সংক্ষিপ্ত
বিরোধী দলনেতা হিসেবে লোকায়ুক্ত নিয়োগ কমিটির একজন সদস্য শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে কমিটির সম্পূর্ণ অনুমোদন ছাড়া নাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
আবারও রাজভবন (Rajbhavan) ও নবান্নের (Nabanna) সংঘাত। এবার পশ্চিমবঙ্গের লোকায়ুক্ত (Lokayukt) নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। অন্যদিকে তথ্যের অধিকার কর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামী আগেই এই একই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলেছেন। পাশাপাশি আইনের গবেষক হিসেবে তিনিও তাঁর নিজের মতামতও প্রকাশ করেছেন।
রাজ্যপালের প্রশ্নঃ
বিরোধী দলনেতা হিসেবে লোকায়ুক্ত নিয়োগ কমিটির একজন সদস্য শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে কমিটির সম্পূর্ণ অনুমোদন ছাড়া নাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পাশাপাশি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টকেও ট্যাগ করেছেন। রাজ্যপালের এই টুইটবার্তা নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করেছেন বিজেপি নেতা তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
লোকায়ুক্ত নিয়োগের নিয়মঃ
গত ২৭ ডিসেম্বর লোকায়ুক্ত হিসেবে প্রাক্তন বিচারপতি অসীম রায়ের নাম চূড়ান্ত করে রাজ্যপালের কাছে পাঠান হয়েছিল। লোকায়ুক্তের প্রধানের নাম চূড়ান্ত করে একটি কমিটি। সেই কমিটির সদস্য হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু যেদিন কমিটি বৈঠক হয় সেদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারী। নামের বিষয়ে তাঁর কোনও সম্মতি নেওয়া হয়নি বলেও তিনি তাঁর ঘনিষ্ট মহলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেছেন লোকায়ুক্ত ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের যে নাম চূড়ান্ত করে রাজ্যপালের কাছে পাঠান হবে তাতে সম্মতি জানানোই নিয়ম। তেমনই বলা আছে সংবিধানে।
বিশ্বনাথ গোস্বামীর বক্তব্যঃ
রাজ্যপালের আগেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের তথ্যের অধিকার কর্মী বা রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট কর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামী। তিনি গত ২৮ ডিসেম্বর এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বার্তা দেন। সেখানে তিনি বলেন, কমিটির বিশ্বাসযোগ্যতা, সততার প্রশ্নগুলি আরও যাঁচাই করার প্রয়োজন ছিল।
পয়লা জানুয়ারি সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে তিনি আরও একবার এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে মানুষের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এটি দূর্ণীতিগ্রস্ত প্রশাসন কায়েম করবে। গোটা বিষয়টিতে তিনি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র বলেও দাবি করেছেন। একই সঙ্গে তিনি একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনও শেয়ার করেছেন।
সেই প্রতিবেদনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। কারণ তিনি সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকেননি বলে। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তি জানালেও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে কোনও আপত্তি জানাননি বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি এই প্রতিবেদনে বিশ্বনাথ গোস্বামীরও মতামতও প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত তিন বছর ধরে লোকায়ুক্তের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন প্রাক্তন বিচারপতি অসীম রায়। তাঁকেই আবারও সেই দায়িত্বেই ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পেগাসাস স্পাইওয়্যার নিয়ে তদন্ত কমিটির মাথায় ছিলেন জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্য। তাঁকেই রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।