতি না দিলেও, দুই পক্ষে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। ২০১১ সালে ওবামা প্রশাসন আফগান যুদ্ধ শেষ করার জন্য প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিল। আর সেই সময় থেকেই দোহা আফগগান শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে শুরু করেছিল। ২০১৩ সালে সেখানে তালিবানদের রাজনৈতিক কার্যালয় খুলতে দেওয়া হয়। ১৫ অগাস্ট, কাবুলের পতনের আগে পর্যন্ত যা সক্রিয় ছিল। সেখান থেকেই বহির্বিশ্বের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করত তালিবানরা। বর্তমানে, হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছে কাতার।