- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- ভারী বৃষ্টিতে ভয়াবহ অবস্থা দক্ষিণবঙ্গে, ফুঁসছে নদী, উদ্ধার কাজে নামল প্রশাসন, দেখুন ছবি
ভারী বৃষ্টিতে ভয়াবহ অবস্থা দক্ষিণবঙ্গে, ফুঁসছে নদী, উদ্ধার কাজে নামল প্রশাসন, দেখুন ছবি
- FB
- TW
- Linkdin
বাঁকুড়া জেলায় গত ৪৮ ঘন্টায় প্রায় ৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত জনজীবন। ক্রমাগত বৃষ্টির জেরে ব্যাপকভাবে জল বেড়েছে জেলার নদীগুলির।
ফুসছে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর নদী। গন্ধেশ্বরী নদীদ জল বাড়ার ফলে ছাতনা শুশুনিয়া রাস্তার গন্ধেশ্বরী নদীর উপর সেতু জলের তলায়।
বাঁকুড়া মানকানালী রাস্তায় মানকানালীর কাছে গন্ধেশ্বরী নদীর উপর সেতু তিনফুট জলের তলায়। বিছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। দ্বারকেশ্বর নদের জল বেড়ে যাওয়াতে কেঞ্জাকুড়া সঞ্জীবনী ঘাটের ভাস সেতু জলের তলায় সেখানেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
প্রবল বৃষ্টির জেরে জমাজলে জেলার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন। বাঁকুড়া শহরের ১৬, ১৮, ২৩ নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা জলবন্দী বাসিন্দারা। শহর লাগোয়া জুনবেদিয়া অঞ্চলের রামকৃষ্ণপল্লী জলমগ্ন। কেঞ্জাকুড়ায় বাস স্ট্যন্ড এলাকায় বেশ কিছু পরিবার কোমরজলে বন্দী।
বিভিন্ন প্রান্তের বৃষ্টির জমা জল নদীতে নামতে শুরু করায় দ্রুত হারে জেলার নদীগুলির জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ছে। শীলাবতি নদী পেরোতে গিয়ে জলের স্রোতে ভেসে তলিয়ে গেল এক গ্রামবাসী। সিমলাপাল থানার ধুলাইপুর গ্রামের এক গ্রামবাসী। তার খোজে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল।
জেলার যে সমস্ত এলাকায় জল জমে আছে সেখান থেকে জল বের করার কাজে নামে দমকল বাহিনী। বেশ কিছু কাচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে প্রশাসনিক ভাবে কত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা এখনো জানানো হয়নি। তবে চিন্তা বাড়িয়েছে নদীগুলির জলস্তর বেড়ে যাওয়াতে।
এরপরে বৃষ্টির দাপট বাড়লে বেশ কিছু নদী প্লাবিত করতে পারে নদী উপত্যকার নিচু এলাকায়। সবমিলিয়ে পরিস্থিতির দিকে নজরদারী চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
জামাইষষ্ঠীর পরে বৃহস্পতিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কালো মেঘে আকাশ ঢেকে গিয়ে নেমে আসে দফায় দফায় বৃষ্টি মুর্শিদাবাদের একাধিক জায়গায়।বিশেষত ডোমকলের মোহনপুর কান্দি ,ভরতপুর সালার রেজিনগর সদর শহর বহরমপুরের একাধিক জায়গায়। শুরুতে অল্প ঝড়ো হাওয়ার পরে মুষলধারে বিক্ষিপ্তভাবে একনাগাড়ে শুরু হয় বৃষ্টি। কোথাও জমির ধানের ফসল নুয়ে, পড়ে তো কোথাও সবজি খেতে জমে যায় হাঁটু পর্যন্ত জল।
রেজিনগরে মরশুমি আমন ধানের চাষের ওপর যথেষ্টই কুপ্রভাব পরে এর দাপটে। স্থানীয় চাষী নাজিম সেখ বলেন, শুনেছিলাম যেকোনো মুহূর্তে মুষলধারে বৃষ্টি আছে পড়তে পারে তবে বৃষ্টি যে কতখানি ক্ষতি করবে তা বুঝতে পারিনি"।
সব মিলিয়ে ডোমকল এলাকা ও কান্দির কৃষিজীবী মানুষরা না কালে পড়েছেন এই পরিস্থিতিতে।যদিও এদিন পরিস্থিতি আগাম আন্দাজ করে জেলা প্রশাসনের তরফে পঞ্চায়েত অফিস গুলো থেকে পর্যাপ্ত পরিমান সর্তকতা অবলম্বন এর কথা ঘোষণা করা হলেও তাতে খুব একটা পরিস্থিতি সামাল দেয়া যায়নি। পাশাপাশি একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দোকান বাজার খোলা থাকার ফলে বাড়ি থেকে বাইরে বেরোনো মানুষজনকে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
