সংক্ষিপ্ত
ঝঞ্জামেঘে ঢেকে গিয়েছিল সেদিনের সন্ধ্যার আকাশ। তারপরে বিপদের আশঙ্কা সত্ত্বেও কেন বিমান অণ্ডালে নামতে গেল, এনিয়ে ইতিমধ্য়েই প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার তদন্তে নেমেছে ডিরক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন।
ঝঞ্জামেঘে ঢেকে গিয়েছিল সেদিনের সন্ধ্যার আকাশ। তারপরে বিপদের আশঙ্কা সত্ত্বেও কেন বিমান অণ্ডালে নামতে গেল, এনিয়ে ইতিমধ্য়েই প্রশ্ন উঠেছে। বিমানের যে যন্ত্র, সর্বদা সম্ভাব্য দুর্যোগের পূর্বাভাস দিয়ে সতর্ক করে থাকে, সে কি ইঙ্গিত পৌছতে পারেনি পাইলটের কাছে। সেই যন্ত্রই কি পাইলটকে ভূলপথে চালিত করেছে, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে বিমান মন্ত্রকের কর্তারা।
তবে কি ওয়েদার রেডার কাজ করেনি ?
১ মে রবিবার মুম্বই থেকে দুর্গাপুরের অণ্ডালে নামার সময় ভয়াবহ দুর্যোগের মুখঘে পড়েছিল বেসরকারি সংস্থা স্পাইসজেটের বিমান। সেটা ছিল বোয়িং ৭৩৭ ড্যাশ ৮০০ সিরিজের আধুনিক বিমান। যাত্রাপথে আবহাওয়ার প্রকৃতি বুঝতে সব বিমানেই এখন ওয়েদার রেডার থাকে। এই যন্ত্রই আবাহাওয়ার পরিবর্তিত পরিস্থিতি- বিপদের আশঙ্কা জানিয়ে দেয় পাইলটকে। তবে সেদিন ভয়াবহ দুর্যোগের মুখে পড়েও কেন বিমান অণ্ডালে নামতে গেল, তবে কি ওয়েদার রেডার কাজ করেনি, প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন, 'যাবজ্জীবন মানে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত কারাবাস', খুনের মামলায় স্পষ্ট করল এলাহবাদ হাইকোর্ট
স্পাইসজেটের আহত যাত্রী আকবর আনসারির অস্ত্রোপচার
সেদিন ভয়াবহ দুর্যোগের মুখে পড়েন বেশ কয়েকজন যাত্রী এবং বিমানসেবিকারাও আহত হন। গিরিডির বাসিন্দা , স্পাইসজেটের আহত যাত্রী আকবর আনসারি এখনও দুর্গাপুরের বিনানগরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন। তার ভাই মহম্মদ আখতার হোসেন জানিয়েছেন, তাঁর দাদার শিরদাড়ায় আঘাত লেগেছে। সোমবার অস্ত্রপচার হয়েছে। তবে আগের থেকে তিনি অনেকটাই ভাল আছেন। হাসপাতালের সুপার পার্থ পাল জানিয়েছেন, স্পাইসজেটের যাত্রী আকবর আনসারির অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
ওই দিন বেশিরভাগ উড়ানই মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে যায়, তবে কেন গেল না অণ্ডালগামী স্পাইসজেট ?
এদিকে ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার তদন্তে নেমেছে ডিরক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন অর্থাৎ ডিজিসিএ। ওই দুর্ঘটনার পরেই বসিয়ে দেওয়া হয় দুই পাইলটকে।তদন্ত শেষ হওয়ার আগে তাঁরা ডিউটিতে যোগ দিতে পারবেন না। বিমান মন্ত্রক সূত্রের খবর, সম্প্রতি সেই দুই পাইলটের সঙ্গে কথা বলেছে ডিরক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন। জানা গিয়েছে, বিমানের ওয়েদার রেডার একটা বার্তা দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে আসন্ন ভয়াবহ দুর্যোগের কোনও আভাস ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই এরপরেই প্রশ্ন উঠেছে, যন্ত্রই কি তবে পাইলটকে বেপথে চালিত করেছিল ? ঘটনার দিন, সন্ধ্যায় আকাশের ওই এলাকা থেকে বেশিরভাগ উড়ানই মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় এই সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছে।
ঝঞ্জা মেঘের দাপট, তদন্তে এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিং ব্যুরো
বিমান শিবির সূত্রে খবর, সেই সন্ধ্যায় জামশেদপুরের আকাশ থেকে একেবারে নেপালের দক্ষিণাংশ পর্যন্ত টানা উল্লম্ব মেঘ তৈরি হয়েছিল। সেই ঝঞ্জা মেঘের এতটাই দাপট ছিল যে, প্রায় ৪০ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক কিছু উড়ানও তা এড়িয়ে অন্যরুট ধরেছিল। তাহলে মুম্বই-অণ্ডাল বিমান কেন তা করল না, দুর্যোগের তেমন পূর্বাভাস ওই উড়ানের পাইলটরা পাননি বলেই মন্ত্রক সূত্রের খবর। দুর্ঘটনার মুখে পড়া বিমানের যন্ত্র সেদিন ঠিকমতো কাজ করছিল কিনা, তা জানতে এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিং ব্যুরো সেই যন্ত্রাংশ নিয়ে গিয়েছে। তাঁদের রিপোর্টের অপেক্ষায় বিমান মন্ত্রক।