সংক্ষিপ্ত

  • হর্স ট্রেডিংয়ের হার অনেক বেড়ে গিয়েছে
  • বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ করেন অশোক গেহলট
  • এর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বিধায়কদের ডেরা বদল
  • জয়পুর থেকে  জয়সলমেরের গোপন ডেরায় পাঠাল কংগ্রেস

বৃহস্পতিবারই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট অভিযোগ করেছিলেন বিধানসভা অধিবেশনের দিন স্থির হওয়ার পরেই হর্স ট্রেডিংয়ের হার  অনেক বেড়ে গেছে, আগের থেকে অনেক বেশি টাকার টোপ দেওয়া হচ্ছে বিধায়কদের। সেই কারণেই আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ফের দলীয় বিধায়কদের ডেরা বদল করা হল।

১‌৪ আগস্ট বিধানসভার অধিবেশনের কথা জানিয়েছেন রাজস্থানের রাজ্যপাল। আর সেই নিয়েই এবার নতুন করে ঘোড়া কেনাবেচার তত্ত্ব সামনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, ঘোড়া কেনাবেচার দর বর্তমানে আগের থেকে অনেক বেড়ে গিয়েছে। এখন অনেক বেশি দামে কেনাবেচা চলছে। আর এই বিষয়টি ঘটেছে ১৪ আগস্ট বিধানসভার অধিবেশনের দিন ঘোষণার পর থেকেই। 

আরও পড়ুন: ৭৩ বছরে প্রথম বার, পাক সীমান্ত লাগোয় দেশের শেষ গ্রাম এবারের ১৫ আগস্টে পাচ্ছে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ

আগামী, ১৭ আগস্ট মরুরাজ্যে আস্থাভোট হতে পারে বলেও সূত্রের খবর। তার আগে আরও কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় কংগ্রেস  শিবির। তাই তড়িঘড়ি গেহলট শিবিরের বিধায়কদের জয়সলমেরের একটি রিসর্টে সরিয়ে ফেলা হল।

শচীন পাইলট সহ প্রায় ২০ জন বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর পরই সরকারের সমর্থনে থাকা বিধায়কদের জয়পুরের একটি হোটেলে রেখেছিল। শুক্রবার তাঁদের ৫৫০ কিলোমিটার দূরে জয়সলমেরের গোপন ডেরায় পাঠান হল।

 

 

জানা গিয়েছে সব বিধায়কদেরই আগের থেকে তাদের পরিচয়পত্র নিজের সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর ম্যারিয়ট বা সূর্যগড় হোটেলে রাখা হতে পারে  কংগ্রেস বিধায়কদের।  কংগ্রেস বিধায়কদের জয়সলমেরে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৩টি চার্টার প্লেনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে খবর। 

আরও পড়ুন: লাদাখে এখনও রয়েছে লাল ফৌজের অস্তিত্ব, পঞ্চম দফার বৈঠকের আগে চিনের দাবি উড়িয়ে ফের সরব ভারত

কিন্তু কেন হঠাৎ জয়সেলমেরে শিবির বদল করছে কংগ্রেস। এর ব্যাখ্যাও অবশ্য পাওয়া গিয়েছে। আগামী ১৪ আগস্ট থেকে রাজস্থান বিধানসভার পঞ্চম অধিবেশন শুরু করার অনুমতি দিয়েছেন রাজ্যপাল।   গেহলটের  দাবি, বিধায়ক কেনাবেচার অনেকটা সময় পেয়েছে বিজেপি। এই সময়ের মধ্যে  বিধায়ক কিনতে ‘মু মাঙ্গি কিমত’ দিতে তৈরি গেরুয়া শিবির। রাজস্থানেপ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আগে একজন বিধায়ক দলবদল করলে প্রথমে ১০ কোটি ও পরে ১৫ কোটি টাকার টোপ দেওয়া হচ্ছিল। এবার সেটা আকাশ ছোঁয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে. বিধায়করা যা চাইবেন তাই দেওয়া হবে।”

ফলে বিধায়কদের আরও সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করথে গেহলট শিবির। তবে আরেক সূত্রের খবর, গেহলট বৃহস্পতিবার ফতোয়া জারি করেছেন, অধিবেশনের আগেও অবধি ক্যাম্প ছেড়ে যেতে পারবেন না বিধায়করা। তাঁর এই সিদ্ধান্তে খুব একটা খুশি নন কংগ্রেস বিধায়করা। তাই তাঁদের মনোরঞ্জন করতে স্থান বদল করা হচ্ছে বলেই সূত্রের খবর।  

এদিকে শতীন পাইলটকে বহিষ্কার করতেই অশোক গেহলটের এই চাল বলে মনে করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই শচীন পাইলট ও ১৮ জন কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে নোটিস পাঠিয়েছিলেন রাজস্থান বিধানসভার স্পিকার। স্পিকারের সেই নোটিসের বিরোধিতা করে রাজস্থান হাইকোর্টে যান রাজস্থানের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট ও ১৮ জন বিধায়ক। এরপরই সুপ্রিম কোর্টে যান অধ্যক্ষ। তাঁর বক্তব্য, বিধানসভার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না হাইকোর্ট। অবশ্য স্পিাকারের আর্জি খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে রাজস্থান হাইকোর্ট। সেই মতো হাইকোর্টেই এই মামলার শুনানি শুরু হয়। আর তাতে জয় হয় শচীন পাইলটের।

এরপরই শচীনকে দল থেকে সরানোর লক্ষ্যে বিধানসভা অধিবেশন ডাকার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন অশোক গেহলট। কারণ সেখানে আস্থা ভোট হলে হুইপের নির্দেশে পাইলট অনুগামীদের অশোক গেহলটকেই ভোট দিতে হবে। আর তা না করলে বা ভাটোভুটিতে অনুপস্থিত থাকলে দলবিরোধী কাজের দায়ে তাঁদের বহিষ্কার করার ক্ষমতা থাকবে স্পিকারের হাতে।