সংক্ষিপ্ত

ভোট হলেই কি হাইকোর্ট, আজ্ঞে হ্যাঁ, অন্তত একুশ-বাইশ বলছে তাই। ভোট ঘোষণার পর কিছু না কিছু ইস্যু নিয়ে আদালতে যাবেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।  

ভোট হলেই কি হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আজ্ঞে হ্যাঁ, অন্তত একুশ-বাইশ বলছে তাই। ভোট ঘোষণার পর কিছু না কিছু ইস্যু নিয়ে আদালতে যাবেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কখনই তৃণমূল আবার কখনও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি (BJP)। তবে ভোটের ইস্যুতে বাকি বিরোধীদলের কর্মীরাও যে আদালতে সম্মুখীন হয়নি, এমনটা নয়। তারাও হাইকোর্টে গিয়েছেন, কিন্তু প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। অদ্ভুতভাবে সেই ধারাই বজায় থাকল এবার রাজ্য বিধানসভা, উপনির্বাচন, কলকাতা পুরভোটের পর এবার বকেয়া পুরভোটেও (Municipal ELection)। 

তবে কলকাতা হাইকোর্টে  ভোটের আগে প্রতিবার বিভিন্ন কারণে পা রেখেছে শাসক দল কিংবা বিরোধীরা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের তারিখ ৮ দফায় ভোট ঘোষণা করতেই কমিশনের উপর বেজায় চটে তৃণমূল। একেই মমতার  একুশের বিধানসভা ভোট ছিল ভাগ্য নির্ধারনের বছর। তার উপর যদি আট দফায় ভোট হয়, তাহলে কম ভোট পাওয়ার  আশঙ্কায় উদ্বেগ বাড়ে ঘাসফুল শিবিরে। কারণ যুক্তিটা হল একই দিনে ভোট হলে সবজায়গায় একইভাবে ভোট পড়বে। আলাদা দিনে হলে প্রতিটা ভোটের দিনের প্রভাব পরের ভোটে পড়বে। তাহলে এখানে একটা প্রশ্ন উঠছে, সেই যুক্তিতে কেনই বা তখন চটল তৃণমূল। আবার যখন উপনির্বাচন দুই দফায় এবং কলকাতা পুরভোটের সময় দীর্ঘ ব্যবধান নিয়ে মুড ভাল তৃণমূলের। কারণ একটাই একুশের বিধানসভা ভোটের আগে এবং পরে ছবিটাই যে পুরো বদলে গিয়েছে।বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে অনিশ্চয়তায় ভুগছিল তৃণমূল, সেই ছবিটাই এখন ঘুরে গিয়েছে।

একুশের কলকাতা পুরভোট হয়েছিল এক রবিবারে। এদিকে তার আগের দিনও আদালতে গিয়েছে রাজ্য বিজেপি। বিষয়টা কিন্তু কোভিড ছিল না। কারণ তখনও আধিক্য দেখা যায়নি। বিষয়টা ছিল সেবার কেন্দ্রীয় বাহিনী। কারণ রাজ্য নির্বাচন কমিশন রাজ্য পুলিশের উপরে ভরসা দিতেই, তাতেই সন্তুষ্ট হয়েছিল হাইকোর্ট। বলেছিল রাজ্য পুলিশই সক্রিয় নিরাপত্তা দেবে। এই রায় পছন্দ না হতেই চ্যালেঞ্জ জানায় সুকান্ত, শুভেন্দুরা। কিন্তু শেষ অবধি কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াই ভোট হয়। আর এই ভোট হয়ে যাওয়ার পরেই এবার কলকাতা হাইকোর্টে পা রাখে অপর এক বিরোধী দল। তার নাম কংগ্রেস। পুরভোট চলাকালীন  নগ্ন করে রাস্তায় ফেলে এক কংগ্রেস প্রার্থীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। অভিয়োগের তীর যায় তৃণমূলের দিকে। ভিডিও ভাইরাল হয়। তৃণমূলের তরফেও অবশ্য জাাননো হয় যে, এহেন ঘৃণ্য কাজ দলের কেউ করে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইস্যু ইভিএম জালিয়াতিরও । দাবি ওঠে পুনরায় নির্বাচনের। অর্থাৎ ভোটের আগে এবং পরে আদালত চত্ত্বরে বারবারই ঘুরেছে রাজনৈতিক দলেরা। যদিও একুশের ভোটের আগে সেই দ্বারস্থ হওয়াটা কিছুও হলেও ছিল দিল্লির কেন্দ্রীয় কমিশনের দফতরে। তবে এতদিনে পট পদলেছে। 'রাজ্য কমিশন তৃণমূলের হয়ে কাজ করে', ইতিমধ্যেই তোপ দেগেছে বিজেপি।

এবার রইল বাকি বকেয়া ভোট। এখানেও কলকাতা হাইকোর্ট। তবে আগের প্রেক্ষাপট এবার ঘুরে গিয়ে কবাডি খেলছে কোভিড। কমিশন  ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, ২২ জানুয়ারি শিলিগুড়ি, চন্দননগর, আসানসোল এবং বিধাননগরে পৌর নির্বাচন। আর এবার কোভিড পরিস্থিতিতে কীভাবে ভোট সম্ভব, তাই পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া হোক এনিয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা উঠেছে। ভোট পিছনোর আবদন পড়ার পর মামলা করার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট। বুধবারের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী এই মুহূর্তে রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ২২ জন। সুতরাং সামনের পুরভোট নিয়ে ফের বাড়ল জটিলতা। কলকাতা হাইকোর্টের দিকে তাঁকিয়ে ফের সব রাজনৈতিক দল।