বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী চড়ক উৎসব চৈত্রের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয়। । বৈশাখের প্রথম দু-তিন দিনব্যাপী চড়ক পুজোর উৎসব চলে। এটি চৈত্র মাসে পালিত হিন্দু দেবতা শিবের গাজন উৎসবের একটি অঙ্গ।
এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে যা চড়ক সংক্রান্তির মেলা নামেও পরিচিত। এই বছর ১৪ এপ্রিল ২০২৩ শুক্রবার পালিত হবে এই উৎসব।
কথিত আছে, এই দিনে বাণরাজা দ্বারকাধীশ কৃষ্ণের সঙ্গে যুদ্ধে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে মহাদেবের উপাসনা করেন। মহাদেবকে তুষ্ট করে অমরত্ব লাভের আকাঙ্ক্ষায় নিজ রক্ত দিয়ে অভীষ্ট সিদ্ধ করেন
জনশ্রুতি আছে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা এই চড়ক পুজোর প্রচলন করেন। এই পুজারই বিশেষ এক অঙ্গ নীলপুজো নামে পরিচিত।
চড়কের আগের দিন গাছকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়। এতে জলভরা একটি পাত্রে শিবের প্রতীক শিবলিঙ্গ বা সিঁদুর মথিত লম্বা কাঠের তক্তা যাতে 'শিবের পাটা' রাখা হয়, যাকে "বুড়োশিব" বলা হয়
চড়কের বিশেষ অংশ হলো কুমিরের পুজো, জ্বলন্ত কয়লার ওপর দিয়ে হাঁটা, কাঁটা আর ছুঁড়ির ওপর লাফানো, বাণফোঁড়া, শিবের বিয়ে, অগ্নিনৃত্য, চড়কগাছে দোলা এবং হাজরা পুজো করা
চড়ক গাছে ভক্ত বা সন্ন্যাসীকে লোহার হুড়কো দিয়ে চাকার সঙ্গে বেঁধে দ্রুত বেগে ঘোরানো হয়। তার পিঠে, হাতে, পায়ে, জিহ্বায় এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে শলাকা বিদ্ধ করা হত।
১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার আইন করে এ নিয়ম বন্ধ করলেও গ্রামের সাধারণ লোকের মধ্যে এখনও তা প্রচলিত আছে