- Home
- Lifestyle
- Travel
- কলকাতা থেকে দার্জিলিং, ভুতেদের নাকি রয়েছে সাত ঠিকানা, যার কাহিনি রোম খাঁড়া করে দেয়
কলকাতা থেকে দার্জিলিং, ভুতেদের নাকি রয়েছে সাত ঠিকানা, যার কাহিনি রোম খাঁড়া করে দেয়
অনেকেই বেড়াতে (Travel) যান। নিছকই বেড়ানো নয়। অনেকেই আবার অ্যাডভেঞ্চাল পছন্দ করেন। সেই সেই বেড়ানোর সঙ্গে যদি মিশে থাকে ভুতুড়ে (Hunted) আখ্যান- তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু আপনি জানেননি এখনও ভারতের এমন কয়েকটি স্থান রয়েছে যার সঙ্গে মিলে মিশে রয়েছে ভূতুড়ে গল্প (Ghost Stories)। আর সেই রহস্যের হাতছানিতে এখনও বছের পর বছর ধরে সেইসব স্থানগুলিতে ভিড় করে থাকেন পর্যটকরা। যারমধ্যে অন্যতম হল রাজস্থানের ভানগড় দুর্গ ও কুলধারগ্রাম। আবার বেঙ্গালুরুর অত্যাধুনিক বিমানবন্দরের সঙ্গেও জ়ড়িয়ে রয়েছে অলৈকিক গল্প। পিছিয়ে নেই এই রাজ্যই। কলকাতার পাশাপাশি দার্জিলিংও রয়েছে নাকি ভুতুড়ে জায়গা।
| Published : Mar 25 2022, 05:32 PM IST / Updated: Mar 26 2022, 03:46 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
শনিওয়ারবাদা ১৭৩০ সালে তৈরি করেছিলেন প্রথম বাজিরাও। ১৮২৮ সালে এই দুর্গে আগুন লেগেছিল। তাতে একটি অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। বাকি অংশটা পর্যটকদের জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু দূর্গে এখনও গেলে আপনার গা ছমছম করবে। এই গল্পের সঙ্গে যুক্ত পেশওয়া নারায়ণরাও। মাত্র ১৮ বছরেই ক্ষমতা দখল করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর পথের কাঁটা ছিল পিসি। তাঁর ছিল রানী হওয়ার শখ। তাই রাজকর্মীদের সঙ্গে চক্রান্ত করে ভাইপোকে হত্যা করেন আনন্দীবাই। মনে করা হয় নারায়ণ রাওয়ের অতৃপ্ত আত্মা এখনও এই দূর্গে ঘুরে বেড়ায়। পূর্ণিমার রাতে অনেকেই নাকি তাঁর কান্নাভরা আর্তনাদ শুনেছেন।
বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি হাব বলেই পরিচিত বেঙ্গালুরু। শিক্ষিত আর আধিনিক মানুষের বাস এই শহর। তাই বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরও সবকিছুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে অত্যান্ত আধুনিক আর ঝাঁ চকচকে। দেশের তৃতীয় ব্যস্ততম বিমান বন্দর এটি। কিন্তু এই বিমান বন্দরের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে ভূতুড়ে আখ্যান। যদিও এখন গুজব কিছুটা ধামাচাপা দেওয়া গেছে। কিন্তু একটা সময় অনেকেই বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে ভুতের দেখা পেয়েছিলেন বলেও দাবি করেছিলেন। প্রথম দেখেন এক পাইলট। রানওয়ে সাদা শাড়ি পরা এক মহিলা নাকি তার কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। তিনি নাকি রানওয়েতে আটকে পড়েছিলেন। কিন্তু পাইলট যথন বিমানবন্দরের কর্মীদের সেখানে পাঠান তখন সেখানে কেউ ছিল না। ওই একই দিনে আর একই সময় এয়ারপোর্টের নানা স্থানে দেখা গিয়েছিল শাড়ি পরা ওই মহিলাকে। সেই আতঙ্ক অনেক এয়ারপোর্ট কর্মী নাকি রাতের শিফটে কাজ করতে চাইতেন না।
ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই কলকাতার প্রাচীন এই ঐতিহ্যের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে ভুতুড়ে গল্প। ১৯৩০ সালে ৮ ডিসেম্বর স্বাধীনতা সংগ্রামী বিনয়, বাদল, দীনেশ সেই সময়ের পুলিশ ইন্সপেক্টর ডেনারেল কর্নেল সিম্পসনেকে গুি করে হত্যা করেন। অনেকেই বলে এখনও রাইটার্স বিল্ডিংএ নাকি ঘুরে বেড়ায় সিম্পসন সাহেবের আত্মা। রাতের ফাঁকা রাইটার্সে অনেকেই নাকি তাঁর পায়ের আওয়াজ আর কান্নার শব্দ শুনেছেন। রাইটার্স বিল্ডিংর পঞ্চম ব্লকেই এই সাহেব অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিল। সেখানে এখনও তাঁর আত্মার নাকি অবাধ আনাগোনা রয়েছে।
