- Home
- Sports
- Other Sports
- বন্ধুরা খেপাত মোটা বলে, তিনি সেনার গর্বিত সদস্যও - ভারতের সোনার ছেলের অজানা কাহিনী
বন্ধুরা খেপাত মোটা বলে, তিনি সেনার গর্বিত সদস্যও - ভারতের সোনার ছেলের অজানা কাহিনী
২০১৬ রিও অলিম্পিকেই পদক জিততে পারতেন নীরজ চোপড়া। ২০১৬ সালে পোল্যান্ডের বাইডগোস্কজে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। অনুর্ধ্ব-২০ বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। যে দূরত্বে ছুঁড়েছিলেন, তা রিও অলিম্পিকের টিকিট দিতে পারত। কিন্তু, দুর্ভাগ্য, অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জনের সময়সীমা শেষ হওয়ার মাত্র ১২ দিন পরে ওই ইভেন্ট হয়েছিল। পাঁচ বছর পর, শনিবার, হরিয়ানার পানিপথের খান্ডরা গ্রামের ছেলে অলিম্পিক অ্যাথলেটিক্স থেকে ভারতকে প্রথম অলিম্পিক পদক এনে দিলেন, তাও একেবারে সোনা। অথচ, একসময় তাঁকে মোটা বলে খেপাত বন্ধুরা। জেনে নেওয়া যাক, ভারতের সোনার ছেলের অজানা গল্প -
| Published : Aug 07 2021, 09:52 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
নীরজের এখনকার পেটানো চেহারা দেখলে বিশ্বাস হবে না, ছোটবেলার বেশ গোলগাল ছিলেন তিনি। এতটাই যে তাঁর বন্ধুরা তাঁকে মোটা বলে খেপাত। আর এই কারণেই নীরজের কারা ভীম চোপড়া, ২০১১ সালে তাঁকে পানিপথ স্পোর্টস স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়ামে নিয়ে গিয়েছিলেন।
ওজন কমাতে জিমে ভর্তি হয়ে কীভাবে তিনি জ্যাভেলিন ছুঁড়তে শুরু করলেন? নীরজের পরিবার জানিয়েছে, তারা জানতই না যে জিমের পর নীরজ আবার অ্যাথলেটিক্স করে। তারা প্রথম জানতে পেরেছিল, নীরজ এক আন্ত -জেলা প্রতিযোগিতা জেতার পর এক স্থানীয় পত্রিকায় তার ছবি বের হওয়ার পর।
মজার বিষয় হল, তাদের পরিবারের কারোরই জ্যাভেলিন সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিল না। নীারজ জ্যাভেলিন ছোড়া শুরু করার পরই এই খেলাটি সম্পর্কে প্রথম জানতে পেরেছিলেন তারা। আর তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল, 'ভল্লা ফেকনা ভি খেল হোতা হ্যায় কেয়া' (জ্যাভেলিন ছোড়াও আবার খেলা নাকি)?
নীরজকে জ্যাভলিনের রাস্তায় এনেছিলেন জয়বীর নামে তাঁর এক ছোটবেলার কোচ। পানিপথে সাই-এর কেন্দ্রে নীরজকে জ্যাভেলিন ছোঁড়ার হাতেখড়ি দিয়েছিলেন তিনিই। বর্তমানে জয়বীর এনআইএস পাতিয়ালার একজন কোচ।
ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী নীরজকে প্রতিদিন ট্র্যাকে আসতে দেখে, একদিন জয়বীর নীরজের হাতে জ্যাভেলিন তুলে দিয়েছিলেন। নীরজের প্রথম থ্রোটি দেখেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সহকর্মীদের তিনি বলেছিলেন, 'ইয়ে তো ন্যাচারাল হ্যায়' (এ তো সহজাত প্রতিভা)।
কয়েক বছর পর, সেখান থেকে নীরজ প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন পঞ্চকুলার তাউ দেবী লাল স্টেডিয়ামে। ২০১৫ সালে তিনি প্রথম জাতীয় শিবিরে ডাক পেয়েছিলেন। আর পরের বছরই, ২০১৬ সালে নীরজ পোল্যান্ডে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেছিলেন।
পরের পাঁচ বছরে নীরজ চোপড়ার শুধুই উত্থান ঘটেছে। ২০১৬ সালে গুয়াহাটিতে সাউথ এশিয়ান গেমস এবং ভুবনেশ্বরে আয়োজিত ২০১৭ এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছিলেন। চিনের জিয়াক্সিং-এ এশিয়ান গ্র্যান্ড প্রিক্স অ্যাথলেটিক্স মিটের দ্বিতীয় লেগে পেয়েছিলেন রুপো। ২০১৮ সালে গোল্ড কোস্ট কমনওয়েলথ গেমস এবং জাকার্তায় এশিয়ান গেমসেও তিনি সোনা জিতেছিলেন।
অথচ তিনি একেবারেই এক কৃষক পরিবারের সন্তান। পানিপথের খান্ডরা গ্রামে তাঁর বাবা সতীশ কুমারের দেড় একর জমি আছে। নিজের দুই বোন-সহ নয় সন্তানের যৌথ পরিবারে অভাব থাকলেও পরিবারের বাকিরা নীরজের প্রশিক্ষণে বাধা আসতে দেননি।
গ্রাম থেকে অনুশীলনের জন্য স্টেডিয়ামে যেতে দীর্ঘ রাস্তা তাকে বাসে যেতে হত। খেলাধূলার পাশাপাশি সমানে চালিয়ে গিয়েছেন পড়াশোনাও। ২৩ বছর বয়সী অলিম্পিয়ান চন্ডিগড়ের ডিএভি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
পাশাপাশি তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্যও বটে। ২০১৬ সালে নায়েব সুবেদার পদে ভারতীয় সেনাবাহিনী নিযুক্ত করা হয়েছিল তাকে। বিশ্বজুড়ে অ্যাথলেটিক্সে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জোরে বাহিনীতেও তার পদোন্নতির ঘটেছে। এদিন সেনার পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়েছে অলিম্পিকে জাভেলিনে দেশকে প্রথম স্বর্ণপদক দেওয়ার জন্য সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নারাভানে-সহ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সকল পদস্থ কর্তা, সুবেদার নীরজ চোপড়াকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।