সংক্ষিপ্ত
বিধানসভার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য দায়ি বিধায়কদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ মমতার। এই বিষয়ে তিনি কথা বলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
বিধানসভা রণক্ষেত্র। বিরোধী বিজেপি বিধায়কদের তুলকালাম কান্ডে প্রচন্ড ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভার (State Assembly) বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য দায়ি বিধায়কদের (MLA) বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ মমতার (Mamata Banerjee)। এই বিষয়ে তিনি কথা বলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chaterjee) সঙ্গে। নজিরবিহীন ঘটনার নজিরবিহীন শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। সেই সঙ্গে পার্থ ও ফিরহাদ হাকিমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে বিধায়করা এই ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত, তাদের ভাতা থেকে টাকা কেটে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এদিকে, তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, বিজেপি বিধায়কদের মারে জখম হয়েছেন বিধায়ক অসিত মজুমদার। তাঁকে চিকিৎসকের নিয়ে গিয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। অন্যদিকে, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সোমবারের এই ঘটনায় বিধানসভার সম্পত্তির কী কী ক্ষতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অশান্তি বাধানোর অভিযোগে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারি, মনোজ টিগ্গা, শঙ্কর ঘোষ-সহ পাঁচ জনকে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এদিন বিধানসভার ওয়েলেই তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। হাতাহাতি পর্যন্ত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিধায়কদের উপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। এদিকে রবিবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই মন্ত্রীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। ছয়দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন মমতা।
বগটুই-কাণ্ডের জেরে বিধানসভায় অশান্তির জন্য সরাসরি রাজ্য সরকার এবং শাসকদলকে নিশানা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করার পরে তিনি বলেন, "পরিকল্পনা মাফিক কলকাতা পুলিশের কর্মীদের সাদা পোশাকে অধিবেশন কক্ষের মধ্যে ঢোকানো হয়েছিল। তারাই প্রথমে বিজেপি বিধায়কদের উপর হামলা চালায়।" এই ঘটনায় বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে ঘুসি মারা হয় এবং তাঁর জামাও ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ শুভেন্দুর। পাশাপাশি চন্দনা বাউড়ি ও তাপসী মণ্ডলের মতো মহিলা বিধায়করাও আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, চন্দনার গায়ে পুরুষ পুলিশ নিরাপত্তাকর্মীরা হাত দেন। এছাড়া বিজেপি বিধায়ক শওকত মোল্লা, রহিম বক্সী, তপন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি বিধায়কদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ করেন তিনি।
বিধানসভায় এই ঘটনার পরই বিজেপির ৫ বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তালিকায় রয়েছেন শুভেন্দু, দীপক বর্মণ, মনোজ টিগ্গা, নরহরি মাহাতো, শংকর ঘোষ। তাঁদের বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব পেশ করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং উদয়ন গুহ। তারপর ওই পাঁচ বিধায়ককে বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ। আগামী অধিবেশন পর্যন্ত তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।