সংক্ষিপ্ত
জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন অভিযোগ কমিটি একটি কাউন্সিলিং সেশনের আয়োজন করেছে। যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষকরা তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে। সমালোচকরা বিষয়টির শব্দ চয়ন নিয়ে প্রবল আপত্তি জানিয়েছেন।
জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (JNU) অভ্যন্তরীন অভিযোগ কমিটি (ICC) একটি কাউন্সিলিং সেশনের আয়োজন করেছে। যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষকরা তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে। সমালোচকরা বিষয়টির শব্দ চয়ন নিয়ে প্রবল আপত্তি জানিয়েছেন। কাউন্সিলিং সংক্রান্ত একটি সার্কুলার ইতিমধ্যেই জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই সার্কুলারে বলা হয়েছে মেয়েদেরও জানা উচিৎ-- কী করে পুরুষ ও নারীর বন্ধুত্বের মধ্যে সীমারেখা চানতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই ভাষাতেই আপত্তি জানিয়েছেন একাধিক ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষকরা।
যৌন হয়রানি (sexual harassment) বিষয়ে কাউন্সিলিং সেশনের আমন্ত্রণ সংক্রান্ত বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে রয়েছে। সেখানে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৭ জানুয়ারি এই ইভেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে বলা হয়েছে তারা স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি আইইসিস, জেএনইউ একটি কাউন্সিলিং চালু করতে চায়। যা প্রতি মাসেই আয়োজন করা হবে। সমস্ত উচ্চাকাঙ্খী ছাত্র যারা যৌন হয়রানি বিষয়ে কী করতে হবে, আর কী করা যাবে না - তা জানতে চায় তাদের জন্য এই কাউন্সিলিং সেশনের আয়োজন করা হয়েছে।
তবে এই নোটিশেই আপত্তি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাঁদের প্রশ্ন এজাতীয় কাউন্সিলিং সেশনের প্রয়োজনীতা কী। পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ যৌন হয়রানিকে তুচ্ছ রূপান্তরিত করা ছাড়া আর এই অধিবেশনের আর কোনও গুরুত্ব নেই। এজাতীয় অধিবেশনের মাধ্যমে ছাত্রীদের ওপর যৌন হয়রানি চাপিয়ে দেওয়া হবে।
সমালোচকরা আরও বলেছেন, ছেলেরা সাধারণত বন্ধুত্বের আড্ডাবাজি ও যৌন হয়রানির মধ্যে খুব কম ফারাক রাখে। পাশাপাশি তাদের দাবি মেয়েরা অনুমান করতে পারে কীভাবে এইধরনের হয়রানি হয়। মেয়েরা এটাই জানে কীভাবে এজাতীয় হয়রানি রুখে দেওয়া যেতে পারে। যৌন হয়রানি ও বন্ধুত্বের মধ্যে ফারাক মেয়েরা খুব ভালো মত করতে পারে।
একটি ফেসবুক পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আয়েশা কিদওয়াই বলেছেন যে আমন্ত্রণটি স্পষ্ট করে দিয়েছে ছাত্রী বা মহিলারা আইসিসির কাছে যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে আসতে ভয় পায়। তারা নিজেরাই শাস্তির ভয় পায়। তিনি আরও বলেছেন, এটির মূল্যায়নে গুরুত্ব পেয়েছে ছেলেরা। সেখানে মহিলারা অনেকটাই কম গুরুত্ব পেয়েছে।
অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ একাধিক ছাত্র সংগঠন এই বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ ররেছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এজাতীয় সার্কুলারে ভিকটিমদের দোষারোপ করা মনোভাবই প্রকাশ পায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এজাতীয় আচরণ মহিদারে জন্য একটি অ-নিরাপদ স্থান হিসেবেই চিহ্নিত করবে বিশ্ববিদ্যালয়কে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই জাতীয় কাউন্সিলিং ছাত্র ও ছাত্রী ইভয়ের জন্যই আয়োজন করা হয়েছে।