সংক্ষিপ্ত
চার দিনে দিল্লিতে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের উপর তিনবার গুলি চলেছে।
এই নিয়ে সোমবার উত্তাল হল সংসদ।
অনুরাগ ঠাকুর বলতে উঠতেই উঠল স্লোগান 'গোলি মারনা বন্ধ কারো'।
স্থগিত করে দিতে হল সভার কাজ।
গত চার দিনে দিল্লিতে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের উপর তিন-তিনটি গুলি চালনার ঘটনা ঘটেছে। স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে এদিন উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদ। সোমবার, বাজেট অধিবেশনে অর্থ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলতে উঠতেই সংসদে হইহট্টোগোল শুরু হয়ে যায়। তাঁর বক্তৃতার পুরো সময় ধরে বিরোধী সাংসদরা একযোগে 'গোলি মারনা বন্ধ কারো' অর্থাৎ, গুলি মারা বন্ধ করো বলে স্লোগান দিতে থাকেন। শীঘ্রই সভা স্থগিত করে দিতে হয়।
গত সপ্তাহে দিল্লিতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের এক প্রচারসভায় অনুরাগ ঠাকুর উসকানিমূলক বক্তৃতা দেন। তাঁর নেতৃত্বে উপস্থিত জনতা 'দেশ কে গদ্দারোঁ কো... গোলি মারো সালো কো' (দেশের বিশ্বাসঘাতকদের গুলি করো) বলে স্লোগান দেয়। এর জন্য পরে নির্বাচন কমিন দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে তাঁর উপর সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
তবে তাতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জামিয়া নগরে এবং শাহিনবাগে গুলি চলা আটকানো যায়নি। জামিয়ানগরের ঘটনায় অভিযুক্ত আটক কিশোর ঘটনার আগে ফেসবুকে উগ্র হিন্দুত্ববাদী স্লোগান পোস্ট করেছিল। আবার শাহিনবাগের বন্দুকবাজ ক্যামেরায় সামনেই বুখ ফুলিয়ে বলেছে, হিন্দু ছাড়া আর কারও ভারতে আর কোনও সম্প্রদায়ের কথা চলবে না।
শুধু অনুরাগ ঠাকুর একাই নন, এদিন সংসদে বিরোধীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে দিল্লির বিজেপি সাংসদ পরবেশ ভার্মা-কেও। তিনিও গত সপ্তাহে শাহিনবাগের প্রতিবাদীরা দিল্লির ঘরে ঘরে ঢুকে 'মেয়েদের ধর্ষণ করবে' বলে মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নির্বাচন কমিশন। এদিন তিনি রাষ্ট্রপতির ভাষণের প্রেক্ষিতে ধন্যবাদ জানানোর বক্তৃতা করতে যেতেই বিরোধী সদস্যরাও কক্ষত্যাগ করেন।
কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, ভারতের সাধারণ মানুষ সংবিধান রক্ষার জন্য প্রতিবাদ করছেন। তারা সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছেন, জাতীয় সঙ্গীত গাইছেন। আর তাদের উপরই গুলি চালানো হচ্ছে। ভারতের সাধারণ মানুষ-কে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। বিজেপি নেতাদের তিনি ভুয়ো হিন্দু বলেও আক্রমণে করেন। তাঁর মতে প্রকৃত হিন্দুদের আচরণ এরকম হতে পারে না।
সংসদে ওই তীব্র আক্রমণের মুখে পড়ে পরে অবশ্য অনুরাগ ঠাকুর বলেন, গণতন্ত্রে হিংসার কোনও জায়গা নেই। মানুষ ঠিকভাবে ভোট দেবেন এটাই কাম্য। বুলেটের থেকে যেন ব্যালটে মানুষের বেশি আস্থা থাকে, এটাই প্রয়োজন। ঘটনার দিন অবশ্য তাঁকে মাথার উপর দুহাত দিয়ে হাততালি বাজিয়ে মানুষকে 'গোলি মারো...' স্লোগান দিতে উৎসাহ দিতে দেখা গিয়োেছিল।