ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি, আজই তৈরি হতে পারে নিম্নচাপ
শুক্রবার তৈরি হতে পারে নিম্নচাপ। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আন্দাজ করেছেন, '১০ মে নাগাদ ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণঝড়।' সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ইতিমধ্য়েই ওড়িশার ১৮ জেলায় সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। হাওয়া অফিসের চলুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি, ছবি সহ পরপর দেখে নেওয়া যাক।
- FB
- TW
- Linkdin
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণ আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন এলাকার উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে।যা শুক্রবার নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তারপর তা উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দক্ষিণ আন্দামান সাগরের উপর অবস্থিত ঘূর্ণাবর্ত , ঘূর্ণিঝড় পরিণত হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে উত্তর ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসার আশঙ্কা রয়েছে। সেজন্য, ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে ওড়িশা সরকার।
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায়, পুরী, গঞ্জম, খুরদা, বালাসোর, কটক, কান্ধামাল-সহ ওড়িশার ১৮ জেলাকে সতর্কবার্তা জারি করেছে সরকার। কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে।
আইএমডি-র বিজ্ঞানী জানিয়েছেন,' ৬ মে নিম্নচাপ তৈরি হবে। এরপর তা শক্তি সঞ্চয় করে আরও ঘণীভূত হবে। দক্ষিণ আন্দামান এবং বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকায় সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। ওই এলাকায় মৎসজীবীদের মূলত না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, কেন না আবহাওয়ার অনেক বদল ঘটবে।'
আইএমডি-র ডিজি মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, 'মে মাসে যখন সাধারণত যখন বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়, তখন তা ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ৬ মে দক্ষিণ আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের উপরে নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে', বলে জানিয়েছেন তিনি।
আইএমডি-র ডিজি বলেছেন, 'সাধারণত দুটি সময়ে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। একটা প্রাক বর্ষার সময়। অর্থাৎ মার্চ এপ্রিল মে। আরেকটা বর্ষার পর অর্থাৎ অক্টোবার, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর। বেশিরভাগ ঘূর্ণিঝড় হয় মে মাসে এবং নভেম্বরের মধ্য়ে। মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা গোটা পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত নজর রাখছি।'
পূর্বাভাস মিলে গিয়ে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে ইতিমধ্যেই ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে । আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেছেন, '৬ মে ওই এলাকায় নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। যা ঘণীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা গোটা পরিস্থিতির নজরে রাখছি।'
আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা জিকে দাস জানিয়েছেন, 'এখনই এর গতিবিধি সম্বন্ধে বলা মুশকিল। তবে তিনি জানিয়েছেন যে, মে মাসে ওই এলাকায় নিম্নচাপ তৈরি সম্ভবনা রয়েছে। কী পরিস্থিতি হতে চলেছে, তা আগামী কয়েকদিনে পরিষ্কার হয়ে যাবে।'
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতির সম্ভাবনা আগেই তৈরি হয়েছে। তীব্র দাবদাহের মধ্য়েই ঝড়-বৃষ্টি হওয়াতে স্বস্তি সারা বাংলায়। হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, এই সময় অন্য বছরগুলিতে তিন থেকে চারটি কালবৈশাখী হয়ে যায়। কিন্তু, এবছর এখনও পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে সবে একটা কালবৈশাখী হয়েছে। বিগত অনেকদিন ধরেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে সেই আশা মিলেছে। এবার নিম্নচাপের জেরে ফের ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় সারা বাংলা।