সারারাত এক টানা বৃষ্টির ফলে জলমগ্ন কামারহাটি ও পানিহাটি বিটি রোড সংলগ্ন এলাকা। বুধবার থেকে বৃষ্টির ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কামারহাটি ও পানিহাটির বিটি রোড এলাকা। জল জমে থাকার ফলে ব্যস্ততম বিটি রোডের যান চলাচল ধীরগতিতে চলছে । কোথাও হাঁটুজল কোথাও গোড়ালি পর্যন্ত জমা জলের ফলে পথ চলতি সাধারণ মানুষদের যথেষ্টই অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে ।
পাশাপাশি বিটি রোডের ধারে থাকা দোকান গুলোতে জল ঢোকার ফলে যথেষ্টই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কামারহাটি থেকে পাণিহাটি এই অঞ্চলের বিটি রোড জলমগ্ন কোথায় খানাখন্দ আছে তাও ঠিক পরিষ্কার নয়।তাই পথচলতি মানুষ এবং গাড়িচালকরা ও আতঙ্কিত দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায়। যেসমস্ত এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে জল ঢুকেছে তার মধ্যে রয়েছে পানিহাটি পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের শতদল পল্লী, প্রিয়নগর, এইচ বি টাউন প্রভৃতি।
এছাড়াও কামারহাটি পৌরসভার বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ অল্প বৃষ্টি হলেই এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ভোট আসে ভোট যায় কিন্তু এলাকা জলমগ্ন হলে স্থানীয় প্রশাসনের কেউ তাদের দেখতেও আসে না। আগামী কাল পরশু পর্যন্ত বৃষ্টি হয়ে চললে এই সমস্ত শিল্পাঞ্চল জুড়ে আরো ব্যাপক দুর্ভোগের মধ্যে পড়বেন বাসিন্দারা।
গত ২৪ ঘন্টায় পানিহাটি ও কামারহাটি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কোথাও ৫০ থেকে ৫৫ মিলিমিটার, আবার কোথাও ৩০ থেকে ৩৫ মিলিমিটার। স্বাভাবিক ভাবেই জলমগ্ন থাকা বাড়ির বাসিন্দাদের ঘর ছাড়া হতে হবে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ গাইনের।
অপরদিকে, জলে ডুবল হাওড়া পুর নিগমের বিভিন্ন এলাকা।জল জমে যায় পঞ্চানন তলা রোড, রামচরন শেঠ রোড, চার্চ রোড,ইস্ট ওয়েস্ট বাইপাস, রামরাজাতলা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা।জল জমে যায় অলি গলিতে।দুর্ভোগে পড়েন মানুষজন।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী শুরু হয় বেশ কয়েক দফায় বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। রামচরন শেঠ রোড,পঞ্চনন তলা রোড, টিকিয়াপাড়া, দাসনগর, সালকিয়া, রামরাজাতলার বেশ কিছু রাস্তায় জল জমে যায়। দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।
বেলুড় স্টেশনে রেলের আন্ডারপাসে মানুষ সমান জল, বেলুড়ের একপ্রান্তে ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্র নিশ্চিন্দা অঞ্চল, উল্টোদিকে বালি বিধানসভা কেন্দ্রে রেল স্টেশন রোড অঞ্চল, রাতভর বৃষ্টির জেরে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে দুই প্রান্তের মানুষজনের। বিকল্প রাস্তা আছে কিন্তু যাতায়াতে বেশ খানিকটা টাইম চলে যায়। অফিস যাত্রীরা এলাকার মানুষজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেলওয়ে লাইন পারাপার করছে। বিপজ্জনকভাবে পারাপার করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।
রাজ্যে বিশেষ কোভিড বিধির জন্য এমনিতেই যানবাহন কম চলছে এরওপর বৃষ্টির জন্য কার্যত শুনশান রাস্তাঘাট। হাওড়া ব্রীজ ছিল মোটের উপরে ফাঁকা। মাঝে মধ্যে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে জেলার সর্বত্র। কিন্তু শহরে ভারী বৃষ্টিতেই কার্যত জলমগ্ন হাওড়া শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। কোথাও হাঁটু অব্দি কোথাও কোমর অবদি জল জমে রয়েছে। সেই জলের মধ্যে দিয়েই যাতায়াত করছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।