সংক্ষিপ্ত
এসএসসি দুর্নীতিকাণ্ডে শিরোনামে উঠে আসেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পরেশ অধিকারী। এসএসসি দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন তার কন্যা অঙ্কিতা চৌধুরি। কোচবিহারের ইন্দিরা বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন মেখলিগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী।
এই জয়ের স্বাদই আলাদা। পরেশ চন্দ্র অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর ফেরানো প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পেলেন ববিতা সরকার। জানা গেছে অঙ্কিতা অধিকারী তার দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও ফেরত দিয়ে দিয়েছেন। হাইকোর্টে এমনই জানিয়েছেন অঙ্কিতা অধিকারীর আইনজীবী।
আজ ববিতা সরকার টাকা হাতে পেয়ে জানালেন এতদিনের লড়াই এর এটা ছিল দ্বিতীয় ধাপ। টাকা পেয়ে মনে হচ্ছে আমি একটা বড় লড়াই এ জয়লাভ করলাম। এই টাকার বেশ কিছুটা অংশ আমি মেয়ো রোডে গিয়ে আমি আমার অনশনরত ভাই বোনেদের হাতে তুলে দেবো। যারা ৫০০দিন ধরে অনশন করেও তাদের প্রাপ্য সন্মান পাননি। শীত, গ্রীষ্ম এবং বর্ষাও যাদের কাছে পরাজিত হয়েছে। আমি ওদের সাহায্য করতে চাই।
তিনি জানালেন স্কুলের অনুমতি নিয়ে তিনি এক সপ্তাহের জন্য কলকাতায় যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে অনশনরতদের সাথে মিলে তিনিও তাদের জন্য অনশন করবেন। ববিতা সরকার আরো জানালেন যদি ওরা চাকরি পায় তবেই আমি মনে করবো আমি আসল যুদ্ধে জয়ী হয়েছি। কত শিক্ষিত যুবক যুবতী আছেন যারা প্রতিভাবান এবং যোগ্য হয়েও সরকারি চাকরি পাচ্ছেন না। আমি তাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবোও জানিয়ে দিলেন ববিতা সরকার।
উল্লেখ্য, এসএসসি দুর্নীতিকাণ্ডে শিরোনামে উঠে আসেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পরেশ অধিকারী। এসএসসি দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন তার কন্যা অঙ্কিতা চৌধুরি। কোচবিহারের ইন্দিরা বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন মেখলিগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। তিনি ৪৩ মাস চাকরি করেছেন। সম্প্রতি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ায় শিক্ষাদফতর প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর। অভিযোগ, মেধা তালিকায় না থেকেও মন্ত্রীর মেয়ে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। এনিয়ে ববিতা সরকার নামে এক পরীক্ষার্থী মামলা করেছিলেন।
ববিতার দাবি ছিল, তাঁর থেকে কম নাম্বার ছিল মন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। তারপরেও নিয়োগপত্র হাতে পাননি ববিতা। অথচ ২০১৮ সালে মেখলিগঞ্জের একটি স্কুলে চাকরি পেয়ে যান অঙ্কিতা অধিকারী। তারপরেই গোটা ঘটনার সূত্রপাত।
শিলিগুড়ির কোর্ট মোড়ের বাসিন্দা ববিতা সরকার ২০১৬ সালে স্কুল শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসেন।২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই তালিকায় অবশ্য ববিতার নাম প্রথম থেকে ২০তেই ছিল। কিন্তু সেই তালিকা বাতিল করে দেয় এসএসসি। কিছুদিন পরে প্রকাশিত হয় নতুন তালিকা। নতুন তালিকায় ববিতার নাম ছিল ওয়েটিং লিস্টে। আর পুরোনো তালিকায় কোথাও না থাকা অঙ্কিতার নাম সংযোজনের অভিযোগ।
তালিকায় একধাপ নীচে নামলেন কীভাবে, নতুন সংযোজনে অঙ্কিতাই বা কে। তা তখনও জানতেন ববিতা। পরে জানতে পেরেই শুরু হয় দৌড় ঝাঁপ। জানতে চেয়েছেন তাঁর এবং অঙ্কিতার প্রাপ্ত নম্বর কত। ববিতা বিবাহিতা। দুই সন্তানের মা। গত পাঁচ বছর ধরে তাঁদের সামলে নিজেই লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। বিপক্ষে যখন প্রভাবশালী মন্ত্রী, তখন লড়াই যে কঠিন হবে, তা বুঝেছিলেন ববিতাও। কিন্তু হাল ছাড়েননি। তারই জয়ের স্বাদ পেলেন ববিতা।