সংক্ষিপ্ত

আসলে তৃণমূলে ‘‌এক ব্যক্তি এক পদ’‌ নীতি চালু হয়েছে। এই নীতি যাতে দলের মধ্যে পুরোদমে চালু হয়, তার জন্য সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর অভিষেকের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা।

ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) সংস্থা আইপ্যাকের (I-PAC) সঙ্গে সম্পর্ক একেবারেই ভালো নেই তৃণমূলের (TMC)। আর বিষয়টি মাঝে মধ্যেই চলে আসছে প্রকাশ্যে। এবার নাম না করে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের (Chandrima Bhattacharya) দাবি খারিজ করল আইপ্যাক। শুক্রবার সংস্থার টুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়, ‘আইপ্যাক কখনওই তৃণমূল দল বা তার কোনও নেতার ডিজিটাল মাধ্যম পরিচালনা করে না। কেউ এমন দাবি করলে, সেটা তাঁর অজ্ঞতা বা মিথ্যাচার। দল বা নেতাদের ডিজিটাল মাধ্যমের (Digital Properties) অপব্যবহার হচ্ছে কি না, তা তৃণমূলের খতিয়ে দেখা উচিত।’

কী কারণে বিতর্ক? 
আসলে তৃণমূলে ‘‌এক ব্যক্তি এক পদ’‌ নীতি চালু হয়েছে। এই নীতি যাতে দলের মধ্যে পুরোদমে চালু হয়, তার জন্য সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আর অভিষেকের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে এই নীতিকে সমর্থন জানিয়েছেন তাঁরা। এছাড়াও অভিষেকের সমর্থনে পোস্ট দিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য ও সুদীপ রাহাকে। এদিকে এক ব্যক্তি এক পদকে সমর্থন করে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নামেও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পোস্ট তিনি করেননি বলে জানান চন্দ্রিমা। কার্যত এর জন্য আইপ্যাকের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছিলেন তিনি। 

 

আরও পড়ুন- তৃণমূলের রাশ থাকবে কার হাতে, ঠিক হবে শনিবার - সবাইকে কালীঘাটে ডাকলেন মমতা

কী বলেছিলেন চন্দ্রিমা
চন্দ্রিমা সাফ জানিয়ে দেন, "এটা আমার পোস্ট নয়। আমি ওই ফেসবুক ব্যবহার করি না। এই পেজটা আইপ্যাক (IPAC) তৈরি করেছে। ট্যুইটারেও তাই করেছে। এটা কোনওটাই আমার নয়। যারা আমাদের সঙ্গে কো-অর্ডিনেট করে এগুলো আগে করত, তারা আমাকে না জানিয়ে এটা করেছে।" এরপর তার পাল্টা জবাব দিতে দেখা গিয়েছে আইপ্যাককেও। টুইটারে আইপ্যাকের তরফে চন্দ্রিমার নাম না করেই বলা হয়, 'তৃণমূল নেতাদের ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে না আইপ্যাক। কেউ এমন দাবি করলে, সেটা তাঁর অজ্ঞতা বা মিথ্যাচার। দল বা নেতাদের ডিজিটাল মাধ্যমের অপব্যবহার হচ্ছে কি না, তা তৃণমূলের খতিয়ে দেখা উচিত।' অবশ্য তার আগেই চন্দ্রিমার প্রোফাইল থেকে সেই পোস্ট সরিয়ে দেওয়া হয়।  

আরও পড়ুন- পুরভোটের লাইনে প্রার্থীর চোখ পড়তেই পালাল 'ভুয়ো ভোটার', ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ বিধাননগরে

এদিকে এই নীতি নিয়ে দলের মধ্যে বিতর্ক তৈরি হওয়া তড়িঘড়ি বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বিতর্ক সামাল দিতে তিনি বলেন, তৃণমূলে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ সংক্রান্ত পোস্ট সমর্থন করেন না দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ইতিমধ্যে দলের যাঁরা ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ সংক্রান্ত পোস্ট করেছেন নেটমাধ্যমে, তাঁদের তা দ্রুত মুছে ফেলার নির্দেশও দেন তিনি। যদিও তার অনেক আগেই সেই পোস্ট মুছে দিয়েছিলেন চন্দ্রিমা। কিন্তু, ততক্ষণে অবশ্য বিতর্ক যা হওয়ার তা হয়েই গিয়েছিল। 

আরও পড়ুন- নেতৃত্ব পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে তৃণমূল, ক্রমে বাড়ছে ফাটল - বৈঠক ডাকতেই হত মমতাকে

আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক টালমাটাল
উল্লেখ্য, আইপ্যাকের সঙ্গে তৃণমূলের টালমাটাল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই। ১০৮টি পুরসভার ভোটের জন্য সাংবাদিক বৈঠক করে প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু, সূত্রের খবর, ওয়েবসাইটে যে তালিকা আপলোড করা হয়, তাতে দেখা যায়, দু’টি তালিকার মধ্যে বেশ কিছু অমিল রয়েছে। এরপরই জেলায় জেলায় শুরু হয় বিক্ষোভ। তারপর ফের বৈঠকে বসেছিলেন দলের শীর্ষনেতারা। জানিয়ে দেওয়া হয়, সাংবাদিক বৈঠকে যে প্রার্থীতালিকা দেখানো হয়েছে, তা-ই চূড়ান্ত। কিন্তু, তাহলে ওয়েবসাইটের তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা কে আপলোড করল? কাদের জন্য এই বিভ্রান্তি তৈরি হল? এই বিভ্রান্তির জন্য প্রশান্ত কিশোরের সংস্থাকেই দায়ী বলে মনে করছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেছিলেন, "দলীয় সাইটের পাসওয়ার্ডের অপব্যবহার করা হয়েছে। পাসওয়ার্ড অপব্যবহার করেই তালিকা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।" যদিও এই ঘটনার জন্য কে দায়ী তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ফিরহাদ।