বাঙালির হার্টথ্রব উত্তম কুমার। মহানায়কের জীবনটাই যেন পুরো একটা সিনেমার গল্প। আজ তিনি আর নেই পরে আছে শুধু স্মৃতিটুকুই। তিনি দিয়ে গেছেন, তা আর দ্বিতীয়টি গড়ে তোলা সম্ভব হবে না
কেরিয়ারের শুরুতেই ৭ টি ছবি পরপর ফ্লপ। ইন্ডাস্ট্রি 'ফ্লপ মাস্টার জেনারেল' উপহার দিয়েছিল উত্তমকে। তারপরই তার নায়কসত্ত্বা বেরিয়ে এসেছিল। দাপুটে নায়কই ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছিলেন মহানায়ক
প্রথমে ভাল সংলাপ না বলতে পারা উত্তম কুমার নিজের প্রতিভা আর শ্রমকে অন্য উচ্চতায় তুলে আনে যে পরবর্তী সময়ে উত্তম যেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ১৯৭০ পর থেকে উত্তম হয়ে উঠেছিলেন সকলের 'মহানায়ক'
নকশাল আন্দোলনের সময় উত্তম কুমারকে নিউ থিয়েটার্স স্টুডিওতে তাঁর নিজস্ব মেকআপরুমে সশস্ত্র হানা দিয়েছিল কয়েকজন যুবক। নায়কের বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিল তারা।
কলকাতার এই ঘটনায় এতটাই ভয় পেয়েছিলেন উত্তম কুমার যে চলে গিয়েছিলেন মুম্বই প্রায় ঠিকই করে ফেলেছিলেন আর কলকাতায় ফিরতে পারবেন না।
মুম্বইতে বিশ্বজিতের ফ্ল্যাটে বসে উত্তম কুমার বিশ্বজিৎ-কে বলেছিলেন, 'বিশু, চল, তুই আর আমি মিলে এখান থেকেই বাংলা ছবি বানাব। আর এখানে বসেই বাংলা ছবির শুটিং করব।'
২৯ সেপ্টেম্বর, গৌরী দেবীর জন্মদিনের আসর। সেখানেই বাকবিতন্ডাতে জড়িয়ে পড়েন গৌরী দেবী ও উত্তম কুমার। মেজাজ হারায় উত্তম কুমার। বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন।
বিদ্ধস্ত অবস্থায় সুপ্রিয়া দেবীর দরজায় দাঁড়িয়েছিলেন উত্তম কুমার। চোখের পলকে চাইলেন একটু আশ্রয়। মায়া জড়ানো চোখে সুপ্রিয়ার মমতাই তখন দিয়েছিল মহানায়ককে পরম আশ্রয়।
উত্তম- সুচিত্রা জুটি এখনও বাঙালীর মননে অমলিন। সপ্তপদী, হারানো সুর , চাওয়া-পাওয়া, সাড়ে চুয়াত্তর, ইন্দ্রাণী, শাপমোচন-এর মতো ছবিগুলিতে তাঁ অভিনয় করেন
বাঙালির মহানায়ক। তাঁকে নিয়ে নানান গল্প রয়েছে বাঙালির মননে। মহানায়কের জীবনটাই যেন পুরো একটা সিনেমার গল্প। তার মৃত্যু যেন বাঙালির সিনেমার এক অধ্যায়ের শেষের সূচনা