সংক্ষিপ্ত

সন্তান হারানোর থেকে বড় শোকের ঘটনা আর হয় না।

কিন্তু এবার সন্তানহারা বাবা-মা'দেয় কষ্ট কিছুটা লাঘব হতে পারে।

সম্প্রতি ৩ বছর আগে মৃতা মেয়ের সঙ্গে কথা বললেন তাঁর মা।

প্রযুক্তির হাত ধরে এই সুযোগ করে দিল দক্ষিণ কোরিয়ার এক টিভি চ্যানেল।

 

বিজ্ঞানের চমৎকার ছাড়া একে আর কীই বা বলা যায়। পৃথিবীতে যে কোনও মৃত্যুই বেদনার। কিন্তু সন্তান হারা বাবা-মা'এর থেকে যে শোক, তার সঙ্গে বোধহয় আর কিছুর তুলনা হয় না। এবার সেই যন্ত্রনা কিছুটা হলেও লাঘব হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির হাত ধরে। সম্প্রতি, জন্মদিনের দিন মেয়ের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেলেন তাঁর মা। মেয়ের মৃত হয়েছিল তিন বছর আগেই।

ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। তিন বছর আগে রক্তের এক দূরারোগ্য ব্যধিতে মেয়েকে নাইয়ন-কে হারিয়েছিলেন তাঁর মা জং জি-সুং। সেই সময় নাইয়ন-এর বয়স ছিল মাত্র ৭ বছর। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রথম সারির টিভি চ্যানেল সম্প্রতি মা-মেয়ের কথা বলার সুযোগ করে দেয়, 'ভার্চুয়াল রিয়েলিটি' প্রযুক্তির মাধ্যমে।  জং তাঁর মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন, আর তার স্বামী এবং আরও তিন সন্তান আরেকটি মনিটরের সামনে বলে তাঁদের এই ভার্চুয়াল কথোপকথন দেখেন।

চ্যানেলের সূত্রে জানানো হয়েছে, এই 'ভিআর সিমুলেশন'টির তৈরি করতে তাদের আট মাস সময় সেগেছে। এক শিশু অভিনেতার গতিবিধি রেকর্ড করে তারা। পরে নাইয়ন-এর ভার্চুয়াল মডেল তৈরি করে তাতে সেই গতিবিধি ব্যবহার করা হয়। একই সঙ্গে তার আগে রেকর্ড করা গলার স্বর থেকে নতুন করে গলার স্বর তৈরি করে ওই মেডেলে আরোপ করা হয়। এখানেই থামেনি ওই চ্যানেল। নাইয়ন বেঁচে থাকতে তাকে নিয়ে তার মা প্রায়শই একটি পার্কে যেতেন। চ্যানেল থেকে ওই ভার্চুয়াল পার্কটির নকশাও তৈরি করা হয়েছে।

এই অভিনব ঘটনার একটি ভিডিও চ্যানেলের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে প্রথমেই নাইয়ন তার মায়ের কাছে এগিয়ে এসে বলছে, 'মা এতদিন কোথায় ছিলে? আমার কথা তোমার মনে পড়ে?' সেই যে জং জি-সুং-এর চোখ দিয়ে অশ্রুধারা পড়া শুরু হয়েছিল, গোটা সাক্ষাতকারে তা আর থামেনি। কেঁদে ফেলেন স্টুডিও-র কর্মীরাও। জং তাঁকে জন্মদিনের একটি গান গেয়ে শোনান, জন্মদিনেপর বিশেষ খাবার হিসেবে কোরিয়ার ঐতিহ্যসালী সামুগ্রিক ঘাসের সুপ ও মধু দিয়ে তৈরি একটি কেক-ও উপহার দেন।

এতদিন পর মৃত মেয়ের সঙ্গে ফের সাক্ষাতে জং-এর একটাই আফশোষ থেকে গিয়েছে। বারবারই তিনি মেয়েকে ছুঁতে চেয়েছেন, কিন্তু  ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তি এখনও সেই সুযোগ করে দিতে পারেনি।