সংক্ষিপ্ত

ডক্টর মনমোহন বৈদ্য আরও বলেন যে, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে দেশজুড়ে এখন অমৃত মহোৎসব পালিত হচ্ছে। এর জন্য বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্নভাবে এই উৎসবকে পালন করছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র গুটিকতক কিছু মানুষের জন্য যে স্বাধীনতা এসেছে এমনটা নয়। 
 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়টি যে সহজ-সরল বিষয় নয়, তা ঠারে ঠারে বুঝিয়ে দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক বা আরএসএস। হায়দরাবাদে বসেছিল আরএসএস-এর তিনদিনের বৈঠক। সেখানে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা থেকে দেশের ঐক্য এবং সংঘব্ধতা-র মতো বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই আলোচনার শেষ দিনে একটি সাংবাদিক সম্মেলনেই উঠে আসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয়-এর ২০ মিনিট ধরে আটকে থাকার বিষয়টি। তখন আরএসএস-এর বিশিষ্ট নেতা ডক্টর মনমোহন বৈদ্য বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়াটা মোটেও দেশের পক্ষে মঙ্গলকর বিষয় নয়। 

পুরো সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য বদ্ধপরিকর সংঘ- 
---------------------------------------------------------------------------- 
এই সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডক্টর মনমোহন বৈদ্য জানান যে সংঘ বরাবরই সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য করেছে। এখনও করে চলেছে। এর জন্য জীবনের প্রতিটি স্তরে যাতে এক দেশ-এক সমাজের বোধ সকলের মধ্যে জেগে ওঠে তার জন্য কাজ করা হচ্ছে। সংঘের সেবকরা সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের কাছে এই ভাবধারাকে তুলে ধরতে নিরন্তর পরিশ্রম করে চলেছেন বলেও জানান ডক্টর মনমোহন বৈদ্য। এর জন্য ভারতমুখী শিক্ষার বিকাশের প্রয়োজনিয়তার কথাও তিনি তুলে ধরেন। ধর্মীয় তত্ত্ব-ভাবনা ও দর্শন যে সুমহান ভারবর্ষের একটা গরিমা ও বিশেষত্ব-এই কথাও এদিনে সাংবাদিকের সম্মেলনে তুলে ধরেন ডক্টর বৈদ্য। এরজন্য ভারতের ইতিহাসকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে বলেও জানান তিনি। তাঁর মতে ভারতবর্ষের সঠিক ইতিহাস কোনওদিনই কেউ তুলে ধরেনি। সেই কাজে আরও বেশি করে নিয়োজিত হতে হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে নিশ্চিতভাবেই এদিন উড়ে এসেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার ঘটনায় আরএসএস-এর প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি। এই প্রশ্নের উত্তরে ডক্টর বৈদ্য যেমন বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা দেশের পক্ষে মঙ্গলকর নয়, তেমনি এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি। 

সামনে আনা হবে দেশের ২৫০ জন অজানা বীরের কাহিনি-- 
-------------------------------------------------------------------------------- 
ডক্টর মনমোহন বৈদ্য আরও বলেন যে, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে দেশজুড়ে এখন অমৃত মহোৎসব পালিত হচ্ছে। এর জন্য বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্নভাবে এই উৎসবকে পালন করছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র গুটিকতক কিছু মানুষের জন্য যে স্বাধীনতা এসেছে এমনটা নয়। হাজারে হাজারে মানুষ স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন বলেই আজ দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই সব মানুষের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হচ্ছে ২৫০ জন এমন মানুষের কাহিনি যা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবে দেশপ্রেম নিয়ে। এদের জীবনী নিয়ে তৈরি হচ্ছে নাটক। যেখানে তুলে ধরা হচ্ছে দেশের জন্য এদের সংগ্রাম এবং স্বাধীনতার ইতিহাসকে। সংস্কার ভারতীর মাধ্যমে এই ২৫০ জন অজানা বীরের কাহিনিকে সামনে নিয়ে আসা হবে বলেও জানিয়েছেন আরএসএস-এর এই বিশিষ্ট নেতা। 

কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১০ লক্ষ মানুষের প্রশিক্ষণ আরএসএস-এর ছাতার তলায়
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------  
যেভাবে দেশজুড়ে কোভিড ১৯-এর তৃতীয় ঢেউ-এর সুনামি আছড়ে পড়েছে তাতে এক সঙ্কট তৈরি হওয়ার শঙ্কা দেখা গিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে যাতে দেশের প্রতিটি কোণায়, প্রতিটি ব্লকে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় তার জন্য ১০ লক্ষ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ডক্টর বৈদ্য। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, হায়দরাবাদে হওয়া এই তিন দিনের বৈঠকে আরএসএস-এর ছাতার তলায় থাকা ৩৬টি সংগঠন থেকে ২০১৬ জন প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন। তবে এই বৈঠক কোনওভাবেই কোনও সিদ্ধান্ত নির্ধারণের বৈঠক ছিল না বলেও জানিয়ে দেন ডক্টর মনমোহন বৈদ্য। 

ফি বছরে অন্তত ১ লক্ষ যুব শক্তি যোগ দিচ্ছে আরএসএস-এ
----------------------------------------------------------------------------------  
করোনা অতিমারির প্রথম ঢেউ-এর সময় আরএসএস সমস্ত দফতর-ই আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে আস্তে আস্তে অধিকাংশ দফতরই খোলা হয়েছে। ২০২০-র তুলনায় ২০২১-এর অক্টোবরে দেখা গিয়েছে দেশের সমস্ত আরএসএস সংগঠনের দফতরের মধ্যে ৯৩ শতাংশই খুলে গিয়েছে। এমনকী ৯৫ শতাংশ আরএসএস দফতর রোজ খোলা রাখা হচ্ছে। এমন তথ্য এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে ধরেন ডক্টর মনমোহন বৈদ্য। একইভাবে অধিকাংশ স্থানেই সাপ্তাহিক মিটিং-এর ৯৮ শতাংশ হচ্ছে।  মাসিক বৈঠকের ৯৭ শতাংশ কাজও হচ্ছে। এই অতিমারির মধ্যে সংঘের কাজ প্রতিনিয়িত বাড়ানো হয়েছে। সংঘের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে নবীন প্রজন্মের বহু তরুণ এই কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে বলেও জানান ডক্টর মনমোহন বৈদ্য। যুব সম্প্রদায় সরাসরি আরএসএস-এর শাখা অফিসে এসে যোগ দিচ্ছেন। কিন্তু, এর বাইরে দেখা গিয়েছে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত ১ থেকে ১.২৫ লক্ষ যুবা আরএসএস-এর সংগঠনে ফি বছর যোগ দিয়েছে। এই মুহূর্তে ৫৫ হাজার নিত্য শাখা রয়েছে আরএসএস-এর অধিনে। এরমধ্যে ৬০ শতাংশ শাখা ছাত্র এবং যুবাদের জন্য। বাকি ৪০ শতাংশ শাখা প্রাপ্ত বয়স্ক এবং ব্যবসায়িক শাখা। সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য দিয়েছেন আরএসএস-এর বিশিষ্ট নেতা ডক্টর মনমোহন বৈদ্য।