সংক্ষিপ্ত

  • দার্জিলিং-এর কাছে ছবির মতো সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম ছোটা মাঙ্গওয়া.
  • দার্জিলিং থেকে ৩৫ কিমি দূরে এই ছোটা মাঙ্গওয়া 
  • এখানে দুধারের প্রকৃতি অবারিত ও উন্মুক্ত
  • একদিকে কাঞ্চনজংঘা আর অন্যদিকে নাথুলা রেঞ্জ

দার্জিলিং এর খুব কাছে ছবির মতো সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম ছোটা মাঙ্গওয়া। কালিম্পং, দার্জিলিং, সিকিমের পাহাড় পরিবেষ্টিত এই অরগ্যানিক গ্রামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এর অবস্থান। দার্জিলিং থেকে ৩৫ কিমি দূরে  অথচ উপচে পড়া পর্যটকরের ভিড় থেকেএকেবারে বিপরীতমুখী অবস্থান ছোটা মাঙ্গওয়ার। শান্ত, নির্জন পরিবেশ যারা পছন্দ করেন তাদের ভালো লাগবে এই গ্রাম। গাছে ঘেরা পাহাড়ি পথে, গ্রামের মধ্য দিয়ে, কমলালেবুর বাগান পেরিয়ে ট্রেক করেও যাওয়া যায় ছোটা মাঙ্গওয়া। তিনচুলে থেকেও ছোটা মাঙ্গওয়া যাওয়া যায়, মাত্র এক ঘন্টার পথ। অনায়াসে ট্রেক করে পাহাড়ি রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে চলে আসতে পারেন তিনচুলে থেকে।  পথের সৌন্দর্য নিয়ে যতই বলা হোক তা কম হবে। 


ছোটা মাঙ্গওয়ায়‘দার্জিলিং ব্লসাম ইকোট্যুরিসম কমপ্লেক্স’-এ থাকার অভিজ্ঞতা  এবং এর অবস্থান, পরিবেশ, ঘিরে থাকা উদার প্রকৃতি এক কথায় বলতে হলে বলতে হয় অনবদ্য। সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চলে রিসর্টগুলি তৈরি হয় পাহাড়ের ঢালে কিংবা উপত্যকায় কিন্তু এই রিসর্টের অবস্থান একটি গিরিশিখার ওপর, যার ফলে দুধারের প্রকৃতি অবারিত ও উন্মুক্ত।  একদিকে কাঞ্চনজংঘা আর অন্যদিকে নাথুলা রেঞ্জ। সন্ধেবেলা চারিধারের পাহাড়ের গায়ে যেন জোনাকি জ্বলে ওঠে। ছোটো ছোটো বাড়িগুলো আলোর মালার মতো ঘিরে থাকে।  এ দৃশ্য চাক্ষুষ করলে দীপাবলির কথা মনে পড়বেই।  আর পরের দিন সকালে নির্মেঘ আকাশের গায়ে হেলান দেওয়া বরফঢাকা পাহাড়ের ওপর সোনালি আলোর পরশ মায়াময় করে তুলবে চরাচর।
হাতে সময় থাকলে ছোটা মাঙ্গওয়া হেঁটে হেঁটে ঘুরে দেখতে পারেন। গ্রামের ভেতর অরগ্যানিক আপেল বাগান, সবজি ক্ষেত, পাশেই ফুটে আছে লিলি ফুল। পাখি, প্রজাপতি উজ্জ্বল রঙের ফুল মিলেমিশে সাজিয়ে তুলেছে গ্রামখানি।  এখানে এসে পাহাড়ি বাঁক পেরিয়ে বুনো ঘাস পথে হাঁটার আনন্দ একেবারে আলাদা। আবার অল্প দূরেই তাকলিং গ্রামে গিয়ে কমলালেবুর রস তৈরির কারখানা দেখে আসতে পারেন। তাকদায় যদি আগে গিয়ে না থাকেন তাহলে ওখানকার রঙ্গলি রঙ্গলিয়ত চা বাগান অপরূপ সুন্দর, আর আছে অর্কিডের বাগান। অনেক রকমের অচেনা, অজেনা অর্কিড দেখে বিস্মিত হতে হয়। আর যদি অলস যাপন ছাড়াও কিছু করতে চান তাহলে যেতে হবে তিস্তা ভ্যালিতে। ওখানে রিভার র‍্যাফটিং করার মজা অতুলনীয়। আর বড়া মাঙ্গওয়াও ঘুরে আসতে পারেন যদি ইচ্ছে হয়। সে ও বড়ো সুন্দর জায়গা। গাড়িতে আধ ঘন্টা সময় লাগবে  বড়া মাঙ্গওয়া যেতে।

কীভাবে যাবেন- নিউ জলপাইগুড়ি, বাগডোগরা, সিকিম, কালিম্পং কিংবা ডুয়ার্স থেকে ছোটা মাঙ্গওয়া পৌঁছতে হলে তিস্তা বাজার হয়ে আসতে হবে। আর কার্সিয়ং, মিরিক ও দার্জিলিং ঘুরে ছোটা মাঙ্গওয়া যদি কেউ আসতে চান তাঁকে জোড়বাংলার পথ ধরতে হবে।

কখন যাবেন- ছোটা মাঙ্গওয়া সারা বছরই যাওয়া যায় তবে কমলালেবুর সময়ে গেলে বাড়তি আনন্দ।