সংক্ষিপ্ত
- রাঁচি থেকে আশি কিলোমিটার পথ পেরিয়ে এসেছিলেন তাঁরা
- পুরুলিয়ার দশজন পরিযায়ী শ্রমিক পুঞ্চায় আসেন
- সেখানে তাঁদের জন্য় গরমভাতের ব্য়বস্থা করে দেয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সেবা
- তাঁরাই ওঁদের বাড়ি ফেরবার জন্য় অ্য়াম্বলেন্সের বন্দোবস্ত করেন
আশি কিলোমিটার পথ হেঁটে আসার পর যখন শরীর আর দিচ্ছিল না, ঠিক তখনই জুটে গেল গরমভাত আর একটু বিশ্রাম।
লকডাউনের মরশুমে পরিযায়ী শ্রমিকরা আটকে পড়েছেন ভিনরাজ্য়ে। গোটা দেশজুড়েই একই ছবি। সেখানে মালিক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। মেস খালি করে দিতে বলছেন বাড়িওয়ালা। এই অবস্থায় মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফিরছেন ভিনরাজ্য়ের শ্রমিকরা। আর সেই ফেরার পথে না-পাওয়া যাচ্ছে খাবার, না-পাওয়া যাচ্ছে একফোঁটা জল। এই পরিস্থিতিতেই কিছুটা ব্য়তিক্রমি ছবি দেখা গেল পুরুলিয়ায়।
পুরুলিয়ার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই বাড়ি ফিরতে না পেরে বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন। এঁদের মধ্য়ে জেলার পুঞ্চা এলাকার ১০ জন শ্রমিকের একটি দল ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ঝালদায় পৌঁছায়। দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে ক্লান্ত হওয়া শ্রমিকদের যখন আর হাঁটার ক্ষমতা নেই, তখন এগিয়ে আসে ঝালদার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'সেবা'। দীর্ঘ পথ পাড়়ি দিয়ে আসা শ্রমিকদের গরম ভাতের বন্দোবস্ত করে দেন সংস্থার সদস্য়রা। তারপর ব্য়বস্থা করিয়ে দেওয়া হয় বিশ্রামেরও। আর, তারও পর, এই সংস্থার নিজস্ব অ্য়াম্বুলেন্সে করে করিয়ে পুঞ্চার শ্রমিকদের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। সংস্থার সভাপতি মহেন্দ্র রুংটা জানান, "প্রায় ৮০কিলোমিটার পায়ে হেঁটে এসেছেন মানুষগুলো। এরপর ওঁরা পুঞ্চা গ্রামে যাবেন।এই অবস্থায় ঝালদা ও পুঞ্চা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ওঁদের বাড়ি পৌঁছনোর ব্যাবস্থা করলাম।"
তবে গ্রামে ঢোকার আগে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু এদিনের ঘটনাই নয়। কয়েকদিন আগে ঝালদায় আটকে পড়া পনেরো জনকে সাঁওতালডিহিতে তাদের নিজের গ্রামে পৌঁছে দেয় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। রাঁচি থেকে পায়ে হেঁটে আসা প্রসেনজিৎ দুয়ারি বলেন, "আমরা পায়ে হেঁটে ঝালদায় পৌঁছোই, এর পরে ঝালদা থেকে আমাদের সেবা থেকে খাবার খাইয়ে অ্য়াম্বুলেন্সে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। সত্যিই এরকম যদি একটা আজ আমাদের পাশে না দাঁড়াতো তাহলে আমাদের পক্ষে আর পায়ে হেঁটে পুঞ্চায় পৌঁছানো সম্ভব হতো না।"