সংক্ষিপ্ত

  • গতবারের চেয়েও বেশি আসনে জিতে ক্ষমতায় ফিরছে তৃণমূল কংগ্রেস
  • রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই তৃণমূল ঝড়
  • দক্ষিণবঙ্গের একাধিপত্য ধরে রেখেও উত্তরেও গড় উদ্ধার তৃণমূলের
  • কলকাতা সহ পাঁচটি জেলায় তৃণমূলের সব আসনে জয়

সব সংশয় মুছে গতবারের চেয়েও বেশি আসনে ফের রাজ্যের ক্ষমতায় আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ বহু হেভিওয়েট মন্ত্রী, তারকাদের ঘাম ঝরানো প্রচার সত্ত্বেও বিজেপি আটকে থাকল ডবল ডিজিটে। অনেক প্রচার করেও সংযুক্ত মোর্চা বিপর্যয়ের মুখে পড়ল। মুছে গেল বামফ্রন্ট, কংগ্রেস। কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া , পূর্ব বর্ধমান সহ বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল একেবারে ক্লিন সুইপ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় নন্দীগ্রাম থেকে একেবারে অল্প ব্যবধানে হারলেও সহজেই জিতেছেন তাঁর মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্যরা।

আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে জয়ের পরই শুভেন্দুর গাড়িতে হামলা, অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে 

বালিগঞ্জ থেকে জিতেছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কলকাতা বন্দর থেকে অনায়াসে জিতেছেন ববি হাকিম। বেহালা পশ্চিম থেকে পার্থ চ্যাটার্জি পেলেন বড় ব্যবধানে জয়। সাধান পান্ডের (মানিকতলা) জয়টাও বিশেষ কঠিন হল না। কসবায় জাভেদ খানের জয় পেলেন অনায়াসে। লোকসভায় তাদের কেন্দ্রে পিছিয়ে থাকলেও বিধানসভায় জিতলেন শশী পাঁজা (শ্যামপুকুর), জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (হাবরা), সুজিত বসু (বিধাননগর),মলয় ঘটক (আসানসোল উত্তর)-রা।

আরও পড়ুন: মালদা-মুর্শিদাবাদে ধরাশায়ী কংগ্রেস, সংখ্যালঘু ভোটেই 'গনি-অধীর' গড়ে বাজিমাত তৃণমূলের

রাজ্যের বহু সেলেব এবারের ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন। তৃণমূল থেকে দাঁড়ানো সেলেবরাই বেশিরভাগ জিতলেন। তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়ানো পরিচালক রাজ চক্রবর্তী (বারাকপুর), থেকে কাঞ্চন মল্লিক (উত্তরপাড়া)। গায়িকা অদিতি মুন্সি (রাজারহাট গোপালপুর) থেকে অভিনেত্রী জুন মালিয়া (মেদিনীপুর), লাভলি মৈত্র (সোনারপুর উত্তর)। সহজ জয় পেলেন। জিতলেন চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী (বারসত), সোহম চক্রবর্তী (চণ্ডীপুর)-রা। তবে হেরে গেলেন সায়নী ঘোষ (আসানসোল দক্ষিণ), সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁকুড়া)। অন্যদিকে,  হিরণ চট্টোপাধ্যায় (খড়গপুর সদর) ছাড়া বিজেপির প্রায় সব সেলেব প্রার্থীই হেরে গিয়েছেন। বাবুল সুপ্রিয় (টালিগঞ্জ) থেকে লকেট চ্যাটার্জি (চুঁচড়া), পাপিয়া অধিকারী (উলবেড়িয়া দক্ষিণ) থেকে পার্ণো মিত্র (বরানগর)। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (বেহালা পশ্চিম) থেকে পায়েল সরকার (বেহাল পূর্ব)। সবাই হেরে গেলেন।

 

তৃণমূল প্রার্থীদের বেশিরভাগ আসনেই জয় এসেছে বড় ব্য়বধানে। কিছু কিছু কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীদের জয়ের মার্জিন বেশ কম। মনে করা হয়েছিল এবারের ভোটে অধিকাংশ কেন্দ্রই জয়-পরাজয়ের ব্যবধান খুব কম থাকবে। দিদি ঝড়ে অবশ্য সেসব কিছু হল না। এবার জেনে নেওয়া যাক এবারের ভোটে সবচেয়ে বেশি ভোট ও কম ভোটে জয়ের রেকর্ড কী হল। এবারের ভোটে সবচেয়ে বেশি ও কম ব্যবধানে জয়-পরাজয়ের রেকর্ডটা হল উত্তরবঙ্গ থেকে। সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জিতলেন মালদার সুজাপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়ানো তৃণমূল প্রার্থী আব্দুল গনি। সুজাপুরের তৃণমূল প্রার্থী জিতলেন ১ লক্ষ ২৯ হাজার ভোটে। আব্দুল গনি যেখানে পেয়েছেন ১,৫২,৪৪৫টি ভোট, সেখানে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরী পান মাত্র ২২ হাজার ভোট। তৃতীয় স্থানে বিজেপি প্রার্থী এসকে জিয়াউদ্দিন পান ১৪ হাজার ৬৫৫টি ভোট। 

অন্যদিকে, সবচেয়ে কম ব্যবধানে জয় পেয়েছেন কোচবিহারের দিনহাটা থেকে জেতা বিজেপি-র নিশীথ প্রামাণিক। তিনি মাত্র ৫৭ ভোটের ব্যবধানে হারান তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের উদয়ন গুহকে। এই কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী আব্দুল রৌফ, হাজারের ওপর ভোট পাওয়া তিন প্রার্থী, এমনকী নোটা-র প্রাপ্ত ভোটও জয়-পরাজয়ে ভূমিকা নেয়।