সংক্ষিপ্ত

ক্রমশ বর্ধিত সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে, অরুণাচল প্রদেশে যুদ্ধের মহড়া দিল ভারতীয় সেনা। শত্রু ট্যাঙ্ক ধ্বংস্ব করার এই মহড়ার ভিডিও গায়ে কাঁটা দেওয়ার মত।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (Line of Actual Control) বরাবর চোখ রাঙাচ্ছে চিন(China)। চিনা সেনাকে কড়া টক্কর দিতে তৈরি ভারতীয় সেনাও(Indian soldiers)। এই ক্রমশ বর্ধিত সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে, অরুণাচল প্রদেশে(Arunachal Pradesh) যুদ্ধের মহড়া(battle drill) দিল ভারতীয় সেনা। শত্রু ট্যাঙ্ক(enemy tank) ধ্বংস্ব করার এই মহড়ার ভিডিও গায়ে কাঁটা দেওয়ার মত। বৃহস্পতিবার এমন ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। 

এরকম একটি ভিডিওতে ভারতীয় সেনাকে অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব সেক্টরের রুক্ষ জলবায়ু পরিস্থিতিতে আক্রমণাত্মক প্রশিক্ষণ এবং কড়া অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছে। ভিডিওগুলির মধ্যে একটিতে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্ক-বিরোধী স্কোয়াডকে LAC- এর কাছাকাছি তাওয়াং সেক্টরে মহড়া দিতে দেখা যায়। শত্রু ট্যাঙ্কগুলি ধ্বংস করার জন্য এই যুদ্ধ চলে। এই মাসের শুরুতে তাওয়াং সেক্টরে চিনা সেনাদের সঙ্গে ভারতের সংঘর্ষ হয়েছিল বলে জানা গেছে।

নতুন ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ট্যাঙ্ক-বিরোধী স্কোয়াড একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার মহড়া দিচ্ছে ভারতীয় সেনা। শত্রু পক্ষের নকল ট্যাঙ্কগুলিকে একের পর এক উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চিনের পক্ষ থেকে যে কোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি।

অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) কাছে মক ড্রিল করা হয়েছিল। এই মহড়া সম্পর্কে ফাইভ মাউন্টেন ডিভিশনের জেনারেল-অফিসার-কমান্ডিং মেজর জেনারেল জুবিন মিনওয়ালা বলেন যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি রয়েছে ভারতীয় সেনা। কোনও বহিরাগত শক্তিকেই সেনা ভয় পায় না। অরুণাচল প্রদেশের ওই অঞ্চলে ভারতীয় সেনার জমি শক্ত করাই উদ্দেশ্য এই মহড়ার। 

পূর্ব লাদাখ সীমান্তে অচলাবস্থার পর চিনের আগ্রাসী মনোভাবের মোকাবিলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামগ্রিক শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যেই এম-77 77 আল্ট্রালাইট হুইটজার যুক্ত করা হয় সেনাবাহিনীতে। এই কাজে অত্যাধুনিক অস্ত্রের সম্ভার মজুত রাখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। অস্ত্র সম্ভার বাড়াতেও উদ্যোগী হয়েছে ভারতীয় বাহিনী। আর সেই দিকেই নজর রেখে নজরদারি চালানোর জন্য লম্বা পরিসরের উন্নত প্রযুক্তির ১০-১৫টি হেরন ইউএভি ও ২০-২৫টি মাল্টি কপ্টার সংগ্রহের ওপর জোর দিচ্ছে বলেও সেনা সূত্রে খবর।

জানা গিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী হেরন ড্রোন, এএলএইচ ধ্রুব হেলিকপ্টার এবং তার অস্ত্রযুক্ত সংস্করণ রুদ্র ব্যবহার করছে যা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) বরাবর চিনা বাহিনীর কার্যকলাপের উপর নজর রাখবে। পিপলস লিবারেশন আর্মির গতিবিধি ওপর নজর রাখার জন্য সেনা উচ্চমানের ক্যামেরা এবং সিনথেটিক অ্যাপারচার রাডার স্থাপন করেছে। 

পাকিস্তানের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ রেখার উত্তরে এলএসি ছাড়াও সিয়াচেন হিমবাহে মোতায়েন করা হয়েছে ইজরায়েলি স্পাইক অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল, দূরপাল্লার নজরদারি ক্যামেরা ও ছোট আকারের অ্যাম্বুলেন্স। বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পাশাপাশি চিনা সেনারও ওপরন কড়া নজরদারি চালাচ্ছে ভারত।

ভারতের সেনাবাহিনীর হাতে থাকা ইসরাইয়েলি হেরনকে আরও উন্নত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে অস্ত্রযুক্ত এমকিউ-৯বি স্কাই গার্ডিয়ান ড্রোন সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ড্রোনগুলির বিশেষত্ব হল এটি ৪০ হাজার ফুট উঁচুতে উড়তে পারে। ৪০ ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে সক্ষম হয়। অস্ত্র নিয়ে এগুলি উড়তে পারে। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই ড্রোনগুলি এয়ার টু সারফেস অর্থাৎ আকাশ থেকে মাটিতে লক্ষ্য করে মিসাইল বা লেজার গাইডেড বোমা ফেলতে পারে। প্রায় আড়াই টনেরও বেশি অস্ত্র বহন করতে সক্ষম হেরন ড্রোন। 

এছাড়াও রয়েছে রুদ্র মিস্ট্রাল এয়ার টু এয়ার মিসাইল। যা ৭০ মিমি রকেট, ২০ মিমি বন্দুক এবং এটিজিএম দিয়ে সজ্জিত। ভারতীয় সেনাবাহিনীকে 'স্যাপার পাঞ্চ' নামে আরেকটি টেসিং সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে যা শীতকালীন সুরক্ষা গ্লাভসের মতো পরা যেতে পারে এবং শত্রুকে একটি বৈদ্যুতিক তরঙ্গ দিয়ে একটি বা দুটি আঘাত দিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।