সংক্ষিপ্ত
ধর্মঘট বরাবরই বাম দলগুলির প্রধান অস্ত্র, কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সাধারণ ধর্মঘট ডাকা কতটা যৌক্তিক এবং তাতে যোগ দেওয়ার রাজনৈতিক সুবিধা বা অসুবিধা কী, তা নিয়ে ভাবছিল রাজ্য সিপিআইএম নেতৃত্ব।
ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ সহ একাধিক কেন্দ্রীয় ইস্যুর প্রতিবাদে আগামী ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি সারা দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি (Trade unions have called for a general strike across the country)। এবার তারই সমর্থনে বাংলাজুড়ে জোরদার প্রচরাভিযান শুরু দিয়েছে সিপিআইএম। এদিন দুর্গাপুরে জোরকদমে চলে দেওয়াল লেখার কাজ। সেই কর্মসূচির ছবি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ধর্মঘট সফল করার ডাক দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র(CPM state secretary Suryakanta Mishra)। যদিও কিছুদিন আগেও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে অংশ নেওয়ার জন্য দ্বিধাগ্রস্ত ছিল বামেরা। যদিও ধর্মঘট বরাবরই বাম দলগুলির প্রধান অস্ত্র, কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সাধারণ ধর্মঘট ডাকা কতটা যৌক্তিক এবং তাতে যোগ দেওয়ার রাজনৈতিক সুবিধা বা অসুবিধা কী, তা নিয়ে ভাবছিল রাজ্য সিপিআইএম(CPIM) নেতৃত্ব। যদিও বর্তমানে তারা ধর্মঘটের পক্ষেই রয়েছে।
এদিকে শুরু থেকেই বামেরা মোদী সরকারের লকডাউনের বিরোধিতা করে আসছে। তাদের সাফ দাবি ছিল শুধু দোকান-বাজার বন্ধ করে করোনার সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না। এতে সমস্যার সমাধান হবে না, বরং জনগণের সমস্যা বাড়বে। এমতাবস্থায় একেবারে দুদিনের বন্ধ ডাকলে তাদের নিজস্ব নীতির ক্ষেত্রেই তা ব্যুমেরাং হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। এমতাবস্থায় শুরুর দিকে বঙ্গ সিপিআইএম-র একটা অংশ চাইছিল এটাকে বাংলায় সাধারণ ধর্মঘটের পরিবর্তে শিল্প ধর্মঘটে রূপান্তরিত করা হোক। তাতে অনেক শ্রমিক শ্রেণির মানুষের রুটি-রুজি বাঁচবে। অন্যদিকে আবার ফেব্রুয়ারিতেই বাংলার বেশ কয়েকটি জায়গায় রয়েছে পৌরসভার নির্বাচন। এই সময় বনধ ডাকলে তা নির্বাচনে দলের পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত বনধেই সমর্থন দিয়েছে বামেরা।
আরও পড়ুন-স্বাধীনতার ৭৫ বছরে কোথায় দাঁড়িয়ে দেশের ছাত্র রাজনীতি, কোন পথ দেখিয়ে ছিলেন স্বয়ং Netaji
আরও পড়ুন- চলন্ত ট্রেনে শ্লীলতাহানির ঘটনায় নতুন মোড়, ফেসবুক লাইভ ধরিয়ে দিল অভিযুক্তকে
এদিকে ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারির দেশব্যাপী ধর্মঘটে একাধিক ট্রেড ইউনিয়নের পাশাপাশি সারা দেশের বিদ্যুৎ কর্মীরাও সামিল হচ্ছেন। অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশনের তরফে শৈলেন্দ্র দুবে জানিয়েছেন তাদের সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাতেই ঠিক হয়েছে আগামী মাসের ধর্মঘটে সারা দেশের ১৫ লক্ষ বিদ্যুৎকর্মী এবং প্রকৌশলী দুই দিনের ধর্মঘটে অংশ নেবেন। বিদ্যুৎ নিয়ে কেন্দ্রের একাধিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই তাদের এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। এদিকে চলতি আগামী মাস থেকেই বিধানসভা ভোট শুরু হচ্ছে ৫ রাজ্যে। এদিকে এবারের ভোটের ময়দানে এই বনধ বিশেষ কোনও প্রভাব ফেলে কিনা এখন সেটাই দেখার।