সংক্ষিপ্ত


তালিবানরা বদলাতে পারে না বলে এখনও বিশ্বাস করেন পাইলট দেবী শারন। কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের সময় তিনি খুব কাছ থেকেই দেখেছিলেন তালিবানদের নৃশংসতা। 
 

গত ২২ বছরে তালিবানদের কোনও পরিবর্তন হয়নি। আফগানিস্তানে তালিবানদের আগ্রাসন দেখে ১৯৯৯ সালের কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের কথাও মনে পড়ে যাচ্ছেন ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ক্যাপ্টেন দেবী শারনের। সেই সময় দেবী শারনের ৩৭ বছর বয়স ছিল। পাঁচ মুখোশধারী তালিবান তাঁর বিমানটি হাইজ্যাক করে। বিমানটি দিল্লি থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। বিমানটিকে অমৃতসর, লাহর, দুবাই ঘুরিয়ে শেষপর্যন্ত তালিবানদের প্রাণকেন্দ্র কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রায় পাঁচ দিন তাঁদের পনবন্দি করে রাখা হয়েছিল। শেষপর্যন্ত ভারত তিন জঙ্গি- মুস্তাক আহমেদ জারগার, আহমেগ ওরম সাইদ শেখ আর মাসুদ আহাজারকে মুক্তি দিলে তবেই তাঁরা ছাড়া পেয়েছিলেন। 

সেই সময় আফগানিস্তানের শাসনভার ছিল তালিবানদের হাতে। নাজিবুল্লাহের সরকারের পতন ঘটিয়ে গোটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিয়েছিল তারা। তিনি আরও বলেছেন, কান্দাহার বিমান বন্দরে তালিবান যোদ্ধারা গোটা বিমানটিকে ঘিরে রেখেছিল।  একরকম জোর করেই কান্দাহার বিমান বন্দরে বিমানটিকে নামানো হয়েছিল। চলতি বছর ১৫অগাস্ট তালিবানরা আফগানিস্তান দখল করে নেওয়ার পর সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলি আবারও ফিরে আসবে বলেও অনেকে মনে করছেন। প্রায় ২০ বছর পরে আবারও তালিবানদের হাতে দেশটির ক্ষমতা এসেছে। তালিবান নেতারাই বলছেন তাদের নতুন সরকার আগের মত নির্মম হবে না। কিন্তু অন্য কথা বলেছেন দেবী শারন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন 'যারা আমাদের বিমানকে ঘিরে রেখেছিল তাদের পালিশ করা হয়নি।' তিনি বলতে চেয়েছেন তালিবান যোদ্ধাদের তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি। 

তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, পুরনো আর নতুন তালিবানদের মধ্যে কোনও ফারাক রয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। এখন তারা একটু শিক্ষিত হয়েছে- এটাই পার্থক্য হতে পারে। তিনি আরও বলেছেন '২০ বছর আগে আমরা যে ধরনের আচরণের মুখোমুখি হয়েছিল তা থেকে আজও স্পষ্ট ভবিষ্যৎ কেমন হবে।' কান্দাহার ভারতের কাছে একটি খারাপ অতীত। সেই সময় তালিবানরা ভারতীয়দের কোনও কথাও শোনেনি। জঙ্গিদের মুক্তির দাবিতে অনড় ছিল। তিনি আরও বলেছেন সেই সময় তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন তালিবানদের দাবি মানা না হলে রেহাই পাওয়া সম্ভব নয়। 

দেবী শারন বলেছেন, তালিবানরা কাবুলের রাস্তায় রকেট লঞ্চার নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তা থেকেই স্পষ্ট তালিবানদের কোনও বদল হয়নি। যদিও ১৫ অগাস্ট কাবুল দখল করার পর থেকেই তালিবানরা জানিয়েছিল, তারা কোনও রক্তপাত চায় না। কাউকে জোর করা হবে না। সপ্তাহের শুরুতে সাংবাদিক সম্মেলন করেও সেকথা জানিয়েছে, কিন্তু তারপরেও ছবিটা তেমন বদলায়নি।