সংক্ষিপ্ত

সাম্প্রদায়িক হিংসা থেকে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য- এই সব বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন ১৩ বিরোধী দলের। ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সনিয়া গান্ধী। দেশের জনগণের কাছে শান্তি রক্ষার আবেদন করেছেন তাঁরা।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহ ১৩টি বিরোধী দলের নেতা শনিবার দেশে সাম্প্রতিক ঘৃণাত্মক বক্তৃতা (Hate Speech) ও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনাগুলি নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তাঁরা দেশের জনগণের কাছে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এজতীয় ঘটনাগুলি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন নীরব তা নিয়েও প্রশান তুলেছেন। 

বিরোধীদের যৌথ বিবৃতি-
একটি যৌথ বিবৃতিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন , এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার-সহ ১৩ জন বিরোধী নেতা সাম্প্রদায়িক হিংসা ও হেটস্পিচ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পোশাক, ধর্মীয় বিশ্বাস, ধর্মীয় উৎসব, ভাষা এই ইস্যুগুলিতে ইচ্ছেকৃতভাবে সমাজে মেরুকরণ তৈরি করা হচ্ছে। এতে কেন্দ্রীয় শাসকদলের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। যৌথ বিবৃতিতেই তাঁরা সাম্প্রদায়িক হিংসায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। 

বিরোধীদের প্রশ্ন-
যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিষয় পুরোপুরি নীরব। প্রধানমন্ত্রীর এই নীরবতায় তাঁরা মর্মহাত বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন। বিবৃতিতে ১৩টি বিরোধীদলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'প্রধাননন্ত্রী ধর্মান্ধতা প্রচারকারীদের কথা ও কাজের বিরুদ্ধে কথা বলতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ একটি দল  তাঁদের কথা ও কাজের মাধ্যমে আমাদের সমাজকে উস্কানি দিচ্ছে। এই নীরবতা একটি সত্যের সাক্ষ্য বহন করে।' বিরোধীদের অভিযোগ এই ধরনের সশস্ত্র জনতা সরকারি পৃষ্ঠপোষতায় উন্মত্ত আচরণ করে।  

বিরোধীদের দাবি-
গত একশো বছর ধরে ভারতকে সংজ্ঞায়িত ও সমৃদ্ধ সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধনকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের সম্মিলিত সংকল্পকে জোরদার করে। বিরোধী নেতারা বলেছেন, ভারতের সমাজে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন বিষাক্ত মতাদর্শগুলির বিরুদ্ধে লড়াই ও মাকোবিলা করার জন্য বিরোধী দলগুলি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। 

বিরোধীদের আবেদন-
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির দেশের সমস্ত জনগণের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি যারা সাম্প্রদায়িক মেরুকরণকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে চায় তাদের অশুভ উদ্দেশ্য যেন দেশের সাধারণ মানুষ ব্যর্থ করে দেয় তারও আবেদন জানিয়েছেন। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য একজোট হয়ে কাজ করার আবেদনও জানান হয়েছে। 

দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা-
১০ এপ্রিল রাম নবমী উপলক্ষ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে রয়েছে কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ, বাংলা। অন্যদিকে ওই দিনে মেশে খাবার পরিবেশন নিয়ে ছাত্র সংঘর্ষে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছিল জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্য়ালয়। বিরোধীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে দেশের মধ্যে মেরুকরণ তৈরির জন্য শাসক দল ইচ্ছেকৃতভাবে পোশাক, বিশ্বাস, খাবার ভাষা এগুলিকে ব্যবহার করে যাচ্ছে। সশস্ত্র ধর্মীয় মিছিল থেকে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। যা আরও ক্ষতিকর বলে দাবি করেছেন তাঁরা। বিরোধীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই দেশের উন্নতি তখনই সম্ভব যখন বহুর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা হবে।