সংক্ষিপ্ত
পশ্চিমবঙ্গে একুশের নির্বাচনে এবার প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে জড়িয়ে আছে স্লোগান এবং সংগীত। একুশে বিপুল ভোটে তৃণমূলের জয়ের পরেও নিছকই আড্ডার মেজাজে মানুষের মুখে ফেরে শাসক এবং বিরোধী দলের গানগুলিও।
পশ্চিমবঙ্গে একুশের নির্বাচনে (WB Assembly Election) এবার প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে জড়িয়ে আছে স্লোগান এবং সংগীত (Slogan and Sangeet)। বিগত নির্বাচনগুলিতেও বাংলার পাঁচিলগুলি রঙিন হয়েছিল। আকাশ ঢেকেছিল দলীয় পতাকায়। তবে একুশের নির্বাচনে জেতা-হারার উপরে গিয়ে বাজিমাত করেছে রাজনৈতিক দলের প্রচারের গানগুলি। তাই একুশের নির্বাচন, উপনির্বাচন, কলকাতা পুরভোটের পরেও কাউকে নিশানা করে নয়, বরং নিছকই আড্ডার মেজাজে মানুষের মুখে ফেরে শাসক এবং বিরোধী দলের গানগুলিও। কারণ কম বেশি প্রতিটা দলের গানই হিট।
একুশের ভাগ্য নির্ধারণের আগে তখনই নিছকই ছাত্র আন্দোলনের স্টাইলে দেবাংশ ভট্টাচার্য লিখে ফেলেছেন , খেলা হবে স্লোগান । তখনও কেউ বোধয় জানত না, এই খেলা হবে গানই একদিন তৃণমূলের অন্যতম স্লোগান হবে। একুশের জেলায় জেলায় এই গান ডিজে মিক্সিং করে শোনানো হয়েছে। মানুষের ফোনের রিংটোনে পর্যন্ত ছড়িয়েছে এই গান। এখানেই শেষ নয়, ১৬ অগাস্ট খেলা হবে দিবস বলে ঘোষণা করেছে মমতার সরকার। যদিও এর অন্য কারণ এবং ঘটনা জড়িয়ে থাকলেও, ট্যাগ লাইনটা নেওয়া হয়েছে সেই তৃণমূলের দেবাংশুর স্লোগান থেকেই। এরপর ভোটের দোরগড়ায় তৃণমূলের হেভিওয়েট মদনেরও সৃষ্টিশীলতা দেখে গোটা বাংলা।
মদন মিত্রও গেয়েছেন দলের প্রচারে কুমড়ো সঙ্গীত।গানের ভিতরে মদন মিত্র বলছেন,' কমুড়ো ফুলো ফুলো-অনেক টাকায় বিক্রি হল। সঙ্গে কিছু ঢেঁড়শ-মুলো, জিতবি বলে ভাবলি। 'ওহ লাভলি' ', বলে বিচিত্র শব্দে সহাস্য়ে গান ধরেছেন মদন মিত্র। স্টুডিওতে গিয়ে দিব্য়ি গান রেকর্ড করেছেন। এখানেই শেষ নয় বাংলার এক বাঁশি শিল্পী এই গানে যন্ত্রসঙ্গীতে রয়েছেন। মূলত কাকদ্বীপের বাসিন্দা তিনি। উল্টোডাঙা স্টেশনের কাছে ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন গুজরান করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে সটান মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের মা-মাটি-মানুষের সরকারের সংষ্কৃতি কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। এরপর ওই গান এখন ভাইরাল। মদন মিত্র সাফ জানিয়েছেন পচা কুমড়ো, ঢ্য়াড়শ দিয়ে যে ঘ্যাট রান্না করছে বিজেপি, তা মানুষ মুখেও নেবে না। মদন মিত্রের এই গানটি খুবই লাইমলাইট টানে।
ভোটের আগে অভিনব প্রচারে ময়দানে নেমেছেন আরও অনেকেই। বিজেপির কৈলাস বিজয়বর্গীয় যেমন একটি সভায় সম্প্রতি মহম্মদ রফি সাহেবের গান গেয়েছেন। ভোটের আগে সবাই সবাইকে দিতে মেতেছেন প্য়ারোডিতে। বিজেপির হয়ে 'এই তৃণমূল আর নয়, আর নয়', বলে গান ধরেন তৎকালীন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। পাশাপাশি বিজেপির-'বেলা চাও' কম জনপ্রিয় হয়নি। মূলত এটি ইতালির গণসঙ্গীতের সুরে তৈরি হয়েছে নতুন এই গানটি। নাম দেওয়া হয়, 'পিসি যাও।' নির্বাচনের আগে সকল দলই সোশ্যাল মিডিয়াকে লক্ষ্য করে প্রচারে নেমেছে। সঙ্গে জুড়েছে পিসি যাও গানের ভিডিও। অপরদিকে, 'টুম্পা তোকে নিয়ে ব্রিগেট যাব, চেনা ফ্ল্য়াগে মাঠ সাজাবো', ভোটের আগে বিগ্রেডের প্রচারে চেনা গানের শব্দ অদলবদল করে ভাইরাল হয় বামেদের প্য়ারোডি। গানটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সহ বামেদের হেভিওয়েটরা।