সংক্ষিপ্ত
রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণেই কি পঞ্জাবে কংগ্রেস ধরাসীয়া? এই প্রশ্নটা উঠছেই। কারণ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব গণনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। অন্যদিকে প্রাক্তন কংগ্রেসের নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং যিনি নতুন দল করে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হাত ধরে লড়াই করেছিলেন তিনিও পরাজিত হয়েছেন।
পঞ্জাব কংগ্রেসের (Punjab) শীর্ষ দুই নেতা নভজ্যোৎ সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu) ও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী চরণজিৎ সিং চন্নি (Charanjitjit Singh Channi) দুজনেই পিছিয়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোটগণনার প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল। পঞ্জাবে একক সংখ্যা গরিষ্ঠ দল হিসেবে ক্ষমতা দখল করছে আম আদমি পার্টি (AAP)। বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভাগবন্তমান। অন্যদিকে পরাজিত ঘোষণা হওয়ার আগেই হার স্বীকার করে নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা নভজ্যোৎ সিং সিধু।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণেই কি পঞ্জাবে কংগ্রেস ধরাসীয়া? এই প্রশ্নটা উঠছেই। কারণ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব গণনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। অন্যদিকে প্রাক্তন কংগ্রেসের নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং যিনি নতুন দল করে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হাত ধরে লড়াই করেছিলেন তিনিও পরাজিত হয়েছেন। যদিও ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্ণীতির অভিযোগ রয়েছে। যা মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সাদা জামায় লেগেছিল। নতুন পঞ্জাব লোকদলই সেই কালি দূর করতে পারেনি বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
যাইহোক, কংগ্রেসে থাকাকালীন প্রথম ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং-এর সঙ্গে নভজ্যোৎ সিং সিধুর বিবাদ সামনে আসে। যা শেষ করতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে। প্রথমে ক্যাপ্টেনকে পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয় রাহুল গান্ধীরা। কিন্তু তারপরই ক্যাপ্টেনের সঙ্গে সিধুর বিবাদ অব্যাহত থাকে। তারপর ক্যাপ্টেনকে রাতারাতি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়ে আসা হয় চরণজিৎ সিং চন্নিকে। পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের চন্নিকে দিয়ে কংগ্রেস ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে চেয়েছিল বলেও মনে করেছিলেন অনেকে। সেই সময় বিজেপি কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তের প্রবল সমালোচনা করেছিল। বলা হয়েছিল চন্নিকে মাত্র দুদিনের মুখ্যমন্ত্রী করে কংগ্রেস আদতে দলিত সম্প্রদায়কেই আপমান করছে।
কিন্তু সিধু প্রদেশ সভাপতি ও চন্নিকে মুখ্যমন্ত্রী করেও পাঞ্জাবের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব ধামাচাপা দিতে পারেননি সনিয়ে গান্ধী। সিধুর সঙ্গে নতুন করে সমস্যা তৈরি হয় চন্নির। যদিও অমরিন্দর সিং বিরোধী ক্যাম্পে সিধুর পাশেই দেখা গিয়েছিল চন্নিকে। কিন্তু চন্নি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই আন্দোলনে নামেন সিধু। নতুন করে তৈরি হয় সমস্যা। ততক্ষণে ভোট এসেগিয়েছিল দোরগোড়ায়।
ভোট প্রচারে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সকলেই গিয়েছিলেন পঞ্জাবে। সেখানে গান্ধী পরিবারেরও চোখে পড়েছিল সিধু-চন্নির বিবাদ। রাহুল গান্ধী সিধু ও চন্নিকে নিয়ে অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে গিয়ে পাশে বসিয়েও ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে পারেনি। তারপর কিছুটা বাধ্য হয়েই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে চন্নির নাম ঘোষণা করেন তিনি।
অন্যদিকে সিধু-চন্নির বিবাদের পাশাপাশি কংগ্রেসের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন G-23র নেতা মণীত তিওয়ারি। যিনি পঞ্জাবের সাংসদ। ভোটের প্রচারে তাঁর অনুপস্থিতি বা নিসস্ক্রীয়তার ফলও কংগ্রেস হাতে হাতে পেয়েছে ভোটযন্ত্রে। মণীষ তিওয়ারির সঙ্গে পঞ্জাবের বেশ কয়েক জন সাংসদও ভোটে পুরোপুরি হাত গুটিয়ে বসেছিলেন। অন্যভাবে বললে বলা ভালো কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব রাহুল-প্রিয়াঙ্কা বা সনিয়া গান্ধীও তেমনভাবে তাদের প্রতি কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করনি। পঞ্জাবের শীর্ষ নেতৃত্বকে দিল্লি কিছুটা উপেক্ষা করছিল বলেও ভুল হবে না।
সুনীল জাখরের বিতর্কিত মন্তব্যও কংগ্রেসের হারের একটি কারণ। কারণ সুনীল জাখর বলেছিলেন তিনি হিন্দু সেইজন্য তাঁরে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার নিযুক্ত করেনি কংগ্রেস। যদিও কংগ্রেস এই মন্তব্যের তেমন কোনও জোরাল প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তাতেই হিন্দু ভোটাররা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে কংগ্রেসের দিক থেকে।
কারণ কৃষক আন্দোলনে কংগ্রেসের সক্রিয়া ভূমিকা ছিল। যা ভোটের সময় কংগ্রেসের পক্ষে যাওয়ারই কথা। তবে গত নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রুতির অধিকাংশ পুরণ হয়নি বলে বিরোধী বিজেপি ও আপ প্রচার করেছিল। যা নিয়ে তেমন কোনও সদর্থক প্রচার করেনি কংগ্রেস। সবমিলিয়ে সীমান্তবর্তী এই রাজ্যে ধরায়াসী হতে হয়েছে কংগ্রেসকে।
ভারতে করোনাভাইরাসের চতুর্থ তরঙ্গ আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা কতটা, জানালেন বিশেষজ্ঞ
ভোটের ফল প্রকাশের পর কি পঞ্জাব কংগ্রেস ভাঙবে, ক্যাপ্টেনের বাড়ির নৈশভোজ উস্কে দিল সেই প্রশ্ন
১৩ দিয়ে ফাঁড়া কাটাতে মরিয়া চেষ্টা, উত্তরাখণ্ডে কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ কংগ্রেস