ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা না থাকলেও জাওয়াদের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকায় বইবে ঝোড়ো হাওয়া। এ বিষয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, "খুব ভারী বৃষ্টি না হলে কলকাতায় জল জমার কোনও সম্ভাবনা নেই। বিশেষত নীচু এলাকায় পাম্প তৈরি রাখতে বলেছি।"
- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- Cyclone Jawad-Live Updates: ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ-এর প্রভাবে বর্ষণ মুখর কলকাতা
Cyclone Jawad-Live Updates: ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ-এর প্রভাবে বর্ষণ মুখর কলকাতা
ঘূর্ণীঝড় জাওয়াদের প্রভাবে প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস সারা বাংলায়। ঘূর্ণীঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বাংলার উপকূলে সমুদ্র উত্তাল হবে। শনিবার সকালে সমুদ্র উপকূলে বাতাসের গতিবেগ ৬৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার হতে পারে। সোমবার পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়াতে মৎস্যজীবীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাওয়া অফিস । এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতাসহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় বৃষ্টি এবং উপকূল ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
- FB
- TW
- Linkdin
ওডিশার বেশিরভাগ জেলা থেকে বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। গঞ্জাম, খুরদা, পুরী, কেন্দ্রপাড়া এবং জগৎসিংহপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্য়োপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে অতি গভীর নিম্নচাপ রূপে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে বিরাজ করছে। এটি শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপ রূপে থাকবে। পশ্চিমবঙ্গের উপকুলে ৫০ থেকে ৬০ কিমি বেগে হওয়া বইবে। কলকাতায় আজ থেকে কাল সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হবে আগামীকাল ধীরে ধীরে উপকূলের হাওয়ার গতি কমবে।
শনিবার রাতের জোয়ারে দক্ষিন ২৪ পরগনার গোসাবার কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের কোরানখালি নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। ফলে নদীর নোনা জল ঢুকে প্লাবিত হয় কুমিরমারি দক্ষিন পাড়ার বেশ কিছুটা অংশ। রাতেই সেচ দফতরের কর্মীরা স্থানীয় গ্রামবাসীদের সাহায্য বাঁধ মেরামতির কাজে হাত লাগায়। কিন্তু জোয়ার থাকার কারণে সেই বাঁধ মেরামতির কাজ সম্পূর্ণ করা যায়নি। তবে রবিবার দুপুর থেকে দ্রুত বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর।
ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে অতি গভীর নিম্নচাপ রূপে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে বিরাজ করছে। এটি আগামী ৩ ঘণ্টার শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপ রূপে থাকবে । উড়িষ্যায় উপকূল ধরে পশ্চিম বঙ্গ উপকূলে এগোবে। রাতে আরো শক্তি হারাবে । ৫ তারিখ দুই মেদনিপুর ও দুই ২৪ পরগনায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি বাকি জেলায় ভারী বৃষ্টি হবে ।
বৃষ্টিতে উত্তর কলকাতার বিবেকানন্দ রোডে রাস্তার উপর উপড়ে পড়ে গাছ। দ্রুত গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করেন কলকাতা পুরসভার কর্মীরা।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ-এর প্রভাবে সারাদিন বৃষ্টি বঙ্গে। দেখে নিন বৃষ্টি ভেজা কলকাতার কিছু ছবি-
প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে হাওড়া ও কলকাতার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হল ফেরি সার্ভিস। হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমিতি এবং ভূতল পরিবহন সংস্থা সূত্রে খবর রিভার ট্রাফিক পুলিশ এবং প্রশাসনের নির্দেশে লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাওড়া ফেরিঘাটে দেখা গেল একাধিক ভেসেলকে জেটির সঙ্গে মোটা দড়ি দিয়ে বাঁধা আছে। কোনোরকম বিপত্তি এড়াতেই এই ব্যবস্থা বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
একদিকে অমাবস্যার ভরা কোটাল, অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়। আর তার জেরেই ফুঁসছে হলদি নদী। পূর্ব মেদিনীপুরে হলদিয়ায় হলদি নদীর জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে। প্রশাসনের তরফে সতর্কমূলক প্রচার করা হচ্ছে। তৎপর রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। পাশেই রয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনীর হেডকোয়ার্টার, তারাও প্রস্তুত বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য। হলদিয়া থেকে নন্দীগ্রাম যাওয়ার ফেরি পরিষেবা সচল রাখা হয়েছে।
আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরী উপকূলে আছড়ে পড়বে জাওয়াদ। তার আগে থেকেই উত্তাল হয়ে রয়েছে সমুদ্র। সেই কারণে কোনও পর্যটককে সমুদ্র নামতে দেওয়া হচ্ছে না।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বিপদের সম্ভাবনা ,জলমগ্ন হবার আশঙ্কায় সর্তক হাওড়া জেলা প্রশাসন। সকাল থেকেই তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ফেরী ঘাট গুলি পরিদর্শন করেন মন্ত্রী অরূপ রায়।
বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবনের সন্দেশখালি দু'নম্বর ব্লকের সন্দেশখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঁসা নদীর তীরে জাওয়াদ আতঙ্কের মধ্যেই চলছে বাঁধের কাজ। একেবারে জেসিবি লাগিয়ে মাটি খুঁড়ে সুন্দরবনবাসির আতঙ্ক কাটাতে তৎপর ব্লক প্রশাসন। সন্দেশখালি দু'নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্যের কর্মাধ্যক্ষ সুশান্ত সর্দার জানান, জাওয়াদ আতঙ্কের মধ্যেই পুরোদমে ডাঁসা নদীর তীরে কাজের কাজ চলছে। ১৬ ফুট উঁচু ও ১৪ ফুট চওড়া হচ্ছে এই বাঁধ।
বিকেলে ওডিশায় আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ, পুরীতে মাঝারি বৃষ্টিপাত, সতর্ক NDRF
জাওয়াদের কারণে নিম্নচাপ ও অমাবশ্যার ভরা কোটালের ফলে সুন্দরবনের নদী গুলিতে প্রবল জলোচ্ছাস শুরু হয়েছে। সেই কারণেই আপাতত গদখালি গোসাবার মধ্যে খেয়া পারাপার বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। রবিবার সকাল থেকেই খেয়া চলাচল বন্ধ। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে শুধুমাত্র জরুরী পরিষেবার জন্য খেয়া পারাপার করানো হচ্ছে।
ধেয়ে আসছে ক্রমশ ঘূর্ণীঝড় জাওয়াদ। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় পুরীর উপকূলে আছড়ে পড়বে। তবে আগে থেকে সতর্ক রয়েছে পুরী প্রশাসন। গত দুদিন ধরেই সমস্ত হোটেল খালি করে দেয়া হয়েছে কোন পর্যটক নামতে দেয়া হচ্ছে না সিবিজে সাধারণ মানুষকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে কারণ গত দুবার যেরকম ভাবে ঝড় আছে পড়েছিল পুরীতে আগেভাগেই প্রশাসন কোন ঝুঁকি নিতে চাইছেন না তার জেরেই সর্বক্ষণ চলছে নজরদারি।
গঙ্গাসাগরের কচুবেরিয়া ঘাটের কাছে বেঁধে রাখা নৌকা ডুবল মুড়িগঙ্গা নদীতে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকালে। দুর্যোগের জেরে কচুবেরিয়া ঘাটের কাছে নোঙর করা ছিল নৌকা। সেই নৌকা ডুবে যাওযায় আতঙ্ক ছড়াল এলাকায়। তবে নৌকাতে কেউ ছিল না বলেই জানা গিয়েছে। কি করে নৌকাডুবি হল তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে দুর্যোগের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।
আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় পুরীর উপকূলে আছড়ে পড়বে। গত দুদিন ধরেই কোনও পর্যটককে নামতে দেয়া হচ্ছে না সমুদ্রে। স্থানীয়দেরও সমুদ্র সৈকত থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ গত দুবার যেরকমভাবে ঝড় আছড়ে পড়েছিল পুরীতে তাই আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। সর্বক্ষণ চলছে নজরদারি।
শক্তি ক্ষয় করে ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে জাওয়াদ। যার জেরে বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ, হেমনগর, সন্দেশখালি ও হাসনাবাদে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক অনেকটাই কমেছে। বিশেষ করে যে সমস্ত লঞ্চ গুলি নদী পাড়ে সুরক্ষিত স্থানে নোঙর করা ছিল সেই সমস্ত লঞ্চের কর্মীরা নিজেদেরকে এখন নিরাপদ মনে করছেন। যদিও সকাল থেকে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। এখনো হয়তো দুর্যোগ কাটেনি। কিন্তু আম্ফান বা ইয়াশের মতো পরিস্থিতি না হওয়ায় যথেষ্টই খুশির হাওয়া সুন্দরবনে। দুর্যোগের আশঙ্কা করে একাধিক রুটে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার কথা থাকলেও এই বৃষ্টিতে সমস্ত ঘাটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃষ্টি চলবে রবিবার সারাদিন। সমুদ্র উপকূল ও উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে হালকা ঝোড়ো হাওয়া। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতা, হাওড়া ,হুগলি সহ উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতেও।
সচেতনতা বাড়াতে রাজ্যের উপকূলীয় জেলাগুলিতে সাতসকালেই প্রচারে বেরিয়েছে পুলিশ। যাতে কোনওভাবেই নাগরিক জীবন বিপন্ন না হয়, সেদিকে কড়া নজর রাখছে প্রশাসন।