ভারতে খুব বেশি রাজনীতিবিদ শিক্ষিত নন। কিন্তু এখন আমরা এমন এক রাজনীতিবিদ সম্পর্কে আলোচনা করছি, যাঁর শিক্ষার সঙ্গে কারও তুলনা চলে না।
ভারতে যখনই সবচেয়ে বেশি পড়াশোনা করা ব্যক্তির কথা আসে, তখনই একটাই নাম সামনে আসে ড. শ্রীকান্ত জিচকার। শুধু তাই নয়, তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি পড়াশোনা করা রাজনৈতিক নেতাও।
শ্রীকান্ত জিচকারের জন্ম ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৫৪ সালে মহারাষ্ট্রের কাটোলে। এই অসাধারণ মানুষটি যা করে দেখিয়েছেন, তা হয়তো কেউই করতে পারবে না।
শ্রীকান্ত জিচকার ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে প্রতি গ্রীষ্ম ও শীতকালে কোনও না কোনও পরীক্ষা দিয়েছেন। মোট ৪২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় পাশ করে ২০ টি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
এই ডিগ্রিগুলি এক বা দুটি ক্ষেত্রে নয়, বরং মেডিসিন, আইন, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, রাজনীতি, দর্শন, সংস্কৃত, সাংবাদিকতা এবং ইতিহাসের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছিল।
তিনি প্রথমে UPSC পাশ করে ১৯৭৮ সালে IPS হন। দ্বিতীয়বার UPSC পরীক্ষা দিয়ে ১৯৮০ সালে IAS হন। কিন্তু IAS-এর চাকরিও বেশিদিন করেননি। তিনি রাজনীতিতে কিছু বড় করতে চেয়েছিলেন।
মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি মহারাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক হন। এরপর মন্ত্রী হন এবং একসঙ্গে ১৪টি বিভাগের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
শ্রীকান্ত জিচকার ১৯৮০ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বিধায়ক ছিলেন, তারপর ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদের সদস্য হন। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদও ছিলেন।
১৯৯২ সালে তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে আরও একটি বড় পদক্ষেপ নেন। সান্দিপনি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজও নাগপুরে শিশুদের শিক্ষা দিচ্ছে।
২ জুন ২০০৪ সালে, ৪৯ বছর বয়সে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় শ্রীকান্ত জিচকারের মৃত্যু হয়। নাগপুরের কাছে কান্দোলির কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
ড. শ্রীকান্ত জিচকার শুধু ডিগ্রিই অর্জন করেননি, বরং তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ যিনি পড়াশোনা, প্রশাসন, রাজনীতি এবং সমাজসেবা প্রতিটি ক্ষেত্রেই উদাহরণ স্থাপন করেছেন।