টিভি সিরিয়াল আর ফিল্মের শ্যুটিংএর জন্য বলিউড পরিচালকদের কাছে অত্যান্ত জনপ্রিয় স্থান। এখানে একাধিক ছবি ও সিলিয়াল শ্যুট হয়েছে। কিন্তু এই মিলের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে অদ্ভূত গল্প। যা বলেছেন অভিনেতা অভিনেত্রীরা। যাইহোক এই মিলটি তৈরি হয়েছিল ১৮৭০ সালে। ১৯৮০ সাল থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে রেয়েছে। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত স্থান। বিপাসা বসু জানিয়েছেন এই মুকেশ মিলসে শ্যুটিংএর সময় তাঁর সঙ্গে একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল। তিনি বলেছেন এই মিলের এমন একটা জায়গা রয়েছে সেখানে তিনি যখন স্ক্রিপ্ট পড়ছিলেন তখন সব ঠিক ছিল , কিন্তু অন্য এক জায়গায় গিয়ে স্ক্রিপ্ট পড়ার সময়ই সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল। তাঁর বারবার মনে হয়েছিল তাঁকে কেউ বাধা দিচ্ছে। টেলিস্টার কাম্যা পাঞ্জাবী এই মিলে শ্যুটিং করবেন না বলেও জানিয়েছেন। তিনি বলেন তিনি নাকি একবার এই মিলে অভিনয় করার সময় বারবার পুরুষ কণ্ঠে তার ডায়লগ বলেছেন। মুম্বইয়ের কোলাবায় রয়েছে মুকেশ মিলস।
১৭শ শতকে নির্মিত এই ভানগড় দুর্গ রাজস্থানের অন্যান্য দুর্গগুলি থেকে আলাদা। এটি জয়পুরের পিঙ্ক সিটির আদতে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এই দুর্গ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ভুতুড়ে দুর্গ হিসেবে পরিচিত হয়ে যায়। সূর্যাস্ত থেকে সূর্যদয়ের মধ্যে এই দুর্গে প্রবেশ নিষধ। সাইন বোর্ড রয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার নামে। স্থানীয়দের কথা এই দুর্গেই বাস করে এক জাদুকরের অতৃপ্ত আত্মা। জাদুকর ভানগরের রাজকুমারির প্রেমে পড়েছিলেন। এখনও এই দুর্গে ঢুকলে অস্বস্তি বোধ করেন পর্যটকরা। রাতে যাঁরা গেছেন তাঁদের অধিকাংশেরই মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। বিমান, সড়ক ও রেলপথে যাওয়া যাতে পারে। জয়পুর থেকে দূরত্ব ৫৬ কিলোমিটার।
আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে রাজস্থানের কুলধারা গ্রাম প্রায় দেড়হাজারের বেশি পিলিওয়াল ব্রাহ্মণের বাসভূমি ছিল। পাঁচ শতকেও বেশি সময় ধরে সেই গ্রামেই তারা বাস করেছিলেন। কিন্তু একদিন রাতরাতি সেই সেই গ্রাম ছেড়ে চলে যায় সবাই। কিন্তু কেন? সেই রহস্যের সমধান হয়নি এখনও। অনেকেই বলেন গ্রামের ওপর অভিশাপ লেগেছে, তাই সকলে চলে গেছে। এখনও সেখানে তৈরি হয়নি কোনও বসতি। জরাজীর্ণ বাড়িগুলি দাঁড়িয়ে আছে অতীতের স্মৃতি নিয়ে। স্থানীয় লোককথা অনুযায়ী এই গ্রামের রাজা ছিলেন সেলিম সিং। তিনি যেমন শক্তিশালী ছিলেন তেমনই নৃশংস আর বর্বর ছিলেন। চার কুনজর ছিল গ্রামের মহিলাদের ওপরে। দিনের পর দিন ধরে রাজার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একরাতে হঠাৎই গ্রামের বাসিন্দার একসঙ্গে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। তবে তারা যে কোথায় গিয়েছিল তা আজও কেউ জানে না।
দিল্লি থেকে জয়সলমির হয়ে এই কুলধারা গ্রামে যাওয়া যায়। জয়সলমির থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে এই গ্রাম।
ডাউ হিল সম্পর্কে অনেক গল্পই শোনা যায়। দার্জিলিং থেকে বেশি দূরে নয়। ডাউ হিলে অনেক চাগান রয়েছে। রয়েছে ঝর্না, উপত্যকা আর বোটানিক্যাল গার্ডেন। রয়েছে একটি যাদুঘরও। ডাউ হিসের অদ্ভূত গল্প কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়ও পাওয়া যায়। যার মধ্যে জনপ্রিয় হল একটি মুণ্ডহীন বালকের আনাগোনা। অনেকেই সেই মুণ্ডহীন বালককে নাকি দেখেছে। ডাউ হিলের জঙ্গলে নাকি এক শাড়িপরা রহস্যমহীকেও ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। ডাউ হিলে শতাব্দী প্রাচীন ভিক্টোরিয়া বয়েজ স্কুল রয়েছে। কিন্তু এই স্কুলের হোস্টেল যখন বন্ধ থাকে তখন সেখান থেকে ছেলেদের চিৎকার কান্না আর হাসির আওয়াজ পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন এখানে শিশুদের আত্মা ঘুরে বেড়ায়। রাতের অন্ধকারে সেখানে গেলে নাকি অদ্ভূত অনুভূতিও হয়। ডাউহিল স্টেশনও রাতের অন্ধকারে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা পারতপক্ষে রাতে বাড়ির বাইরে বার হন না।