সংক্ষিপ্ত

৫৮ বছরের একনাথ শিন্ডে জীবন শুরু খরেন অটোচালক হিসেবে। কিন্তু এখন রাজনীতির মারপ্যাঁচের জেরে তাঁরই হাতে রয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারের স্টিয়ারিং। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে উদ্ধব ঠাকরের মুখ্যমন্ত্রিত্ব। 

মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে রীতিমত ঝড় তুলে দিয়েছিলেন একনাথ শিন্ডে। কিন্তু কে এই একনাথ শিন্ড? কীভাবেই বা তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি?  ৫৮ বছরের একনাথ শিন্ডে জীবন শুরু খরেন অটোচালক হিসেবে। কিন্তু এখন রাজনীতির মারপ্যাঁচের জেরে তাঁরই হাতে রয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারের স্টিয়ারিং। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে উদ্ধব ঠাকরের মুখ্যমন্ত্রিত্ব। অথচ উদ্ধব ঠাকরের বাবা বালাসাহেব ঠাকরেই ছিলেন একনাথ শিন্ডের রাজনৈতিক গুরু। 

রাজনীতির শুরু 
৫৮ বছরের একনাথ শিন্ডে মহারাষ্ট্রের সাতারার বাসিন্দা। ছাত্র রাজনীতিতেই হাত পাকিয়েছিলেন তিনি। আদর্শ ছিল বালাসাহেব ঠাকরে।  রাজনীতি করার জন্য তিনি সাতারা ছেড়ে চলে আসেন শিবসেনার মূল ঘাঁটি ঠানেতে। যদিও উদ্ধব ঠাকরের ঘুম ছুটিয়ে দিয়ে একনাথ শিন্ডে জানিয়েছেন তিনি এখনও বিজেপির সঙ্গে সরাসরি হাত মেলাননি। বালাসাহেবের আদর্শই তাঁর আদর্শ। তিনি বলেছেন বালাসাহেবের থেকে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি শেখা উচিৎ। তিনি আরও বলেছেন হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির সঙ্গে তিনি কখনই বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবেন না। 

ক্ষমতা দখলের লড়াই 
প্রথম বলেছিলেন ১০. তার ২১ আর গুজরাট থেকে গুয়াহাটি গিয়ে একনাথ শিন্ডে জানিয়েছেন তাঁর পক্ষে শিবসেনার ৪০ বিধয়কের সমর্থন রয়েছে।  দলের এক তৃতীয়াংশই তাঁর পক্ষে রয়েছে। যদিও উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তিনি। সূত্রের খবর কংগ্রেস আর এনসিপিকে ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর জন্য উদ্ধবকে প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। 

শিন্ডের উত্থান 
শিবসেনায় যোগদানের আগে একনাথ শিন্ডে একজন কিশোর হিসেবে জাভালি  থেকে এসেছিলেন। দীর্ঘদিন অটো চালিয়ে দিনগুজরান করতেন। দলের শ্রমিত ইউনিয়নও চালু করেন তিনি। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি একনাথ শিন্ডেকে। ১৯৯৭ সালে মিউনিসিপ্যল কর্পোরেশনের ভোটে লড়াই করেন ও জয় হাসিল করেন। তাঁর দুই সন্তান দীপেশ ও শুভদা। দুজনেরই মৃত্যু হয় জলে ডুবে। এই দুঃখের দিম কাটি ২০০১ সালে কর্পোরেশনের সেনা নেতা হন। তাঁকে থানেতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০০৪ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জয় পান তিনি। ২০০৫ সালে প্রথমবার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। কিন্তু তাতেই তিনি সফল হয়। তারপর থেকেই শিবসেনা অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েন শিন্ডের ওপর। ২০০৬ সালে বালাসাহেব ঠাকরের ভাইপো রাজ ঠাকরে দল ছাড়লে শিন্ডের দাপট বেড়ে যায়। কংগ্রেস সেই সময় মহারাষ্ট্রের ক্ষমতায় ছিল। কংগ্রেসও তাঁকে টার্গেট করে ছিল বলে শোনা যায়। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে যেতে তাঁর আপত্তি ছিল। যাইহোক গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই শিন্ডে মাহারাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছিলেন। শিন্ডে মহারাষ্ট্রের আর্বান ডেভলপমেন্ট মন্ত্রী। ক্ষমতার অলিন্দে থেকেই তিনি বিজেপি সেনা দেবেন্দ্র ফড়নবীশের সঙ্গে ঘনিষ্টতা বাড়িয়েছেন বলে সূত্রের খবর। 

শিন্ডের উচ্চাকাঙ্খা
উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি শীর্ষ পদ পাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। শিন্ডেকে গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।উদ্ধব ঠাকরের কার্যপ্রণালী এবং মিত্র জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির আধিপত্যের কারণে শিন্ডে দলের প্রধান সমস্যা সমাধানকারী হিসাবে আবির্ভূত হন। তিনি চব্বিশ ঘন্টা কাজ করার ক্ষমতা রাখেন এবং এমনকি তার শিক্ষা পুনরায় শুরু করতে এবং যশবন্তরাও চ্যাবন মহারাষ্ট্র ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে বিএ সম্পন্ন করতে সক্ষম হন। শিন্ডে এমনকি মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য নাম নথিভুক্ত করেছিলেন।

করোনাকালে কাজ-
করোনাকালে শিন্ডে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। অসুস্থদের জন্য হাসপাতাল আর পথ্যের ব্যবস্থা করার জন্য দিনরাত ধরে পরিশ্রম করেছিলেন।

শিন্ডের প্রভাব 
শিন্ডের প্রভাব কমানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল বাকি শিবসেনা কর্মীরা। কিন্তু তাদের কথায় গুরুত্ব দেননি উদ্ধব ঠাকরে। তবে শিন্ডের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই যোগাযোগ রেছিলেন গুজরাট বিজেপির সদস্য ও মন্ত্রীক কিশোর পাটিল। তিনি মারাঠি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। আর শিন্ডে দলে কোনঠাসা হতেই বিজেপির কাছাকাছি চলে যায় বলেও মনে করছে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা।