সংক্ষিপ্ত

হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে শ্রমিকরা পাশের রেললাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পণ্যবাহী ট্রেনের নিচে লুকিয়ে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, যে মালগাড়িতে ইঞ্জিন লাগানো ছিল না, সেটি চলতে শুরু করে

ওড়িশার বালাসোর ট্রেন দুর্ঘটনার ক্ষত এখনও সারেনি। তারওপর আবার এক দুর্ঘটনার ধাক্কা। বুধবার ওড়িশার জাজপুরের কেওনঝার রোড রেলওয়ে স্টেশনে একটি পণ্যবাহী ট্রেনের ধাক্কায় কমপক্ষে ছয় জন শ্রমিক নিহত এবং আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। প্রবল বৃষ্টি এড়াতে শ্রমিকরা দাঁড়িয়ে থাকা পণ্যবাহী ট্রেনের নিচে আশ্রয় নিলে হঠাৎ করেই পণ্যবাহী ট্রেনটি ইঞ্জিন ছাড়াই চলতে শুরু করে। শ্রমিকরা তার নিচ থেকে সরার কোনও সুযোগ পায়নি।

রেলওয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় জাজপুর কেওনঝার রোড রেলওয়ে স্টেশনের কাছে কিছু শ্রমিক রেললাইনে কাজ করছিলেন। তারপর হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে শ্রমিকরা পাশের রেললাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পণ্যবাহী ট্রেনের নিচে লুকিয়ে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, যে মালগাড়িতে ইঞ্জিন লাগানো ছিল না, সেটি চলতে শুরু করে, তাতে কিছু শ্রমিক চাপা পড়ে।

তিনি আরও জানান, এ দুর্ঘটনায় ছয় শ্রমিক নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন। আহতদের কটকের এসসিবি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একটি বিবৃতিতে, পূর্ব উপকূল রেলওয়ে বলেছে, "রেলওয়ের কাজের জন্য একটি ঠিকাদার দ্বারা নিযুক্ত চুক্তি শ্রমিকরা ঝড় ও বৃষ্টি থেকে সুরক্ষা পেতে জাজপুর কেওনঝার রোড (স্টেশন) এর কাছে একটি পার্ক করা বগির নীচে আশ্রয় নিয়েছিল।" এতে বলা হয়, ঝড়ের কারণে দাঁড়িয়ে থাকা কোচগুলো ইঞ্জিন ছাড়াই চলতে শুরু করলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বালাসোরে ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে

এই ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার বালাসোর জেলায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পাঁচ দিন পর, যেখানে ২৮৮ জন মারা গিয়েছিলেন, এবং ১০০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছিলেন। যাদের মধ্যে কয়েকজন এখনও হাসপাতালে ভর্তি। এই দুর্ঘটনা এতটাই ভয়ানক ছিল যে সারা দেশকে নাড়া দিয়েছিল। বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পাঁচ দিন পর, কার্যক্রম স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে যেখানে কিছু যাত্রী আসছে এবং সাধারণ মানুষও এই ছোট স্টেশনটি দেখতে আসছেন। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও মানুষ হাতে মোবাইল ক্যামেরা নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাচ্ছে বিধ্বস্ত ট্রেনের দেহাবশেষ দেখতে। রেলের আধিকারিকরা দুর্ঘটনার জায়গাটিকে সবুজ কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন, তবে বিধ্বস্ত কোচগুলি ট্র্যাকের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

শুক্রবার সন্ধ্যেবেলা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। শনিবার রাত পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলে। তারপর রাত থেকেই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে রেলকর্মীরা। ট্র্যাক থেকে দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া কামরা সরিয়ে ফেলা। ভেঙে যাওয়া রেললাইন নতুন করে বসানো, ওভারহেড তারের সংযোগ স্থাপন করার মত কাজগুলি শুরু হয়েছিল। রবিবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ডাউন লাইনে প্রথম একটি মালগাড়ি চালান হয়। তারও প্রায় একঘণ্টা পরে আরও একটি মালগাড়ি চালান হয়।