সংক্ষিপ্ত

ছত্তিসগড়ের খেরকাট্টা পারালকোট জলাধারে ছুটি কাটাতে গিয়ে সাংঘাতিক কাণ্ড ঘটালেন ওই সরকারি অফিসার। তাঁর ভুল সিদ্ধান্তে সংকটে পড়েছে প্রায় ১,৫০০ একর চাষের জমি, মাথায় হাত স্থানীয় কৃষকদের। 

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিশ্চিন্তে ছুটি কাটাচ্ছিলেন ছত্তিশগড়ের সরকারি অফিসার রাজেশ বিশ্বাস। আনন্দ ফুর্তির উদ্দেশ্যে সদলবলে গিয়েছিলেন ছত্তিসগড়ের কাঙ্কের জেলার খেরকাট্টা পারালকোট জলাধারে। বিশাল সেই জলাধারের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়েই ঘটল বিপদ। আর সেই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে একটা সম্পূর্ণ গ্রামের গরীব কৃষকদের চূড়ান্ত সংকটের মধ্যে ফেলে দিলেন ওই দায়িত্বজ্ঞানহীন সরকারি আধিকারিক।

Samsung কোম্পানির S23 মডেলের একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন ৩২ বছর বয়সী রাজেশ বিশ্বাস। ফোনটির মূল্য প্রায় ১ লক্ষ টাকা। খেরকাট্টা জলাধারের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ফোনটি হাত থেকে ছিটকে পড়ে একেবারে তলিয়ে যায় ১৫ ফুট গভীর জলের নীচে। অত দামি ফোন খোয়া যেতেই দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েন খাদ্য দফতরের অফিসার রাজেশ বিশ্বাস। নিজের সরকারি পদের অপব্যবহার করে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই ড্যামে কর্তব্যরত কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে দেন যে, সম্পূর্ণ জলাধারে যত জল আছে, সব ছেঁচে ফেলে তাঁর ফোন উদ্ধার করতে হবে।

সরকারি হিসেব মতে, ওই জলাধারে প্রায় ২১ লক্ষ লিটার জল ছিল। সমস্ত জল ছেঁচে জলাধার শুকনো করে ফেলতে কর্মীদের সময় লেগেছে প্রায় ৩ দিন। এই ৩ দিন জুড়ে জলাধার থেকে যত জল উঠেছে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই এলাকার প্রায় ১ হাজার পাঁচশো একর চাষের জমি। এর ফলে মাথায় হাত পড়ে গেছে গরীব কৃষকদের। স্বাভাবিকভাবেই এই খবর গিয়ে পৌঁছেছে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্তৃপক্ষের কানে। কেন এমন অদ্ভুত নির্দেশ দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন রাজেশ বিশ্বাসের কাছে করা হলে তিনি যুক্তি দেখান যে, ওই জলাধারের জল সেচের কাজের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী ছিল এবং তিনি ওই ড্যামের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আর.সি ধীবরের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই এই কাজ করিয়েছিলেন। ডিজেল পাম্প ব্যবহার করে ‘খারাপ জল’ বের করতে মাত্র ৮ হাজার টাকা খরচা হয়েছে বলেও জানান রাজেশ। তাঁর দাবি, এই কাজের দরুন কোনও কৃষকেরই এতটুকু ক্ষতি হয়নি।

যদিও, ৩ দিন পর যখন রাজেশ বিশ্বাসের ১ লক্ষ টাকার ফোনটি উদ্ধার হয়, তখন সেটি একেবারেই কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। রাজেশকে ইতিমধ্যেই নিজের সরকারি পদের অপব্যবহার করার অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আর, তাঁর ঊর্ধ্বতন অফিসার আর.সি ধীবরকে এই প্রচণ্ড গরমকালে এতটা জল নষ্ট করার শাস্তিস্বরূপ মোটা টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তার ওপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এরূপ অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রশ্নও করা হয়েছে তাঁকে, প্রশ্নের যথাযথ জবাবদিহি করতে না পারলে তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কাঙ্কের জেলার সেচ দফতর।

আরও পড়ুন- 
নিজে হাসপাতালে গিয়ে এগরার বিস্ফোরণে আহতদের সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আপনি কি সোজা হয়ে শুয়ে ঘুমোলে ভয়ের স্বপ্ন দেখে বোবা হয়ে যান? জেনে নিন এর থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার উপায়

জলে পড়লেই ফুলে যাবে জামা, ডুবন্ত শিশুদের বাঁচাতে অদ্ভুত আবিষ্কার যুবকের