সংক্ষিপ্ত
- খাতায় কলমে নন্দীগ্রাম ধরে রাখতে পেরেছেন শুভেন্দু
- তবে গোটা মেদিনীপুরে কার্যত জয় জয়কার তৃণমূল কংগ্রেসের
- তথাকথিত অধিকারি গড় ধরে রাখার লড়াইয়ে হেরেছেন শুভেন্দু
- মমতা সেখানে তাঁকে কার্যত বসিয়ে দশ গোল দিয়েছেন
নন্দীগ্রামে ম্যাজিক হয়েছে। হেরেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হেরেছেন একদা তাঁরই বিশ্বস্ত সৈনিক শুভেন্দু অধিকারির কাছে। তবে খাতায় কলমে নন্দীগ্রাম ধরে রাখতে পারলেও গোটা মেদিনীপুরে কার্যত জয় জয়কার তৃণমূল কংগ্রেসেরই। তথাকথিত অধিকারি গড় ধরে রাখার লড়াইয়ে হেরে গিয়েছেন শুভেন্দু। মমতা সেখানে তাঁকে কার্যত বসিয়ে দশ গোল দিয়েছেন।
নির্বাচনের রেজাল্ট জানাচ্ছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৬টি আসনের মধ্যে ১০টিতে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ছটি পেয়েছে বিজেপি। শুভেন্দু দুবার যে লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন সেই তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রর মধ্যে মাত্র দুটিতে বিজেপি জিতেছে। নন্দীগ্রাম ও হলদিয়া আসনেই শুধু জয় পেয়েছে বিজেপি। বাকি গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে। উল্লেখ্য তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ শুভেন্দু অধিকারির ভাই দিব্যেন্দু অধিকারি।
হিসেব বলছে, শুভেন্দু অধিকারির বাবা শিশির অধিকারির লোকসভা কেন্দ্র কাঁথির ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৪টিতে বিজেপি জিতেছে। কাঁথি উত্তর, কাঁথি দক্ষিণ, ভগবানপুর ও খেজুড়ি। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরের সব আসনেই জয়লাভ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে তৃণমূলের প্রভাব এই আসনগুলিতে কমেছিল। এখানে তিনটি আসনে জিতেছিল বাম প্রার্থীরা।
তবে পাশা উল্টেছে একুশের নির্বাচনে। ২০২১ সালে এখনও পর্যন্ত যত ভোট গোনা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে, মোট ভোটের ৪৭.৯ শতাংশ। আর অনেকটা পিছনে রয়েছে বিজেপি, ৩৮.১ শতাংশ। অর্থাৎ, জয়ী দল এবং তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ভোটপ্রাপ্তির ফারাকটা প্রায় ১০ শতাংশের।
আরও পড়ুন - এই নির্বাচন থেকে নিজেদের ভুল শোধরাবার সুযোগ মিলবে, অকপট দিলীপ ঘোষ
দল হিসাবে দেখলে ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে এরপরই রয়েছে সিপিএম। তারা পেয়েছে মাত্র ৪.৭২ শতাংশ ভোট। এরপর আছে জাতীয় কংগ্রেস, তারা পেয়েছে ২.৯৪ শতাংশ ভোট। এছাড়া রাজ্যে ১ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে যে, সে কোনও রাজনৈতিক দল নয়, 'নোটা'। প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলদের কাউকেই পছন্দ নয় বলে জানিয়েছেন ১.০৮ শতাংশ ভোটদানকারী।
২০২১-এ তৃণমূল কংগ্রেসকে 'সাফ' করার আওয়াজ তুলেছিল বিজেপি। শুধু বিজেপি কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় পাশ থেকে এক এক করে সরে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো একসময়ের বিশ্বস্ত সেনাপতিরাও। কিন্তু, তারপরেও বিজয়ী, সেই দিদি। বারবার 'পিসি পিসি' বলেও তাঁর পরিচয় গুলিয়ে দিতে পারেনি বিপক্ষ। তৃণমূল শুধু জেতেনি, আগের থেকে আরও বেশি সমর্থন নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেছে।