সংক্ষিপ্ত
- গোবর, গোমূত্র থেকে এবার ক্য়ানসারের ওষুধ তৈরি হবে
- তৈরি হবে ডায়াবেটিসের ওষুধও, চাইছে মোদী সরকার
- সেইসঙ্গে তৈরি হবে নিত্য়ব্য়বহার্য সামগ্রী
- টুথপেস্ট, শ্য়াম্পু, কনডিশনার, মশা মারার ধূপ
আগেও একবার উদ্য়োগ নেওয়া হয়েছিল। সেবারে ফসপ্রসূ হয়নি। এবার নতুন করে প্রচেষ্টা শুরু হল। গোবর আর গোমূত্র থেকে ক্য়ানসারের ওষুধ তৈরির জন্য় বিজ্ঞানীদের কাছে দরবার করল মোদী সরকার।
শুধু ক্য়ানসারের ওষুধই নয়। সেইসঙ্গে তৈরি হবে ডায়াবেটিসের ওষুধ। এখানেই শেষ নয়। গোবর ও গোমূত্র থেকে তৈরি হবে মধ্য়বিত্তের রোজকারের ব্য়বহার্য সামগ্রীও। তার মধ্য়ে রয়েছে দাঁতের মাজন বা টুথপেস্ট, শ্য়াম্পু, কন্ডিশনার, মশা তাড়ানোর ধূপ।
এই গবেষণা চলবে একটি নতুন আন্তর্মন্ত্রক কর্মসূচিতে বা ইন্টার মিনিস্টোরিয়াল ফান্ডিং প্রোগ্র্য়ামে। যার নাম দেওয়া হয়েছে, সায়েনটিফিক ইউটিলাইজেশন থ্রু রিসার্চ অগমেন্টেশন প্রাইম প্রোডাক্টস ফ্রম ইনডেজেনিয়ার কাউ ( SUTRA-PIC India)। বিভিন্ন মন্ত্রক ও বিভাগ এই কর্মসূচিতে সহায়তা করবে। এদের মধ্যে রয়েছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতর, বিজ্ঞান শিল্প গবেষণা বিভাগ, কাউন্সিল ফর সায়েনটিফিক ও ইনডাসট্রিয়াল রিসার্চ, মিনিস্ট্রি অব আয়ুর্বেদ, যোগা অ্যান্ড নেচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধা অ্যান্ড হোমিওপ্যাথি বা আয়ুশ, মিনিস্ট্রি অব রিনিউয়েবল এনার্জি, ইন্ডিয়ান কাউনসিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ আর ইন্ডিয়ান কাউনসিল অব মেডিকেল রিসার্চ।
গবেষকদের থেকে 'কল ফর প্রোপোজাল' আহ্বান করেছে সরকার। বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে অ্যাকাডেমিশিয়ান, এমনকি তৃণমূল স্তরের গবেষকরাও আবেদন জানাতে পারেন। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রায় একশো কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এই প্রকল্পের জন্য।
এই কর্মসূচির জন্য সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। যাতে লেখা রয়েছে-- যদিও বিভিন্ন বৈদ্য বা প্র্যাকটিশনাররা এই ধরনের জিনিস ব্যবহার করে আসছেন অনেকদিন ধরে, এগুলোর ওপর তেমন কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়নি বললেই চলে। এবার এই সবকিছু খুব বিশদে গবেষণা করা হবে। যেমন গোমূত্র ও গোবরে কী ধরনের রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা অ্যান্টিবায়োটিক বা ক্যানসারের ওষুধ হিসেবে কার্যকরী হতে পারে।
জানা গিয়েছে, শুধু ওষুধই নয়। সেইসঙ্গে সরকার গোমূত্র বা গোবর থেকে তৈরি দেশজ ব্যবহার্য সামগ্রী তৈরি করতে চাইছে। যার মধ্যে রয়েছে মশা তাড়ানোর ধূপ বা ওষুধ, ফ্লোর ক্লিনার, দাঁতের মাজন, মাথার তেল, শ্যাম্পু আর কন্ডিশনার।
প্রাথমিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, খুসকি তাড়ানোর পলিহারবাল হেয়ার কন্ডিশনার তৈরি হতে পারে গোমূত্র দিয়ে। তাছাড়া মশা তাড়াতে ঘুঁটের ব্য়বহার আবহমানকাল ধরে চলে আসছে। গ্রাম ভারতে গোবর দিয়ে মাটি নিকনোর রেওয়াজ রয়েছে বহুদিন ধরে। এবার এই সমস্তকিছুকেই বিজ্ঞানভিত্তিক করে তুলে প্য়াকেজিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
যদিও এইধরনের উদ্য়োগ এই প্রথম নয়। ২০১৭ সালে মোদী সরকার ১৯জন সদস্য়ের একটি প্য়ানেল তৈরি করেছিল। যার উদ্দেশ্য় ছিল, গোমূত্র-সহ গরুর থেকে পাওয়া জিনিসের ওপর বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা চালানো। কমপক্ষে ৫০টি গবেষণা-প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল সেই সময়ে। যার উদ্দেশ্য় ছিল, গোবর, গোমূত্র, দুধ, দই ও ঘিয়ের মতো গরু থেকে পাওয়া পঞ্চগব্য়ের বৈজ্ঞানিক গুণাগুণ নিয়ে গবেষণা করা। যদিও সেই সময়ে ওই প্রকল্পটি দিনের আলো দেখতে পারেনি।
এদিকে এই প্রকল্পের শুরুতেই উঠেছে কিছু প্রশ্ন। অনেকেই মনে করছেন সাধ্বী প্রজ্ঞার কথা। যিনি ক-দিন আগেই বলেছিলেন, গোমূত্র খেয়েই তাঁর ক্য়ানসার সেরেছে। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি ডিজিটাল ইন্ডিয়া এবার গোবর-গোমূত্র দিয়েই বিশ্বজয়ের পথে এগিয়ে চলেছে?