সংক্ষিপ্ত

  • মোদীর ব্রিগেডে পর বড় ভাঙন তৃণমূলে
  • সোমবার ৫ বিধায়ক যোগ দিলেন বিজেপিতে
  • যোগ দিলেন হবিবপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীও
  • ভোটের আগে জোর ধাক্কা মনে করছে রাজনৈতিক মহল
     

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেডের পরের দিনই বড়সড় ভাঙন তৃণমূল কংগ্রেসে। নির্বাচনের আগে ঘাসফুল শিবিরকে জোর ধাক্কা দিল পদ্ম সিবির। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন শাসক দলের ৪ জন বিধায়ক। তালিকায় সব হেভিওয়েটরা। বিজেপিতে যোগ দিলেন সাতগাছিয়া বিদায়ী তণমূল বিধায়ক ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ দিনের সঙ্গী সোনালী গুহ, সিঙ্গুরের ৪ বারে বিধায়ক মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, হাওড়া শিবপুরের বিধা.ক জটু লাহিড়ী ও বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক প্রাক্তন ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস। একইসঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিলেন মালদা হবিবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সরলা মুর্মূও। বিজেপিতে যোগ দিয়েই প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তৃণূল ত্যাগি বিধায়করা।

সোনালী গুহ-
প্রার্থী তালিকাতে নাম না থাকায় চোখের জল বাঁধ মানেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরোনো সঙ্গী সোনালী গুহর। দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভও জানিয়েছিলেন তিনি। তারপরই যোগাযোগ করেছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে। সোমবার বিজেপিতে যোগ দিয়ে জানালেন, মানুষের হয়ে কাজ করার জন্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। কোনও প্রার্থী, পদ কিছুই চাইনি। তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য-
সিঙ্গুরের চারবারের  বিধায়ক তিনি। ২০০১, ২০০৬, ২০১১ এবং ২০১৬-তে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে সামনে রেখেই ঘাসফুল ফুটেছিল তৃণমূলে। কিন্তু এবার দল তাকে টিকিট দেয়নি। এছাড়া দলের একাধিক বিষয়ে বিরুদ্ধে মুখও খুলেছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। সিঙ্গুরে বেচারাম মান্নাকে টিকিট দেওয়ায় তারও বিরোধীতা করেছিলেন 'মাস্টার মশাই'। সোমবার বিজেপিতে যোগ দিয়ে বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস দল পরিবারতন্দ্রে পরিণত হয়েছে। দল আর মানুষের জন্য নেই। একটা পরিবার নিয়ন্ত্রণ করছে। বিজেপি যদি ভোটে প্রার্থী করে তাহলে লড়াই করতেও প্রস্তুত তিনি।

জটু লাহিড়ী-
হাওড়া শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়ীও এবার টিকিট পাননি। সেই সিটে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারির নাম। আগেই বিজেপিতে যোগ দানের কথা জানিয়েছিলেন জট লাহিড়ী। সোমবার যোগ দিয়ে বলেন, এত বছরে তৃণমূল বাংলার উন্নয়নে প্রকৃত কোনও কাজ করেনি। হাওড়া জেলারও কোনও উন্নয়ন হয়নি। দল লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়াতেই দল পরিবর্তন।

দিব্যেন্দু বিশ্বাস-
বসিরহাট দক্ষিণ থেকে গতবার নির্বাচিত হয়েছিলেন দিব্যেন্দু বিশ্বাস। কিন্তু এবার দল তাকে প্রার্থী করেনি। তাকে কোনও কিছু না জানিয়েই কেনও দল তাকে টিকিট দিল না, সেই বিষয়ে আক্ষেপ আগেই প্রকাশ করেছিলেন দিব্যেন্দু। পারফরমেন্সে বিশ্বাস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোলরক্ষক হলে আমি স্ট্রাইকার বলে জানান দিব্যেন্দু বিশ্বাস।

শীতল সর্দার-
বিজেপিতে যোগ দিয়েই পুরোনো দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সাঁকরাইলের তৃণমূল বিধায়ক শীতল সর্দার। দলে কাজ করার পরিবেশ নেই, তাই মানুষের কাজ করতেই দল বদল।

সরলা মুর্মু-
দলের প্রার্থী হয়েও, উল্টো পথে হেঁটে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন মালদার হবিবপুরের তৃণমূল প্রার্থীসরলা মুর্মূ। জেলায় তৃণমূল বলে কিছু নেই, সকলেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে জানান সরলা মুর্মূ।  দলে পোস্ট দেওয়া হলেও কাজ করতে দওয়া হয়না বলে অভিযোগ সদ্য দলত্যাগীর।

সামনেই নির্বাচন, ঘোষণা হয়ে গিয়েছে প্রার্থী তালিকাও। যারা টিকিট পাননি জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তারা। আর মোদীর ব্রিগেডের পরের দিনই তৃণমূলে এত বড় ভাঙন সত্যি মমকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের জন্য বড়সড় ধাক্কা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।