- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- বাদ 'জয় শ্রীরাম', ভরসা নিজের কাজ - শুভেন্দুর থেকেও কঠিন পরীক্ষায় এবার রাজীব, দেখুন
বাদ 'জয় শ্রীরাম', ভরসা নিজের কাজ - শুভেন্দুর থেকেও কঠিন পরীক্ষায় এবার রাজীব, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
জেলার দায়িত্ব
মাত্র দু'মাস আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তার আগে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বনমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০১১ এবং ২০১৬ পর পর দুবার তৃণমূলের টিকিটে ডোমজুর আসনে জয়ী হয়েছেন তিনি। এবারও ডোমজুর আসন থেকেই লড়ছেন তিনি। তবে এবার আর শুধু নিজের কেন্দ্রে জিতলেই হবে না, হাওড়া জেলার ১৬টি বিধানসভা আসনেই বিজেপিকে জেতানোর দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। কারণ, এই জেলায় গেরুয়া শিবিরের তিনিই সবচেয়ে বড় মুখ।
দলবদলের বোঝা
মাত্র দু'মাস আগেও যিনি ছিলেন তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী, তিনিই এখন তৃণমূলের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে পরিচিত বিজেপি দলের প্রার্থী। এই বদলের একটা বোঝাও রয়েছে তাঁর উপর। ডোমজুরের এবারের তৃনমূল প্রার্থী কল্যাণ ঘোষ প্রচার করছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন 'অন্য শুভেন্দু'। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পিছন থেকে ছুরি মেরেছেন, বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। বিশেষ করে ডোমজুরের মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে তো এই ধরণের পোস্টারে ছেয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
পিছিয়ে বিজেপি
জেলার ১৬টি আসনের কোনওটিতেই বিজেপি কখনও জেতেনি। অবশ্য এমন কথা পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ জেলা সম্পর্কেই বলা যায়। তবে এই রাজ্যে বিজেপির সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখার শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে। রাজ্যের ৪২ টি লোকসভার আসনের মধ্যে ১৮ টিতে জয়লাভ করেছিল তারা। কিন্তু, সেইসময়ও হাওড়ার ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র একটিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এবার অন্তত সাত-আটটি আসনে জেতার স্বপ্ন দেখছে তারা।
৩০ নয় এখানে ৪০ শতাংশ
নরেন্দ্র মোদী সরকার যতই 'সবকা বিশ্বাস'এর স্লোগান তুলুক, এখনও মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকাংশের মধ্যে বিজেপিকে নিয়ে অবিশ্বাস রয়েছে। তার ওপর রাজ্যে মুসলিম ভোট গত কয়েকটি নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঝুলিতেই গিয়েছে। তাই গোটা রাজ্যেই বলতে গেলে মুসলিম ভোট ছেড়ে হিন্দু ভোটের উপরই মনোনিবেশ করেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু, হাওড়া জেলায় তা করলে হবে না। রাজ্যের মোট মুসলিম ভোটার যেখানে ৩০ শতাংশের মতো, সেখানে হাওড়া জেলায় মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশই মুসলিম। তাই, জিততে গেলে এই ভোট বাদ দেওয়া যাবে না।
উধাও জয় শ্রীরাম
বিজেপি আছে আর জয় শ্রীরাম স্লোগান নেই - এমনটাও হতে পারে? হচ্ছে, হাওড়াতে। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় প্রচার করতে গিয়ে অনেক সময়ই কালো পতাকা দেখতে হচ্ছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে, শুনতে হচ্ছে জয় শ্রীরাম স্লোগান। রাজীবের সঙ্গে থাকা বিজেপি কর্মীরা তাতে মাঝেমধ্যে উত্তেজিত হয়ে পড়লেও, একেবারে শান্ত থাকছেন রাজীব। সমর্থকদেরও বলছেন, কোনও দ্বন্দ্বের মধ্যে না জড়াতে। আর সত্য়ি সত্যিই তাঁর প্রচারে বন্দে মাতরম, ভারত মাতা কি জয় এবং বিজেপির অন্যান্য নির্বাচনী স্লোগান থাকলেও নেই জয় শ্রীরাম।
প্রচার কৌশলে বদল
আর এই কারণেই নন্দীগ্রাম তথা পূর্ব মেদিনীপুরের শুভেন্দু অধিকারী যে প্রচার কৌশল নিয়েছিলেন, তার থেকে সরে আসতে হচ্ছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুবেন্দু প্রচারে বারবার পাকিস্তানের কথা তুলেছেন, প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেগম বলে সম্বোধন করেছেন। রাজীবের প্রচার ততটা সহজ হচ্ছে না।
ভরসা নিজের উপরই
এই সব আক্রমণ, বাধার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের উপরই সম্পূর্ণ ভরসা রাখছেন। তাঁর সাফ কথা, দল বদলে যাওয়ায় তিনি বদলে যাননি। নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি মানুষ তাঁকে ভাল করে চেনে। তারা জানে গত ১০ বছর ধরে তিনি তাঁদের সঙ্গে আছেন। আর উন্নয়নের কাজে তিনি কখনও জাত, বর্ণ, ধর্ম দেখেননি। সংখ্যালঘু সমম্প্রদায়েরর মানুষও তাই তাঁর সঙ্গেই আছেন বলে দাবি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর। মুসলিম গ্রামে গিয়ে তাই জয় শ্রীরাম স্লোগান নয়, রাজীব ও বিজেপি কর্মীরা বলছেন, ড্রেন এবং জলের পাইপলাইন নিয়ে তাঁর কাজের কথা। উন্নয়নের কথা।