খেজুর খেয়ে এবার থেকে আর বীজটা ফেলে দেবেন না, এভাবে ব্যবহার করুন- রইল উপকারিতাও
খেজুর আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবে উপকারী। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই খেজুরের শাঁস খেয়ে বীজ ফেলে দিই। কিন্তু জানেন কি, এই বীজও আমাদের নানাভাবে কাজে লাগতে পারে?
- FB
- TW
- Linkdin
খেজুর
খেজুর মিষ্টি, সুস্বাদু। শুধু তাই নয়, এটি খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক শর্করা থাকে। ওজন কমানো থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পর্যন্ত এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। অনেকেই খেজুর শুকনো অবস্থায় খেতে পছন্দ করেন।
তবে অনেকেই খেজুর খেয়ে ভেতরের বীজ ফেলে দেন। কারণ, এগুলোর কোনো কাজে লাগে না বলে। কিন্তু খেজুরের বীজও আমাদের নানাভাবে কাজে লাগতে পারে। কীভাবে?
ফেস প্যাক তৈরি করুন
ফেস প্যাক তৈরি করুন: খেজুরের বীজ ফেস প্যাক হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এর জন্য খেজুরের বীজ গুঁড়ো করে তাতে মুলতানি মাটি, গোলাপ জল, মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগান।
বডি স্ক্রাব:
খেজুরের বীজ বডি স্ক্রাব হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এই বডি স্ক্রাবের ফলে আপনার শরীরের মৃত কোষ অনেকটাই দূর হবে। এর জন্য খেজুরের বীজ গুঁড়ো করে তাতে টক দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি শরীরে লাগিয়ে স্ক্রাব করুন।
পশুখাদ্য হিসেবে
পশুখাদ্য হিসেবে: খেজুরের বীজ ভেজে পশুখাদ্য হিসেবেও দেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বীজ গরু, মহিষ, ঘোড়ার খাদ্য হিসেবে কাজে লাগে। এগুলো খেলে এই প্রাণীদের বৃদ্ধি ভালো হয়।
বীজের উপকারিতা
খেজুরের বীজ আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করতে পারে। এই বীজে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে। অর্থাৎ এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
এটি ব্যবহার করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখতেও এটি খুবই কার্যকর।
বীজ দিয়ে কফি
: খেজুরের বীজ দিয়ে কফিও তৈরি করে খাওয়া যায় জানেন? এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী। কারণ, এই বীজে ক্যাফেইন থাকে না। এতে তৈরি কফি পান করলে শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমে বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন।
এই কফি তৈরি করতে খেজুরের বীজ শুকিয়ে নিন। এবার এটি মিহি করে গুঁড়ো করে নিন। এবার এটি জলে ভিজিয়ে আবার শুকিয়ে নিন। এবার খেজুরের সিরাপ, দারুচিনি, এলাচ গুঁড়ো, গরম দুধ দিয়ে কফি তৈরি করে নিন।
খেজুরের বীজের স্বাস্থ্য উপকারিতা
খেজুরের বীজের গুঁড়ো অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা বহন করে। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি আমাদের হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এটি ত্বককেও সুরক্ষিত রাখে।
খেজুরের বীজের গুঁড়োতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি কোষগুলিকে জারণ ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি শরীরের প্রদাহ কমাতেও এটি সাহায্য করে। এটি ব্যবহার করে আমরা অনেক দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে পারি।
খেজুরের বীজের স্বাস্থ্য উপকারিতা
খেজুরের বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এটি আমাদের হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। এই বীজের গুঁড়ো অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে খুবই কার্যকর।
খেজুরের বীজের গুঁড়োতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অর্থাৎ এটি হৃদপিণ্ডের জন্যও উপকারী। শুধু তাই নয়, এই গুঁড়োতে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন, প্রাকৃতিক শর্করা। তাছাড়া এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। এটি আপনাকে সারাদিন কর্মক্ষম রাখে।
সার:
খেজুরের বীজ আপনি গাছের সার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য খেজুরের বীজ ফাটিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিন। এটি গাছে সার হিসেবে দিলে গাছের পুষ্টির জোগান ভালো হয়।
ফেনোলিক অ্যাসিড, ফ্লেভোনয়েড
খেজুরের বীজে প্রচুর পরিমাণে ফেনোলিক অ্যাসিড, ফ্লেভোনয়েড থাকে। এগুলো ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। ফলে আপনি দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখতে পারবেন।