সংক্ষিপ্ত

নবান্ন সূত্রে খবর, চলতি অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের অধীনে বাংলার জন্য শ্রমদিবস বরাদ্দই করেনি কেন্দ্রের মোদী সরকার। ফলে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় আনা যাচ্ছে না গ্রামীণ মানুষজনকে। 

২০২২-এর ১ নভেম্বর থেকে ফের চালু হতে চলেছে দুয়ারে সরকার প্রকল্প। এই নিয়ে এটি চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় দুয়ারে সরকার। কিন্তু, এই প্রথমবার বাংলায় দুয়ারে সরকার প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত থাকছে না ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প। দ্বিতীয় শিবির থেকে বহু মানুষ ১০০ দিনের কাজের জন্য আবেদনপত্র জমা দেবেন বলে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এখন সেই সুযোগ আর থাকছে না বলে হতাশ হয়েছেন অনেকেই। এই নিয়ে রাজ্যের অন্দরেও শুরু হয়েছে জল্পনা। 

গ্রামীণ মানুষের রোজগারের একটা গুরুত্বপূর্ণ পথ হল একশো দিনের কাজ, চলতি বছরে মে মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টেই প্রকাশ হয়েছিল যে, শ্রমশক্তিতে সারা ভারতের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে পশ্চিমবঙ্গ। ১০০ দিনের কাজ এই কর্মশক্তির প্রধান সহায়ক। কিন্তু, আসন্ন নভেম্বর মাসে সেই কাজেরই ফর্ম পূরণ করা বা জমা দেওয়া যাবে না বলে খবর প্রকাশ হওয়ার পর চিন্তায় পড়েছেন বাংলার সাধারণ মানুষ।

নবান্ন সূত্রে খবর, চলতি অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের অধীনে বাংলার জন্য শ্রমদিবস বরাদ্দই করেনি কেন্দ্রের মোদী সরকার। ফলে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় আনা যাচ্ছে না গ্রামীণ মানুষজনকে। এর আগে বহুবার কেন্দ্রের কাছ থেকে আর্থিক প্রাপ্য না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের বক্তব্যে কেন্দ্রকে একাধিকবার আক্রমণও করেছেন তিনি। এমনকী কাজে ব্যয় হওয়া অর্থ সম্পর্কে কেন্দ্রের দাবি মেনে সমস্ত তথ্যও দাখিল করেছে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর। তারপরেও ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প থেকে বাংলার মানুষকে মোদী সরকার এখনও বঞ্চিত রেখে দিয়েছে বলে অভিযোগ বঙ্গের শাসকদলের। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে গ্রামীণ মানুষজনের মনেও। 

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে পঞ্চম দফার দুয়ারে সরকার শিবির চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। ১ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে ‘‌পাড়ায় সমাধান’‌। উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে প্রতি বছরই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দেশে মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে নিয়েছিল বাংলা। তাই, দুয়ারে সরকার শিবিরে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই প্রকল্পকে রাখা হতো। এর অধীনে নতুন জবকার্ড থেকে শুরু করে কাজের জন্য আবেদন করতে পারতেন গ্রামীণ মানুষজন।

শনিবার নবান্নে আগামী দুয়ারে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে একটি পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বৈঠকে দফতরের সচিবরাও উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন জেলাশাসকরা। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, এই বৈঠকেই এবারের দুয়ারে সরকার শিবিরে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প বাদ পড়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এবারের শিবিরে বেশি করে জোর দিতে বলা হয়েছে মৎস্যজীবীদের নাম নথিভুক্তিকরণের ওপর। নভেম্বর মাসে রাজ্যের প্রতিটি মৎস্যজীবীকে পরিচয়পত্র দেবে রাজ্য। এমনকী কৃষি পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (এগ্রিকালচার ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড) স্কিমেও জোর দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। এবারের দুয়ারে সরকার শিবিরে রাজ্য সরকারের মোট ২৫টি প্রকল্পের সুবিধা মিলবে—খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, জাতি শংসাপত্র, শিক্ষাশ্রী, তফসিলি বন্ধু, জয় জোহার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, মানবিক, কৃষকবন্ধু, ঐক্যশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড–সহ অন্যান্য প্রকল্পগুলি।