সংক্ষিপ্ত

যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন (Ukraine) দেশে ফিরতে মরিয়া ভারতীয় পড়ুয়ারা (Indian students)। কিন্তু ১৭ বছরের এক ছাত্রী যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশে ফিরতে চান না। কারণটা জানলে অবাক হবেন আপনিও।

রাশিয়ার (Russia) হামলা বিধ্বস্ত ইউক্রেন (Ukraine)। ইউক্রেনে রুশ বাহিনী আগ্রাসনের পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটা দিন। এখনও মিসাইল ও বোমের আওয়াজে ঘুমোতো যাচ্ছে ইউক্রেনবাসী। ঘুম ভাঙছে বারুদের গন্ধে। অনেকরই কাটছে বিনীদ্র রজনী। কিন্তি রাশিয়ার আক্রমণ কমেনি। রাশিয়ান সৈন্যরা এখন কিয়েভের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কবে স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি এই উত্তর সকলেরই অজানা। কিন্তু বোমার শব্দ, মৃত্যু, হাহাকারের মধ্যে এ যেন এক অন্য চিত্র। একদিকে যেখানে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে যেন তেন প্রকারে  দেশে ফিরতে চাইছে ভারতীয় পড়ুয়ারা (Indian students)। নাগরিকদের দেসে ফেরাতে সবরকম চেষ্টা করছে ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রক। ধাপে ধাপে ফেরানো হচ্ছে ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের। সেখানে এক ভারতীয় ছাত্রী দেশে ফিরতে অস্বীকার করেছেন। তিনি থেকে যেতে চান ইউক্রেনেই।

এখনও পর্যন্ত ইউনাইটেড নেশনসের  অনুমান রাশিয়ার হামলায় ১ লক্ষ ইউক্রেনের বাসিন্দা গৃহহীন হয়েছেন। ইউক্রেনের মধ্যে যারা এখন আশ্রয় খুঁজছেন তাদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় নাগরিক। বিদেশ মন্ত্রক (MEA) ইউক্রেনে আটকে পড়া ছাত্র সহ ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে 'অপারেশন গঙ্গা' শুরু করেছে। কিন্তু এই সব কিছুর মধ্যে প্রশ্ন উঠছে তাহলে ১৭ বছরের হরিয়াণার বাসিন্দা ওই ছাত্রী কেন দেশে ফিরতে চাইছেন না। আসল কারণটা হল মানবিকতা। মেডিকেল ছাত্রী তার ইউক্রেনীয় বাড়িওয়ালার স্ত্রী এবং তিন সন্তানের দেখাশোনা করতে যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনে থাকতে চান। আসলে তার বাড়িওয়ালা অর্থাৎ গৃহকর্তা দেশের জন্য সেনার কাজে যোগ দিয়েছেন। সই কারে ওই ব্যক্তির স্ক্রী  ও তিন  সন্তানকে একা ফেলে দেশে ফিরতে চাননা ওই ছাত্রী। কারণ বিপদের সময় তাকে আশ্রয় দিয়েছিল ওই পরিবার।

শনিবার একটি ফেসবুক পোস্টে, ছাত্রটির মায়ের একজন বন্ধু ১৭ বছর বয়সী একজনের সম্পর্কে এই গল্পটি শেয়ার করেছেন যে  স্নাতক ডিগ্রির জন্য ইউক্রেনে গিয়েছিল। আক্রমণের পরে কিয়েভে আটকা পড়ে, তিনি হোস্টেলে জায়গা খুঁজে পাননি এবং স্থানীয় পরিবারের কাছ থেকে একটি রুম ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বাড়িওয়ালা, একজন ইউক্রেনীয় নাগরিক, রাশিয়ান সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার স্ত্রী এবং তিন সন্তান, হরিয়ানার মেয়েটির সাথে একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিল।'আমার বন্ধু (ওই ছাত্রের মা) তাকে সেখান থেকে বের করে আনার জন্য দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল, কিন্তু মেয়েটি এই কঠিন সময়ে এই তিন শিশু এবং তাদের মাকে একা রেখে ফিরে আসতে চায় না।' ছাত্রীর মায়ের বন্ধু ফেসবুকে লিখেছেন,'মায়ের লাখো চেষ্টা সত্ত্বেও মেয়েটি যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে অনড়।' ফলে নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যেভাবে ওই ছাত্রী ওই পরিবারের পাশে থকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সত্যিই কুর্নিশ যোগ্য।